বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লাউয়ের ফলন বৃদ্ধির আধুনিক উপায়

কৃত্রিম পরাগায়ন প্রতিদিন ভোর বেলায় করতে হয়। সদ্যফোটা পুরুষ ফুল ছিঁড়ে পুংরেণুসমৃদ্ধ পুংকেশর রেখে পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলতে হয়। এরপর পুংরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুন্ডে হালকাভাবে সামান্য একটু ঘষে দিতে হয়। ব্যাস হয়ে গেল কাজ। এতে স্ত্রী ফুল নিষিক্ত হয়ে ফল ধরে। একটি পুরুষ ফুলের পুংকেশর দিয়ে ৬ থেকে ৭টি স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন করা যায়। এ জন্য একটা লাউয়ের মাচায় শতকরা ১০টা পুরুষ ফুল রাখতে হয়। এতে শতকরা ৯৫টি স্ত্রী ফুলে ফল ধরবে। এ জন্য পুরুষ ও স্ত্রী ফুল চেনা প্রয়োজন
কৃষিবিদ এস এম ইসমাইল হোসেন
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সবজির মধ্যে লাউ অন্যতম। লাউকে বলা হয়ে থাকে জান্নাতের ফল। লাউ নিয়ে আছে অনেক গল্প-কবিতা-গান। লাউয়ের চাহিদা ও বাজারমূল্য এখন অনেক বেশি। এর উৎপাদন বাড়ালে কৃষক লাভবান হবে- ক্রেতারাও কম দামে লাউ কিনতে পারবেন। অনেকে অভিযোগ করেন লাউ গাছে প্রচুর ফুল ধরলেও লাউ ধরে কম। কিছু কৌশল জানা থাকলে অধিকাংশ ফুল থেকেই লাউ ধরানো সম্ভব। আসুন জেনে নেয়া যাক সেসব কৌশল।

লাউসহ মিষ্টি কুমড়া, করলা, কাঁকরোল, পেঁপে ইত্যাদি সবজি গাছ একলিঙ্গ এবং ভিন্নবাসী উদ্ভিদ হওয়ায় প্রাকৃতিক পরাগায়ন কম হয়। অর্থাৎ এসব গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল পৃথক গাছে হয়। পুরুষ ও স্ত্রী গাছও পৃথক হয়। ফলে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল যদি দূরে থাকে তবে কীট-পতঙ্গ, পোকা-মাকড় অথবা অন্য যে কোনো পরাগায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরাগায়ন সম্ভব হয় না। এ জন্য লাউ ধরে না। পুরুষ ফুল থেকে ফল হয় না। লাউয়ের পুরুষ ও স্ত্রী গাছ পৃথক হওয়ায় কৃত্রিমভাবে পুরুষ ফুল এনে স্ত্রী ফুলের সঙ্গে মিলন ঘটাতে হয়। এটাকে অনেকে কৃত্রিম পরাগায়ন বলেন।

কৃত্রিম পরাগায়ন কৌশল:

কৃত্রিম পরাগায়ন প্রতিদিন ভোর বেলায় করতে হয়। সদ্যফোটা পুরুষ ফুল ছিঁড়ে পুংরেণুসমৃদ্ধ পুংকেশর রেখে পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলতে হয়। এরপর পুংরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুন্ডে হালকাভাবে সামান্য একটু ঘষে দিতে হয়। ব্যাস হয়ে গেল কাজ। এতে স্ত্রী ফুল নিষিক্ত হয়ে ফল ধরে। একটি পুরুষ ফুলের পুংকেশর দিয়ে ৬ থেকে ৭টি স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন করা যায়। এ জন্য একটা লাউয়ের মাচায় শতকরা ১০টা পুরুষ ফুল রাখতে হয়। এতে শতকরা ৯৫টি স্ত্রী ফুলে ফল ধরবে। এ জন্য পুরুষ ও স্ত্রী ফুল চেনা প্রয়োজন।

ফুল চেনার উপায় :

পুরুষ ফুলের বোঁটার অগ্রভাগে ফুটে। পাপড়ির গোড়ায় গর্ভাশয় থাকে না। পাপড়ির মাঝ দিয়ে বেড়ে ওঠা পুংদন্ডে পাউডারের মতো পুংরেণু থাকে। পুংদন্ডের শীর্ষভাগে গর্ভমুন্ড থাকে না। শুধু বোঁটার অগ্রভাগে ফুটে থাকা ফুলগুলো পুরুষ ফুল। স্ত্রী ফুল ক্ষুদ্রাকৃতি লাউয়ের মতো গর্ভাশয়ধারী। গর্ভাশয়ের ওপর থেকে পাপড়ি থাকবে। পুংদন্ড থাকবে না। গর্ভদন্ড ছোট ও মোটা। এতে আঠালো পদার্থ থাকবে। পুংরেণু এখানে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আঠায় আটকে যায়। অনেকেরই ধারণা, শুধু স্ত্রী ফুলের এই গর্ভাশয় থাকলেই লাউ ধরবে। কিন্তু গর্ভমুন্ডে পুরুষ ফুলের পুংরেণু না লাগা পর্যন্ত লাউ ধরবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67771 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1