বিয়ে হচ্ছে একটা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ অধ্যায়। কথায় আছে, বিয়ের মাধ্যমে মানুষের ভাগ্যের পরিবতর্ন ঘটে। আর সেই গুরুত্বপূণর্ অধ্যায়ে পা দিয়ে সবকিছুকেই যেন রঙিন মনে হচ্ছে টলিউড অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলির। যদিও দেখতে দেখতে ৭ মাস পার হতে চলেছে তার বিয়ের। তারপরও যেন রেশ কাটেনি তার। বিয়ের পর সবকিছুকে এখনো ‘বিশেষ’ বলে মন্তব্য করছেন এই অভিনেত্রী। বিয়ের আগে যেমন হাতে কোনো কাজ রাখেননি, তেমনি বিয়ের পরেও টানা কয়েকমাস অভিনয় থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে। বিয়ে বলে কথা। বিয়ের পর স্বামী সংসারে শুভশ্রী যেভাবে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাতে বোঝার উপায় নেই তাদের বিয়ের ৭ মাস পার হয়ে গেছে। বরং তাদের কথাবাতার্, চালচলন এমনকি রোমান্স দেখে সবাই হয়তো ধারণা করতে পারেনÑ সবে মাত্র বিয়ে হলো তাদের। তার রেশ দেখা গেছে গত শারদীয় উৎসবে। বিয়ের পর প্রথম পূজা বলে কথা। আনন্দের মাত্রাটা তাই অন্যদের চেয়ে কিছুটা বেশি কলকাতার তারকা জুটি রাজ-শুভশ্রীর। দুগার্পূজায় চুটিয়ে আনন্দ করতে দেখা গেছে দুজনকে। বরাবরের মতো এবারের দুগার্পূজার আনন্দও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন রাজ-শুভশ্রী। অবশ্য পূজা শুরু হওয়ার আগেই আগাম বাতার্ দিয়েছিলেন তিনি। শুরুতেই শাড়ির সঙ্গে মাননসই গয়না আর চুলের সাজে মুগ্ধ করেছিলেন ভক্তদের। এরপর ষষ্ঠীতে পশ্চিমা ও বাঙালি ঢঙের ফিউশন পোশাকে ভক্তদের কনফিউশন করে দিয়েছিলেন নায়িকা। কাছা দিয়ে পরা শাড়ি। তার ওপর জ্যাকেট, মাথায় টায়রা, হাতে এক গোছা চুড়ি; আর পায়ে উঁচু জুতা। সব মিলিয়ে অদ্ভুত এক চেহারা দঁাড়িয়েছিল শুভশ্রীর। তবে দশমিতে বেশ চমকে দিয়েছেন শুভশ্রী। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন রাজও। লাল শাড়ি এবং ভারী গহনার সঙ্গে লাল রঙে লেপ্টানো শুভশ্রীর মুখ। সঙ্গে একই অবয়বে ধুতি, পাঞ্জাবি পরিহিত রাজ চক্রবতীর্। দেখেই মনে হয় রঙের হোলি খেলেছেন দুজন। টুইটারে দশমীর এমনই কিছু ছবি পোস্ট করেছেন শুভশ্রী। তবে দেবী বিসজের্নর দিনে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি তারা। পুজোর মতো আসছে ক্রিসমাস নিয়েও নানান পরিকল্পনা করেছেন তিনি। একদিকে ক্রিসমাস অন্যদিকে তার ৪ দিন আগে অথার্ৎ আগামী ২১ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে শুভশ্রীর নতুন ছবি ‘রসগোল্লা’। সবমিলিয়ে বছরের শেষটাও আনন্দ-উল্লাসেই কাটবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এ বিষয়ে শুভশ্রী বলেন, এই মুহূতের্ হাতে কোনো প্রজেক্ট নেই আমার। ইচ্ছে করেই কোনো কাজ নিচ্ছি না। আসলে আমি এ সময়টা উপভোগ করছি। বিয়ের পরের জীবনটা দারুণ লাগছে। সে কারণেই কাজ করছি না। বছরটা আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। নতুন বছরে নতুন করে কাজে ফিরব। পরিচালক রাজ চক্তবতীর্র সঙ্গে গত মে মাসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর বেশ পরিবতর্ন এসেছে টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রীর জীবনে। ‘রসগোল্লা’ মুভিতে অবশ্য অতিথি শিল্পীর ভূমিকায় রয়েছেন শুভশ্রী। তার চরিত্রের নাম মালকানজান। আগ্রার এক বাঈজি তিনি। যার সঙ্গে রসগোল্লার আবিষ্কতার্ নবীনচন্দ্র দাশের সম্পকর্ ছিল ভাই-বোনের। নবীনচন্দ্রকে দোকান তৈরি করার জন্য টাকাও দিয়েছিলেন মালকানজান। এত ছোট চরিত্রে কাজ করতে রাজি হওয়ার পেছনে কারণ নাকি রসগোল্লার প্রতি ভালোবাসা। বাঙালির খাবার বলে কথা! চলতি বছরের ১১ মে চলচ্চিত্র নিমার্তা রাজ চক্রবতীের্ক বিয়ে করেন শুভশ্রী। ২০০৯ সালে এই রাজের পরিচালিত ‘চ্যালেঞ্জ’ ছবি দিয়েই লাইম লাইটে এসেছিলেন নায়িকা। যদিও তার অভিষেক হয়েছিল সঞ্জিব রায়ের ‘পিতৃভূমি’ ছবির মাধ্যমে। এটি ২০০৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল। এরপর ২০০৮ সালে আরও দুটি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। কিন্তু নজরে আসেন দেবের বিপরীতে ‘চ্যালেঞ্জ’ ছবি দিয়ে। এরপর শুধুই ছুটে চলেছেন। একে একে বেশ কিছু হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। সেই হিট লেগে গিয়েছিল পরিচালক রাজের মনেও। এদিকে ‘রসগোল্লা’র মুক্তির দিনেই মুক্তি পাবে শুভশ্রীর স্বামী রাজ চক্রবতীর্র পরিচালিত ‘অ্যাডভেঞ্চারস অব জোজো’ ছবিটি। অথার্ৎ বক্স অফিসে কতার্-গিন্নির সহাবস্থান। তবে এটাকে লড়াই হিসেবে দেখছেন না শুভশ্রী। নায়িকা মনে করেন, স্বামী-স্ত্রীতে কোনো প্রতিযোগিতা হয় না। আপাতত ফেরার অপেক্ষায় তিনি।