শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বি শ্ব বি দ্যা ল য়ে ভ র্তি

ভর্তিযুদ্ধে সফল হতে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে বেশ আগেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে তাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আগামী ৪ অক্টোবর মেডিকেলের পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হবে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিযুদ্ধ। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার এই সংগ্রামে আসন সংখ্যার তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক বেশি। যার কারণে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে করতে হবে কঠোর পরিশ্রম। স্বল্প সময়ে এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে খেয়াল রাখতে হবে বিভিন্ন বিষয়। সেগুলো জানাচ্ছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা, তাদের কথা শুনেছেন অনিক আহমেদ...
নতুনধারা
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সময় নষ্ট না হোক

প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু ভাইয়া আপুরা। তোমাদের এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিন্তু তোমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা আর কদিন পরেই। জানি তোমরা ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছ। আমি মনে করি এ সময়টা তোমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সারাদেশে ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা কিন্তু অনেক। তোমাদের সবসময় এটি মনে রাখতে হবে। প্রতিটি দিন প্রতিটি মুহূর্ত তোমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তোমাদের রুটিন মাফিক পড়া থেকে একবার ছিটকে গেলে তা আর ধরতে পারবে না। এজন্য ভর্তি প্রস্তুতিকে জীবনযুদ্ধ হিসেবে নিতে হবে। শুধু একটিবার ভাবো, তবে যদি ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাও, কেমন লাগবে তখন? ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া বন্ধুকে দেখে হতাশায় কাটবে তোমার জীবন। তখন মনে হবে আর একটু পড়াশোনা করলেই তুমিও চান্স পেয়ে যেতে।

তোমার পড়ার রুমে যেন আড্ডা না জমতে পারে সেজন্য তোমাকেই খেয়াল রাখতে হবে। আর এ কাজগুলো করতে পারলে তোমার চান্স পাওয়াটা অনেক সহজ হবে। আর একটি কথা কেবল গদবাঁধা পড়াশোনা করলেই চান্স পাবে সেটা কিন্তু নয়। তোমার টার্গেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গত কয়েক বছরের প্রশ্ন দেখে বুঝতে হবে, সেখানে কেমন ধাঁচের প্রশ্ন আসে, কোন কোন টপিকে প্রশ্ন আসে। সেগুলোও কিন্তু ভালো করে পড়া খুবই জরুরি।

আবুল বাশার মিরাজ

শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত নোটিশ, ভর্তি নির্দেশিকা ভালোভাবে পড়ো

প্রিয় ভর্তিযুদ্ধের সৈনিকরা, তোমরা নিশ্চয় এখন ব্যতিব্যস্ত চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে। হঁ্যা, এমনটাই হওয়া উচিত। কারণ শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। সামান্য অবহেলায় হতে পারে তীরে এসে তরী ডুবানোর মতো অসামান্য ক্ষতি। এখন ভাবতে হবে স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ায় তোমার শেষ আনুষ্ঠানিকতা। আর সেই আনুষ্ঠানিকতা সফল করতে হতে হবে গভীর মনোযোগী। তবে মনে রাখবে, কাজের গতি বৃদ্ধির জন্য বিশ্রাম ও বিনোদন অপরিহার্য।

তোমরা ইতোমধ্যেই চারটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এই পর্যায়ে এসেছো। সুতরাং পরীক্ষার ওপর তোমাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। তাই নিজেকে প্রস্তুত করতে অন্যের উপদেশের দরকার নেই, কিন্তু প্রয়োজন আছে পরামর্শ কিংবা দিকনির্দেশনার। তোমরা হয়তো অবগত, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য হেল্প ডেস্ক নামে ফেসবুক গ্রম্নপ কিংবা পেজ থাকে। আমি বলব, বিনা প্রয়োজনে ফেসবুক স্ক্রল করে সময় অতিবাহিত না করে সেগুলোতে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে ঢু মারো। ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত নোটিশ, ভর্তি নির্দেশিকা ভালোভাবে পড়ো। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ইউনিটে তোমাদের পছন্দের বিষয় আছে সেটা খুঁজে নাও এবং নিজের যোগ্যতা যাচাই করো। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্পেশাল কোনো বই আছে কিনা, পরিবহনব্যবস্থা, থাকা-খাওয়া কিংবা তোমার অজানা সব প্রশ্নগুলো কমেন্ট করে জেনে নাও সঠিক তথ্য। তোমাদের সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য জানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আমার মতো হাজার হাজার শিক্ষার্থী আগ্রহ নিয়ে বসে আছে। দেখা হবে বিজয়ে।

