বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
বিজ্ঞান কল্পকাহিনী

পুঁ

লিটন মহন্ত
  ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

পুঁ পৃথিবীতে এসে হারিয়ে গেছে, তার গলায় ঝুলানো লকেটটা কোথায় যেন পড়ে গেছে, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুঁ অবাক বিস্ময়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, কোথায় গেল তাদের সসারটা, সেখানে পুঁর ল্যাবরেটরি বাবা পুঁপুঁ আছে। এলিয়েনরা বায়োলজিক্যালি শিশু জন্ম দিতে পারে না। তারা ল্যাবেই তাদের শিশুদের জন্ম দেয়। পুঁ একটা গাছের ডালে বসে পাখিদের কিচিরমিচির দেখত, একটা কাঠবিড়ালি তার পাশ দিয়ে হুঁশ করে ছুটে গেল। পুঁ মঙ্গলগ্রহের একমাত্র শিশু এলিয়েন, সবাই তাকে খুব ভালোবাসে। একটা কাক এসে পুঁকে কা কা করছে, পুঁ হাতের ইশারায় তার কা কা ডাক বন্ধ করে দিল। কাকটা অবাক হয়ে পুঁকে দেখছে। জঙ্গলটার পাশেই ছিল সায়েন্টিস্ট টিংফুর গবেষণাগার, সে তার সুপার কম্পিউটারে সিগনাল পেল, অদ্ভুত কিছু একটা এই পৃথিবীর নয় এমন কিছুর অস্তিত্ব বুঝতে পেল। গুগল ম্যাপে সায়েন্টিস্ট টিংফু পুঁর অবস্থান বুঝে গেল। সে তার অ্যাসিস্টান্ট রোবট টাইগারকে নিয়ে জঙ্গলে এলো এবং পুঁকে উদ্ধার করে গবেষণাগারে নিয়ে এলো। সায়েন্টিস্ট টিংফু পুঁকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে; পুঁ কিছু বলার চেষ্টা করছে।

পিঁপিঁপিঁ...নিঁনিঁঁনিঁ..নুনুনু..ফুফুচু...কুকুবু..সায়েন্টিস্ট টিংফু তার কথার কিছুই বুঝতে পারল না। রাতে পুঁকে ছাদে চাঁদের আলোয় নিয়ে আসা হলো, জোছনা উঠেছে কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার বৃষ্টি শুরু হলো। পুঁ বৃষ্টিতে ভিজতে চাচ্ছে। সে অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টিতে ভিজল, সায়েন্টিস্ট টিংফু নিজ হাতে তার শরীর মুছিয়ে দিল টাওয়েল দিয়ে। পুঁ রাতে একটা চেয়ারে বসে কাটাল। সায়েন্টিস্ট টিংফু মনে মনে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল এই এলিয়েন শিশুকে সে কীভাবে ফিরিয়ে দেবে। পুঁ হাতের ইশারায় চেয়ারগুলোকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে পারে। সায়েন্টিস্ট টিংফু জানে এলিয়েনদের এই রকম অদ্ভুত ক্ষমতা আছে, যেটা বিজ্ঞানভিত্তিক কিন্তু সেই বিজ্ঞান এখন মানুষ জানতে পারেনি। পদার্থ বিজ্ঞানের অনেক বিষয় এখন মানুষের অজানা। সায়েন্টিস্ট টিংফু অনেক কষ্টে জানতে পারল, যে পুঁ তার গলায় ঝুলানো একটা লকেট, মানে একটি ডিভাইস হারিয়ে ফেলেছে। যেটার সাহায্যে সে তার সসারের সঙ্গে কিংবা গ্রহে যোগাযোগ করতে পারে। সায়েন্টিস্ট টিংফু রোবট টাইগারকে নির্দেশ দিল সেই ডিভাইসটা খুঁজে আনার জন্য, সে অন্ধকার রাতেই জঙ্গলে বেরিয়ে গেল। ভোরবেলা একটা বড় কাতলমাছ নিয়ে টাইগার উপস্থিত, সে এই মাছটা ধরেছে জঙ্গলের মধ্যে একটা ঝিল আছে, সেই ঝিলের পানির মধ্যে থেকে। সায়েন্টিস্ট টিংফু বুঝতে পারল ঘটনা কি! মাছটা ল্যাবরেটরিতে কাটা হলো, তার পেট থেকে একটা ছোট লকেটের মতো ডিভাইস বের হলো। ডিভাইসটা পুঁর বুকে একটা নির্দিষ্ট ফাঁকা জায়গা আছে, সেখানে ধরতেই ডিভাইসটা আপনা-আপনি লেগে গেল সেটা পুঁর বুকের মধ্যে। কিন্তু সায়েন্টিস্ট টিংফু বুঝতে পারছে না এই জিনিটা পুঁ হারালো কীভাবে? সঙ্গে সঙ্গে ল্যাবরেটরির ছাদে একটা সসার নেমে এলো এবং পুঁ সায়েন্টিস্ট টিংফুকে মাথা নুয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চোখের নিমিষে আকাশে হারিয়ে গেল। কাতল মাছটা ওজন দশ কেজি হবে, এই মাছটা এখন কি করা যায়। মৃতমাছটা সায়েন্টিস্ট টিংফু ফরমালড্রিহাইড দিয়ে একটা বড় কাচের জারে সংরক্ষণের জন্য রেখে দিল। মনে হলো কিছুক্ষণ মাছটা অচেতন অবস্থায় ছিল, এখন সে জারের ভেতর লেজ নাড়ছে আর পিঁপিঁপিঁ...নিঁনিঁনিঁ..নুনুনু..ফুফুচু..কুকুবু..শব্দ করছে। সায়েন্টিস্ট টিংফু অবাক বিস্ময় নিয়ে মাছটাকে পরীক্ষা করার চেষ্টা করল, তারপর সেটাকে একটা পানির চৌবাচ্চার মধ্যে রাখা হলো। পরের দিন সকালে কাতল মাছটির পেটের কাটা স্থানে সেলাই করে জঙ্গলের ঝিলের পানির মধ্যে ছেড়ে দিল। মাছটি পুঁর লকেট খাওয়াতে তার শরীরে এক ধরনের অদ্ভুত ক্ষমতার জন্ম হয়েছে। এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না, ভবিষ্যতে মাছটি কি অদ্ভুত কান্ড ঘটাতে পারে। একমাস পর রোবট টাইগার সায়েন্টিস্ট টিংফুকে নিয়ে ঝিলের কাছে নিয়ে এলো, কাতল মাছটি অস্বাভাবিক রকম বড় হয়েছে আর পানি থেকে উপরে উঠে শূন্যে ভাসতে পারে, ঠিক যেন এলিয়েনের মতো।

পিঁপিঁপিঁ...নিঁনিঁনিঁ..নুনুনু..ফুফুচু..কুকুবু..

মাছটি এত জোরে শব্দ করছে মনে হচ্ছে বাঘের গর্জন। কিছু জেলে এসেছিল মাছ ধরতে তারা এই গর্জন শুনে জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে গেল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<75605 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1