মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভেষজ উদ্ভিদ উলটকম্বল

ছবি ও লেখা : মোহাম্মদ নূর আলম গান্ধী
  ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

উলটকম্বল আমাদের দেশীয় ভেষজ উদ্ভিদের অন্যতম একটি। ইংরেজি নাম উবারষং ঈড়ঃঃড়হ, পরিবার ঝঃবৎপঁষরধপবধব, উদ্ভিদতাত্তি¡ক নাম অনৎড়সধ ধঁমঁংঃধ। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাজুড়ে এর বিস্তৃতি রয়েছে। এশিয়ার প্রধান অঞ্চল এর আদি নিবাস। বাংলাদেশের সবর্ত্র উলটকম্বল গাছ জন্মাতে দেখো যায়। উলটকম্বল ২ থেকে ৩ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট গুল্ম জাতীয় চিরহরিৎ গাছ। এ গাছের শাখার গোড়ার পাতা হৃৎপিÐের মতো দেখায়, তবে পাতার অগ্রভাগের দিকটা সরু, রং উজ্জ্বল সবুজ। পাতার বেঁাটা ও কচি ডাল খয়েরি লাল রঙের, ডগার পাতাগুলো লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে। গাছের বাকল শক্ত অঁাশযুক্ত, পানিতে ভিজালেও নষ্ট হয় না। গাছের কাঠ নরম ও ধূসর বণের্র। নিদির্ষ্ট বয়সে এ গাছে ফুল ফোটে। ফুলের রং খয়েরি, পাপড়ি পঁাচটি। গাছের কচি শাখা-প্রশাখায় ফুল ফোটে। ফুল দেখতে খুবই মনোরম। গ্রীষ্মকাল থেকে ফুল ফোটা শুরু হয়ে শরৎকাল পযর্ন্ত গাছে ফুল ফোটে। তাছাড়া অন্যান্য ঋতুতেও কম পরিমাণে ফুল ফোটতে দেখা যায়। পঞ্চকোণাকৃতি আকারের ফল, রং প্রথমে সবুজ এবং পরিপক্ব ফল কালো রং ধারণ করে। পরিপক্ব ফল আপনা-আপনি ফেটে যায়। ফলের ভেতর কম্বলের ন্যায় লোমশ থাকে এবং বিভক্ত পঁাচটি প্রকোষ্ঠের ভেতর কালো জিরার মতো ছোট-ছোট বীজ থাকে। উলটকম্বলের ভেষজ গুণাগুণ : গাছের পাতা, ডাল ও মূলের ছাল বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছের ছাল ও ডাটা পানিতে ভিজিয়ে কচলালে পিচ্ছিল পদাথর্ বের হয়। মূলের ছাল ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণকারী, তাছাড়া জরায়ু স্থানচ্যুতিতে ব্যবহৃত হয়। পাতার ডঁাটা প্রস্রাবের জ¦ালাপোড়া ও আমাশয় রোগের জন্য উপকারী এবং পাতা ও কাÐের রস গনোরিয়া, স্ত্রী রোগে বেশ উপকারী। গবাদিপশুর পাতলা পায়খানা, বিলম্ব প্রজনন, জরায়ুর রক্তক্ষরণ এবং হঁাস-মুরগির নানা প্রকার চিকিৎসায় উলটকম্বল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রায় সব ধরনের সুনিষ্কাশিত মাটিতে উলটকম্বল জন্মায়। তবে দো-অঁাশ মটিতে ভালো জন্মে। গাছ ছায়া সহ্য করতে পারে এবং ছায়াতে বেশি ভালো হয়। পাহাড়ি বনাঞ্চলের পাশা-পাশি গ্রাম, শহর, পারিবারিক বাগান, রাস্তার ধার, ভেষজ বাগান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাগানে উলটকম্বল গাছ দেখা যায়। বীজ থেকে ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা যায়। তবে বীজ থেকে বংশবিস্তার খুবই সহজ পদ্ধতি। বীজ সংগ্রহ পরবতীর্ ১ থেকে ২ মাস পর বীজ বপন করা যায়। বীজ বপনের পূবের্ পানিতে ২ ঘণ্টা ভিজিয়ে নিয়ে পানি ছেকে বাতাসে শুকিয়ে নিয়ে প্রস্তুতকৃত জমিতে বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা যায়। বীজ বপন পরবতীর্ জমি মই দিয়ে সমান করতে হবে ও বীজ ভালভাবে ডেকে দিতে হবে। জমিতে বীজ বপনের উত্তম সময় অক্টোবর নভেম্বও মাস। তাছাড়া এ সময় বীজ বপনে ভালো চারা ও গাছ পাওয়া সম্ভব। উলটকম্বল গাছে তেমন সার প্রয়োগ করতে হয় না। প্রয়োজনে জমি অনুবর্র হলে অল্প পরিমাণ সার দিতে হবে। বিঘা প্রতি ৫ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি টিএসপি দরকার হয়। শুকনো মৌসুমে সেচের প্রয়োজন হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে আগাছা দমন করতে হবে। বীজ বপনের ৫ থেকে ৬ মাস পর গাছের পাতা, ডাল, মূল ব্যবহারের উপযোগী হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<20748 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1