মো. সোয়াদুজ্জামান সোয়াদ

এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।

লিখিত পরীক্ষায় নিজেকে গুছিয়ে

পরিবেশন করতে হবে

পরীক্ষার ৫০ ভাগ সফলতা নির্ভর করে পরীক্ষা কৌশলের ওপর। এর মধ্যে পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি ও উত্তর প্রদানের পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত থাকে। ভয়, জড়তা কিংবা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে তা দূর করার চেষ্টা করবে। কেননা তাতে পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরীক্ষা দুটোই খারাপ হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে। পরীক্ষার কেন্দ্রে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে রাখবে। তোমরা জানো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি অন্যসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা। এবারও সম্পূর্ণ লিখিত পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আগামী প্রজন্মকে বেছে নেবে। লিখিত পরীক্ষায় অবশ্যই নিজেকে কৌশলী হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। প্রতিটি প্রশ্ন পড়ে উত্তরপত্রে গুছিয়ে পরিবেশন করতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে তুমি অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে।

পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি বলতে অনেকেই মনে করে পরীক্ষার আগের রাতে বেশি বেশি পড়াশোনা করলেই ভালো ফলাফল করা সম্ভব। কিন্তু এ ধারণাটি একদমই সঠিক নয়। পরীক্ষার আগের রাতটি পরীক্ষার্থীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সঠিক ব্যবহার জানাও পরীক্ষার্থীর জন্য অত্যাবশ্যক। এ রাতে নতুন কিছু না পড়াই ভালো। এ সময় উচিত আগের শেখা বিষয়গুলোই মনোযোগসহকারে দেখে নেয়া। পরীক্ষার আগের রাতে কমপক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। পরীক্ষার দিন মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। যা লিখবে ধীরস্থির সুন্দর করে লিখতে হবে। যাতে বানান নির্ভুল হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। প্রশ্ন পাওয়ার পর ঘাবড়ে যাওয়ার কোনো বিষয় নেই। সারাবছর যা পড়েছ তা থেকেই প্রশ্ন হবে। পরীক্ষা শেষ করার আগে উত্তরপত্র রিভিশন দেবে। সব পরীক্ষার্থীর জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

আহসান জোবায়ের

নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

৪. টপিকসের গুরুত্ব বুঝে পড়তে হবে

প্রিয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা, খুব সন্নিকটে তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে তোমরা প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছো। স্বল্প সময়ে লম্বা সিলেবাস আয়ত্তে আনার জন্য কৌশলী হতে হবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রস্তুতির শুরুতেই ৩টি বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন- সময় ব্যবস্থাপনা, টপিকসের গুরুত্ব বোঝা, চাপ মোকাবিলা করা। সময় ব্যবস্থাপনার মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পন্ন করার জন্য যে অধ্যায়টি পড়বে, তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একনজরে টপিকসগুলো দেখে নেবে। এরপর চেষ্টা করবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অধ্যায়টি শেষ করতে। মনে রাখবে যতটা সময় তুমি বেশি নেবে ততই পিছিয়ে পড়তে থাকবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার সময় পড়াশোনার পরিধিকে সমুদ্রের জলরাশির মতোই মনে হবে। সেজন্য বিগত বছরের প্রশ্নপত্র ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে, প্রশ্নের ধরন বুঝে টপিকসের গুরুত্ব অনুযায়ী পড়তে হবে।

ছোট এবং মজাদার একটা প্রেক্ষাপট দিয়ে চাপ মোকাবিলার বিষয়টি পরিষ্কার করি। তরকারি রান্নার সময় পরিমাণের চেয়ে বেশি তাপ দিলে, তা আর সুস্বাদু থাকে না, যদিও রান্নার সব উপকরণ ভালোভাবেই দেয়া হয়। চাপের ব্যাপারটা তেমনি, সারাবছর পড়ে যত ভালো প্রস্তুতিই নেয়া হোক, যদি চাপ পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত নেয়া হয়, ব্যর্থ হওয়াটাই তখন স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এদিকে সর্বদা খেয়াল রাখবে। শেষ পরামর্শটা হলো, যাদের প্রস্তুতি দুর্বল তারা বাংলা, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেবে। কারণ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু বিভাগ থাকে, যেখানে শুধু এই ৩ বিষয়ের দক্ষতা দিয়েই চান্স পাওয়া সম্ভব। ভর্তিচ্ছু সব শিক্ষার্থীদের জন্য রইল শুভকামনা, সুন্দর হোক তোমাদের ভবিষ্যৎ।

\হমোস্তুাফিজুর রহমান

\হভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস বিভাগ

গণ বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার, ঢাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<65668 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1