অনেক বছর আগের কথা। এক ছিল রাজপুত্র। সে ছিল খুবই সাহসী। বিখ্যাত বীর হিসেবে তার ছিল দেশজোড়া সুনাম। আরেক ছিল রাজকন্যা। সে দেখতে যেমন সুন্দরী, তেমনি দয়ালু। রাজ্যের সবাই জানতো তার দয়ার কথা।
রাজপুত্র এবং রাজকন্যার বিয়ে হলো। তারা বিশাল এক রাজপ্রাসাদে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে লাগল।
কিন্তু এই সুখ বেশিদিন তাদের কপালে সইল না।
একদিন এক জাদুকর বুড়ি এলো সেই রাজপ্রাসাদে।
তাদের বলল, 'তোদের দুজনকে আমি ঘৃণা করি। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসাকেও আমি ঘৃণা করি। তোরা মানুষকে ভালোবাসিস। তাই তোদের আমি হত্যা করব।'
বলেই জাদুকর বুড়ি হা হা করে হাসতে লাগল।
'না, তুই আমাকে হত্যা করতে পারবি না। বরং আমি তোকে হত্যা করব। সেই সঙ্গে তোর ভেতরে থাকা শয়তানটাকেও হত্যা করব।' রাজপুত্র খুব সাহসের সঙ্গে জবাব দিল।
রাজপুত্র জাদুকর বুড়িকে হত্যা করার চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুই করতে পারল না। কারণ জাদুকর বুড়ি মন্ত্র পড়ে যখনই বলল, 'রাজপুত্র, শিয়াল হয়ে যাও।' রাজপুত্র সঙ্গে সঙ্গে শিয়াল হয়ে গেল।
রাজকন্যা রাজপুত্রকে বাঁচাতে জাদুকরীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। জাদুকর বুড়ি মন্ত্র পড়ে তাকেও ব্যাঙ বানিয়ে ফেলল।
তারপর তাদের দুজনকে একটি খাঁচায় ভরে একটি উঁচু মিনারের উপর রেখে দিল।
এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল। জাদুকর বুড়ি রাজপ্রাসাদেই বসবাস করে। একদিন একজন সাধক একটি ড্রাগন পাঠালেন খাঁচায় বন্দি রাজপুত্র এবং রাজকন্যাকে সাহায্য করার জন্য।
ড্রাগন উড়ে জাদুকর বুড়ির কাছে এলো। তারপর হা করতেই মুখ থেকে বের হওয়া আগুনে জাদুকর বুড়ি সঙ্গে সঙ্গে পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
ড্রাগন জাদুকর বুড়িকে হত্যা করার সঙ্গে সঙ্গেই রাজপুত্র-রাজকন্যা তাদের আগের রূপ ফিরে পেল।
তারপর তারা বাকি জীবন সুখে-শান্তিতে কাটালো।