বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এই গরমে বাড়তি সতর্কতা

যাযাদি হেলথ ডেস্ক
  ১৬ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

প্রচন্ড গরম পড়েছে, এ জন্য প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকরাও গরমে বাড়তি সতর্কতার ওপর জোর দেন। গরমে দেখা দেয় শারীরিক নানা সমস্যা। এর মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপই বেশি। গরমে মানুষের তৃষ্ণা বেশি পায়। তৃষ্ণার্ত অনেকে পানি পানের সময় বিশুদ্ধতা নিয়ে মাথা ঘামায় না। এতে জীবাণুযুক্ত পানি পানের আশঙ্কা বাড়ে। মূলত পানির মাধ্যমেই কলেরা জীবাণু ও খোঁটা ভাইরাস ছড়ায়। তাই গরমে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। গরমের সময় খাবার অন্যান্য মৌসুমের চেয়ে খুব সহজেই জীবাণুযুক্ত হয়। ফলে মানুষের নানা রকম পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ার পরিমাণও বাড়ে।

গরমে পানিবাহিত অসুখের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। তৃষ্ণা মেটাতে পানি পানের পরিমাণটাও এই সময়ে বেশি হয়। তাই একটু বেখেয়ালি হলেই ঘটতে পারে সর্বনাশ। বিশুদ্ধ পানি পান না করলে ক্ষতিকর জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে পারে আর সেখান থেকেই বাসা বাঁধতে পারে নানা অসুখ। এই সময়ে বাইরের রাস্তার কাটা ফল, শরবত, সালাদ এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। শীতে তৃষ্ণা কম থাকে। গরমে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই তখন অনেকেই যেখানে-সেখানে পানি পান করেন। এটি উচিত নয়। খাবার আগে এবং পরে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। শৌচাগারে গেলে সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে হাত ধুতে হবে। রান্নার জায়গা পরিষ্কার রাখা, পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করা, বাসনপত্র ঠিকভাবে ধোয়া, মাছি যাতে খাবারে না বসে তা দেখা, বাচ্চাদের মুখে হাত দেয়া থেকে দূরে রাখা- এসব দিকে নজর দিতে হবে। পানি বিশুদ্ধ করে পান করতে হবে। তবে বিশুদ্ধ পানি পানের পাশাপাশি হাত-মুখ ধুতেও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করা উচিত। স্কুলেও বাচ্চাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া বাইরের কাটা ফল, শরবত থেকে দূরে রাখতে হবে। বাচ্চাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা কম। তাই পানির পাত্রে হাত যাতে না ডোবানো হয় তাও দেখতে হবে। ভ্যাপসা গরমে ঠান্ডা-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়া, নাক বন্ধ, হাঁচি-কাশি, মাথাব্যথা, হালকা জ্বর, কাঁপুনিই এ রোগের প্রধান লক্ষণ। আবহাওয়ার আকস্মিক ও দ্রম্নত পরিবর্তন, গরমে ঘাম ও রোদের তাপ, সব কিছু মিলিয়ে প্রকোপটা এ সময় বেশি হয়। যাদের হাঁপানি, ফুসফুসের সমস্যা কিংবা সামান্য সর্দি-কাশিজনিত অ্যালার্জিতে ভোগার প্রবণতা রয়েছে, তারা আগেভাগে সাবধান না হলে ঠান্ডা রোগজনিত জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন। ভাইরাসজনিত জ্বরেও অনেকে এ সময় ভুগতে পারেন। তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে ভাইরাসের যেমন দ্রম্নত বংশবৃদ্ধি পায়, তেমনি দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগ ছড়াতে পারে অফিস বা দোকানপাটের দরজার হাতল, টেবিলের কোণা, রিকশার হুড, গাড়ির হ্যান্ডেল, টেলিফোন ও ব্যবহূত ব্যক্তিগত জিনিসপত্র থেকেও। জ্বরের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে আর শারীরিক অবসন্নতা কাটাতে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হবে। তবে এই গরমে সবার আগে প্রয়োজন ব্যক্তিসচেতনতা। নিজে সতর্ক থাকতে হবে। পানি না ফুটিয়ে পান করা চলবে না আর রাস্তার খোলা খাবার খাওয়া যাবে না। বাসি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যদি কোনো কারণে পেটের পীড়া হয় তাহলে খাবার স্যালাইন খেতে হবে এবং রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে নিতে হবে। একইসঙ্গে পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে যেন ঘাটতি বা গাফিলতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হোটেল রেস্তরাঁগুলোতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা জরুরি। পচা-বাসি খাবার খেয়ে মানুষ পীড়িত হবে আর ব্যবসায়ীদের পকেট ফুলতে থাকবে- এটা মেনে নেয়া যায় না। গরমে সুস্থ থাকতে চাই সবার সচেতনতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<41041 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1