বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
  ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

দিনের পর দিন যদি শিশুর পায়খানা না হয় অথবা তার পায়খানা যদি অস্বাভাবিক শক্ত, শুষ্ক ও পায়খানা করতে কষ্ট হয়- তবে বুঝতে হবে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে। একেকজনের পায়খানার ধরন একেক রকম। তবে সাধারণভাবে সপ্তাহে তিনবারের কম কষ্টদায়ক পায়খানা হলে সেটাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা চলে।

\হ

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ কী?

শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে বেশ কিছু বিষয়কে কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী করা হয়।

সঠিক কৌশলে না খাওয়া

শিশুকে কৌটার দুধ খাওয়ালে এবং তা সঠিক পদ্ধতিতে তৈরি করতে না পারলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। অনেক মা সচেতনতার অভাবের জন্য শিশুকে খুব পাতলা করে দুধ তৈরি করে খাওয়ান। তারা ভাবেন, দুধ ঘন হলে বুঝি শিশুর পেটে সমস্যা দেখা দেবে। কিন্তু দুধ পাতলা করে তৈরি করলে তাতে পর্যাপ্ত খাদ্যসার থাকে না। ফলে শিশুর মল তৈরি হতে পারে না। আবার গরুর দুধে পানি না মেশালেও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এ ছাড়া যেসব শিশু দুধ ছাড়া অন্যান্য খাবার খাওয়া শুরু করেছে, তাদের খাবারে আঁশের পরিমাণ পর্যাপ্ত না থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে! শাকসবজি, ফলমূল এসব থেকে সে বঞ্চিত থাকলে কিংবা এসব খাবার না খেলে তার কোষ্ঠকাঠিন্য হবে।

কম পানি খাওয়া

শিশুকে পানি কম খাওয়ালে সে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগবে। অনেক বাবা-মায়ের ধারণা, শিশু বেশি পানি খেলে বমি করবে। এ ধারণা নিতান্ত ভুল! বরং বেশি পানি খেলে তার শরীরের কোষে দেখা দেবে সজীবতা। পানি কম খেলে শরীর পানিশূন্য হয়ে সৃষ্টি করবে কোষ্ঠকাঠিন্যের। শিশু যদি শুধু পানি খেতে না চায়, তাহলে তাকে লেবু সহকারে শরবত বানিয়ে খাওয়াতে হবে। নইলে রেহাই পাওয়া যাবে না কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে।

মলত্যাগের ভুল কৌশল

শিশুকে সময়মতো প্রতিদিন মলত্যাগের অভ্যাস করানো ভালো। নইলে অনিয়মিত মলত্যাগের ফলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। অনেক বাবা-মা শিশুকে পায়খানা করানোর জন্য জোরাজুরি করেন, পক্ষান্তরে এটা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্ম দেয়।

মলত্যাগে ভীতি

একবার কোনো শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মলত্যাগের ব্যাপারে তার মনে এক ধরনের ভীতির জন্ম নেয়। সে ভাবে, মলত্যাগ করতে গেলে বুঝি আবার কষ্ট হবে। এটা চিন্তা করে সে মল চেপে রাখার চেষ্টা করে। এর ফলে মল আরো শক্ত হয়ে যায়। সহজে মলত্যাগ করতে পারে না। আরো বেড়ে যায় কোষ্ঠকাঠিন্য।

অসুখ-বিসুখ

কিছু কিছু অসুখ-বিসুখের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ঘটে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে-

* মলদ্বারে ফিশার বা ক্ষত

* মলদ্বারের বা মলনালির অস্বাভাবিক গঠন

* অন্ত্রের আবদ্ধতা

* হার্সপ্রাং রোগ

* থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা হ্রাস প্রভৃতি।

ওষুধপত্র

কিছু কিছু ওষুধ ব্যবহারের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। যেমন- অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ, পেটব্যথার ওষুধ, মূত্রবর্ধক ওষুধ প্রভৃতি। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য শিশুকে বারবার পারগেটিভ জাতীয় ওষুধ দিয়ে পায়খানা করালে শিশু নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তখন কোষ্ঠকাঠিন্য লেগেই থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য শিশুকে ওষুধ না দেয়াই শ্রেয়। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে হলে যা করতে হবে, তা হলো-

\n: শিশুর নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

\n: শিশুকে বেশি করে পানি এবং তরল খাবার খাওয়াতে হবে।

\n: শিশুকে বেশি করে শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়াতে হবে।

\n: সঠিক প্রণালিতে দুধ তৈরি করে খাওয়াতে হবে।

\n: বয়স্ক শিশুদের ক্ষেত্রে সামান্য জোলাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।

\n: শিশুর মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

\n: শিশু কোনো নির্দিষ্ট অসুখে ভুগলে তার চিকিৎসা করাতে হবে।

\n: শিশুকে ইসবগুলের ভুসি ও ফলের রস খাওয়ানো যেতে পারে।

\n: শিশুকে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে হবে।

\n: কোষ্ঠকাঠিন্য গুরুতর হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<83355 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1