শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মূত্রগ্রন্থি বা কিডনিতে পাথরের চিকিৎসা

নতুনধারা
  ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

মূত্রগ্রন্থি বা কিডনিতে পাথর হওয়া এ কথাটা বর্তমানে শুনলে আঁতকে ওঠার কিছু নেই বা নতুন কিছু মনে করারও নয়। কিডনির মধ্যে শক্তদানা কঠিন পদার্থ বা স্টোনের মতো জমা হলে তাকে রেনাল স্টোন বা কিডনির পাথর বলে। এ পাথর কখনো মূত্রগ্রন্থি/কিডনি, মূত্রনালি, আবার কখনো মূত্রথলিতে এসে জমা হয়। এর ফলে বিভিন্ন সমস্যাসহ প্রস্রাব অবরোধ হতে পারে।

কেন হয় কিডনিতে পাথর : কিডনির কাজ শরীরের রক্ত থেকে ময়লা আবর্জনা ও পানি শোধন করে প্রস্রাব আকারে বের করে দেয়া। দুটি ইউরেটারে মাধ্যমে প্রস্রাব মূত্রথলিতে এসে জমা হয়। তারপর প্রয়োজনমতো বেরিয়ে আসে। আমরা সারা দিন যা পানাহার করি তা থেকে শরীরের দরকারি অংশ শরীর কোষ নিজে রাখে। বাকি অংশ বর্জ্য পদার্থ হিসেবে রক্তের সঙ্গে মিশে কিডনি এ বর্জ্য পদার্থ রক্ত থেকে বের করে নিয়ে প্রস্রাব আকারে নিঃসরণ করে। তা ছাড়া আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিডনি পালন করে থাকে।

যেভাবে বুঝবেন কিডনির পাথর আছে : যে কোনো বয়সে নারী-পুরুষ, সবারই কিডনিতে পাথর জমতে পারে * বারবার প্রস্রাবের বেগ * ব্যথা কিডনি বরাবর হয়ে নিম্ন কুচকির দিকে, পেটে, বুকে প্রসারিত হতে পারে * কুচকি, অন্ডকোষ প্রভৃতি স্থানে মারাত্মক যন্ত্রণা হতে পারে * যে কোনো ভারী জিনিস তুলতে গেলে বা রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ব্যথার উদ্রেক হতে পারে * অন্ডকোষ ঊর্ধ্বে দিকে টেনে ধরা মতো অনুভব হতে পারে * ব্যথা ও যন্ত্রণা কখনো কখনো বা সব সময় থাকতে পারে * বমিভাব * বমি হতে পারে * হিক্কা-কপালে ঘাম, মূর্ছা যেতে পারে * নাড়ি দ্রম্নত ক্ষীণ * দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পেয়ে ১০৩ ডিগ্রি ফারেনাইট থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনাইট পর্যন্ত * সর্বদাই প্রস্রাব করার ইচ্ছা থাকে কিন্তু প্রস্রাব হয় না * প্রস্রাব ফোঁটা ফোঁটা বের হয় * তল পেটে ব্যথা হয় * প্রস্রাবে পুঁজ ও রক্ত মিশ্রিত থাকতে পারে * কোনো কোনো অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রোগী বোধ করে পাথর যেন নড়াচড়া করে * ছোট শিশুরা প্রস্রাব করতে গিয়ে কান্না করতে পারে * চার বছরের একটা শিশুর বেশ কয়েকটি স্টোন এসেছিল সে আমাকে জানালো শেষ দিন যে পাথরটা আসছে। সে দিন আমার অনেক কষ্ট হয়েছে, অনেকক্ষণ কেঁদেছি, সহ্য করতে না পেরে একটা কাঠি দিয়ে খুটে ও টিপে টিপে বের করেছি। পরে অনেকক্ষণ রক্ত আসছে। তাই বলি এখন ছোটদের ও দেখা যায়।

আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা : প্রথমত হিস্টিরি নিয়ে বোঝা যায় * এক্স-রে করে, আল্ট্রাসনোগ্রাম করে, আইভিও করে, প্রস্রাব পরীক্ষা করে জানতে পারেন কিডনির স্টোনের অবস্থা।

যে কারণে আপনাকে চিকিৎসা নিতে হবে : এর জটিলতাস্বরূপ কিডনির প্রদাহ, শরীর হাত-পা ফুলে যেতে পারে * কক্সিমিয়া * মূত্র অবরোধ হয়ে যন্ত্রণায় অস্থির ও অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

চিকিৎসা : হোমিওপ্যাথিতে কিডনির স্টোনের জন্য অনেক মেডিসিন আছে। তবে এ মেডিসিনগুলো এলোপ্যাথির মতো ধারাবাহিকভাবে প্রয়োগ করা চলে না। প্রতিটি মেডিসিনই আলাদা লক্ষণ সদৃশে ব্যবহার করে থাকে। যেমন লাইকোপুডিয়াম, লিথিয়াম কার্ব, সার্সাপেরিলা, থ্যালপসি-বার্সা, বারবারিস, এপিজিয়া পেমস, ক্যানথারিস ও ক্যালকেরিয়া প্রভৃতি; যা একজন আদর্শ চিকিৎসকের পক্ষেই সঠিক মাত্রা শক্তি নির্বাচন সম্ভব।

পাথর যদি বেশি বড় হয়ে যায় বা দীর্ঘ দিনের হয় তখন তা অনায়াসে বেরিয়ে আসতে পারে না। অর্থাৎ ৫ মিলিমিটারের ছোট হলে সহজে বেরিয়ে আসে। মি. রনি নামের আসার এক রোগীর কয়েকটি পাথর এসে আর আসছিল না। কিন্তু তার ব্যথা-বেদনা এমনকি যন্ত্রণার লাঘব হচ্ছিল না। তাই আমি তাকে স্টোন ক্লাস করিয়ে আসতে বলি, সে এর আগে আরো দু'বার করিয়েছিল। সে এবারো তাই করে আসে। তারপর আমি তাকে নিয়মিত ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেই সে তাই করে এবং আমাকে সাতটি পাথর খন্ডের সন্ধান দেয়। তারপরও তাকে বলি এক বছর চিকিৎসা নিতে, সে ৬ মাস চিকিৎসা নেয়। এখনো দেখা করতে আসে, ৫ বছর হলো ভালো আছে। তাই আমি বলি যাদের একবার কোথাও পাথর হয় তা অপসারিত হলেও বারবার হতে পারে। এ জন্য মাঝে মধ্যে ওষুধ, পরীক্ষা করতে হবে। ওষুধ খেতে হবে।

যা করতে হবে আপনাকে : পানি পানের অভ্যাস রাখতে হবে প্রয়োজনমতো- ঠান্ডা না লাগাই ভালো- বেদনা উপশমের জন্য হালকা গরম সেক দেয়া যেতে পারে। - দুধ, সাগু, বার্লি, দধি সুপথ্য। ফলমূল, লেবুর শরবত, বিশুদ্ধ পানি, বিশুদ্ধ বায়ু।

যা করবেন না : রোগ নিয়ে অবহেলা -চুন, সুপারি খাবেন না অম্স্ন, অর্জনকর দ্রব্য, মদ্যপান, ধূমপান, মাংস, গুরুপাক খাদ্য নেবেন না। পেইনকিলার দীর্ঘ দিন নেবেন না।

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<61551 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1