শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভেষজ উদ্ভিদ বাসক

নতুনধারা
  ১০ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

বাসক ছোট আকৃতির চিরহরিৎ গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর আদিনিবাস আফ্রিকা ও এশিয়ার উষ্ণ অঞ্চল। ইংরেজি নাম- ঠধংধশধ, গধষধনধৎ ঘঁঃ :ৎবব, পরিবার-অপধহঃযধপবধব, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম- অফযধঃড়ফধ ুবুষধহরপধ। ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে বাসক বেশ পরিচিত এক উদ্ভিদ। এর উচ্চতা গড়ে ১ থেকে ২ মিটার। গাছের শাখা-প্রশাখা অধিক। গাছের কান্ড ও শাখা-প্রশাখা খুব বেশি শক্তমানের নয়। পাতা আকারে বড় ও ঘন, রং সবুজ, গন্ধযুক্ত, দেখতে ভলস্নাকার, অগ্রভাগ সুচালো, শিরা উপশিরা স্পষ্ট। গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে থোকায় থোকায় ফুল ধরে। ফুল ফোটার মৌসুম বসন্তকাল। ফুল আকারে ছোট, ছোট স্পাইকের ওপর ফোটে। পাপড়ি রঙে সাদা এবং তাতে কয়েকটি বেগুনি দাগ থাকে। ফল সুপারির আকৃতির এবং এর ভেতর থাকে বীজ। বীজ ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার করা যায়। তবে ডাল কাটিং পদ্ধতিতে উত্তম। ডাল কাটিংয়ের ক্ষেত্রে গাছের অপেক্ষাকৃত মাঝারি শক্তমানের ডালই উত্তম। কাটিং করার ক্ষেত্রে কাটিংয়ের দৈর্ঘ্য হবে ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার। কাটিং পদ্ধতিতে চারা রোপণের ক্ষেত্রে বর্ষার শুরু অর্থাৎ মে-জুন মাসই উত্তম সময়। জমিতে রোপণের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রায় সব ধরনের মাটি এবং উঁচু থেকে মাঝারি উঁচু ভূমি ও সমতল ভূমিতে বাসক রোপণের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া আর্দ্র ও ভেজা মাটি এবং হালকা ছায়া থেকে ছায়াযুক্ত স্থানে বাসক জন্মে। বাসক বেশ কষ্টসহিষ্ণু উদ্ভিদ। পরিবেশ প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম। ভেষজ গুণে গুণান্বিত বাসকের রয়েছে নানান রকম ভেষজ গুণাগুণ। তা ছাড়া বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও তা প্রমাণিত হয়েছে। এর মূল, পাতা, ফুল ও ছালে রয়েছে নানান রকম ভেষজ গুণাগুণ। বাসকের তাজা ও শুকনো উভয় পাতাই ভেষজ গুণসম্পন্ন। বাসক পাতার রস মাথায় লাগালে মাথার উঁকুন চলে যায়। গায়ের ঘামের গন্ধ দূর করতে এর রস সহায়ক। তা ছাড়া সর্দি, কাশি, কফ, হাঁপানি, কৃমি, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, খিঁচুনি রোগে, প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমাতে, চুলকানি ও চামড়ার দাঁদ সারাতে এবং জন্ডিস রোগের চিকিৎসায় বাসক ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া এর অন্যান্য ব্যবহারের মধ্যে- পাতা দিয়ে এক প্রকার রং তৈরি করা যায়। এর পাতায় ক্ষারীয় পদার্থ বিদ্যমান থাকায় ফলে সহজে পচন ও পোকার আক্রমণ হয় না বলে ফল প্যাকিং ও সংরক্ষণ কাজে ব্যবহৃত হয়। পাতা দিয়ে তৈরি করা যায় ফসলি জমির জন্য সবুজ সার এবং পাতার রস দিয়ে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক তৈরি করা যায়। যা জৈব কৃষি কাজে লাগে। বাসক গাছ ভূমি ক্ষয় রোধে সহায়ক। ভেষজ গুণে গুণান্বিত এ বাসক গাছ আমাদের দেশের প্রায় সর্বত্র চোখে পড়ে। তাই তো ভেষজ বাগান, পুকুর পাড়, ছোট-বড় রাস্তার ধার, ক্ষেতের আইলে, বাঁধের ধার, পতিত জমি ও বন-জঙ্গলে বাসক দেখতে পাওয়া যায়।

ছবি ও লেখা : মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<40211 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1