মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এনডিআর এগ্রো ফার্মে প্রস্তুত কোটি টাকার গরু

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুন্ড
  ০৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

মাত্র পাঁচ বছরের গল্প। আর তাতেই ইতিহাস। যেখানে ১০টি গরু দিয়ে খামারের শুরু, সেখানে বর্তমানে রয়েছে শতাধিক গরু। নিষ্ঠা, একাগ্রতা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে শখের স্বপ্নকে সফলতার রূপ দেয়া যায়, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ সীতাকুন্ডের ভাটিয়ারী এনডিআর এগ্রো নামক গরুর খামার। একান্ত শখের বসে খামারটি গড়ে এলাকায় এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ভাটিয়ারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ ইসহাকের ছেলে মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। ইতোমধ্যে দেলোয়ারের খামারের খ্যাতি সীতাকুন্ড ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। এই খামারের গরু দিয়ে স্থানীয় গরুর চাহিদা মেটানো যাবে বলে মনে করছেন কোরবানির বাজার সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে সীতাকুন্ডের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তাদের পছন্দের গরু কিনতে দেলোয়ারের খামারে ভিড় করছেন। দর দাম জেনে নিচ্ছেন। কয়েক দিনের মধ্যে খামারে থাকা গরুগুলো বিক্রি শুরু হবে বলে জানান দেলোয়ার হোসেন। জানা যায়, ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বিএমএ গেইটস্থ শামনি পাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেন ২০০৮ সালে বিএ পাস করার পর বাবার শিপব্রেকিং ইয়ার্ড ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। কয়েক বছর ইয়ার্ডের ব্যবসা করার পর নিজ ইচ্ছাতেই সেখান থেকে সরে আসেন দেলোয়ার। নিজস্বভাবে কিছু করার সংকল্প তাকে তাড়া করে। দীর্ঘ ভাবনার পর ২০১৫ সালে অনেকটাই শখের বসে ৪০ শতক পৈত্রিক জমিতে 'এনডি আর এগ্রো' নামক গরুর খামার গড়ে তুলেন। প্রথমে ১৫ লাখ টাকা পুঁজিতে ১০টি গরু কিনে শুরু হয় দেলোয়ারের খামার। এতে খামার গড়ার প্রথম বছর সফলতা লাভ করেন দেলোয়ার। গত বছর তার খামারে ৭০টি গরু কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হলেও এ বছর তার খামারে শতাধিক গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। শুধুমাত্র কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা এসব গরুর সম্ভাব্য বাজার দর হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩/৪ কোটি টাকা। সরেজমিন এনডি আর এগ্রো গরুর খামারে গিয়ে দেখা যায়, দেলোয়ার হোসেনের খামারে থাকা গরুর দেখাশোনায় নিযুক্ত রয়েছেন ১০/১২ জন শ্রমিক। তারা খুবই যত্ন সহকারে গরুগুলো দেখভাল করছেন। খামারটির মালিক দেলোয়ার হোসেন নিজেও খুব পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ওই খামারের গরুগুলো সংগ্রহ করেছেন রাজশাহী, বগুড়া, কুষ্টিয়াসহ নওগাঁর পার্বত্য অঞ্চল থেকে। বিশাল পরিসরের গরু খামার পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বর্তমানে তার সফলতা দেখে স্থানীয়রা গরুর খামার করতে উৎসাহিত হচ্ছেন। গরুর খামারে স্থানীয় বেশ কিছু বেকার যুককের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হয়েছে। আলাপকালে সফল খামারি দেলোয়ার হোসেন দৈনিক যায়যায়দিনকে জানান, অনেক আগে থেকে তার ইচ্ছা ছিল বড় আকারের একটি গরুর খামার করা। সেই পরিকল্পনা থেকেই শতাধিক গরুর জন্য একটি বিশাল আকারের সেট তৈরি করা হয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদেই তার গরুগুলো বিক্রি করা হবে। যার আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। তিনি আশা করছেন, কোরবানি হাটে তার গরুগুলো সহজেই বিক্রি হবে। সরকারি সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে ৫শ গরুর খামার প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে