শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘাম আর ঘামাচি থেকে স্বস্তি পেতে...

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
  ২২ মে ২০১৯, ০০:০০

প্রচন্ড গরমে অন্য সবার মতো ছোট্ট শিশুরাও নাজেহাল। এর সঙ্গে ঘাম আর ঘামাচির যন্ত্রণা করে তুলেছে অস্থির। তাই এ সময় ঘাম আর ঘামাচি থেকে শিশুকে একটু স্বস্তি দিতে বাবা-মাকে একটু বাড়তি যত্ন তো নিতেই হবে। প্রচন্ড গরমে বড়দের মতো শিশুরাও ঘেমে নেয়ে একাকার হয়। আর অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। পানির সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণও বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরে রক্তচাপ কমে যায়, শিশুর দুর্বল বোধ হয়, মাথা ঝিমঝিম করে। পানিস্বল্পতা গরমের সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করলে তা মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং কিডনির সমস্যাও হতে পারে।

যেসব শিশু অধিক ঘামে এবং সেই ঘাম আবার গায়ে শুকিয়ে যায়, তাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি। তাই শিশুর গায়ের জামা ঘামে ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা খুলে দিতে হবে। যাতে ঘাম গায়ে শুকিয়ে না যায় এবং শিশুর শরীর পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। এতে শিশু আরাম পাবে। তা না হলে এই গরমে ঠান্ডার কারণে শিশুর জ্বরও হতে পারে। গরমে প্রতিদিন শিশুকে গোসল করাতে হবে। অনেক সময় বৃষ্টি হলে বা একটু ঠান্ডা মনে হলে অভিভাবকরা শিশুকে গোসল করাতে চান না। কিন্তু গোসল না করালে ঘাম বসে ঠান্ডা লেগে যায়। তবে ঘামে জবজবা হয়ে স্কুল থেকে কিংবা বাইরে থেকে ফিরলে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করানো যাবে না। গরমে শিশুদের চুলের গোড়াও খুব ঘামে। এ ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। অনেকেই মনে করেন, ঘামের কারণে চুল ভিজলে সেটা বাতাসেই শুকিয়ে যাবে। হঁ্যা, বাতাসে শুকায় বটে। তবে বাতাসে শুকাতে যে পরিমাণ সময় লাগে, ততক্ষণে ঠান্ডা লেগে যায়। তাই বাতাসে শুকাবে এই অপেক্ষা না করে যত দ্রম্নত সম্ভব চুলের গোড়া ভালো করে মুছে দিন।

গরমের কারণে ঘামের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর শরীরে ঘামাচিও দেখা দেয়। গরমে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হয়, ফলে ঘর্মগ্রন্থি ও নালি ফেটে যায়। ত্বকের নিচে ঘাম জমতে থাকে। এটাই ঘামাচি। অনেক সময় ঘাম ও ময়লা জমে ঘর্মনালির মুখ বন্ধ হয়ে ইনফেকশন হয়। এতে ঘামাচি আরও বেড়ে যেতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে ঘামে গন্ধও দেখা দিতে পারে। ঘাম ও ময়লার কারণে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগও এ সময় দেখা দেয়।

গরমে ঘামাচি থেকে বাঁচতে নিয়মিত শিশুর ঘাম মুছে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে না ঘামে। ঘাম ও ধুলাবালি থেকেই ঘামাচির জন্ম। শিশুর ত্বক খুব কোমল, আর তাই শিশুর ত্বকে গরমে খুব দ্রম্নত ঘামাচি উঠতে দেখা যায়। এ সময় সকাল-বিকাল দুই বেলা গোসল শিশুকে ঘাম আর ঘামাচিতে অনেকটাই স্বস্তি দিতে পারে। গোসলের সময় শিশুকে প্রতিদিন সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে দিন আর একদিন পর পর চুলে শ্যাম্পু করে দিন। ঘামাচি বেশি চুলকানো কিংবা নখ দিয়ে স্পর্শ না করাই ভালো। নরম কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে মুছে দিলে ঘামাচি অনেকটাই কমে যাবে। গরমে শিশুর শরীরে ঘামাচিরোধক পাউডার বা ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তবে পাউডার দেয়ার আগে গা ভালো করে মুছে দিন। ঘামে ভেজা শরীরে পাউডার দেয়া উচিত নয়। মোটা করে পাউডারের প্রলেপ দিয়ে রাখা উচিত নয়। এতে ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আরও বেশি ঘামাচি ওঠে। এ সময় খুব ছোট শিশুকে ডায়পার না পরানোই ভালো। গরমে শিশুর বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে ভেজা ডায়পার। ত্বকের্ যাশও হতে পারে এ থেকে।

খুব ছোট শিশুদের গরমের সময় মাথা ন্যাড়া করে দিন। এতে মাথায় ঘামাচি, খুশকিসহ নানা রকম চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

গরমে শিশুকে এমন খাবার দিতে হবে, যাতে শরীর ঠান্ডা থাকে। এ সময় শিশুকে বেশি বেশি পানি পান করাতে হবে। বেশি ঘামলে শুধু পানি নয়, এর সঙ্গে পান করাতে হবে লেবুর শরবতও। খুব গরমে শিশুকে দু-একদিন পর পর খাওয়ার স্যালাইনও খাওয়াতে পারেন। তবে প্রতিদিন নয়। গ্রীষ্মে তরমুজ, বেল, পেঁপে, কাঁচা আম, বাঙ্গি প্রভৃতি ফল খেতে শিশুকে আগ্রহী করে তুলুন। সরাসরি খেতে না চাইলে ফলের শরবত, জুস প্রভৃতি করে খাওয়াতে পারেন। একই সঙ্গে হাতে তৈরি তরল খাবারও খেতে দিন। গরমে ভাজাপোড়া, বেশি তৈলাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার ও কেনা খাবার থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<50489 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1