বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শীতকালে চর্ম রোগের প্রকোপ

নতুনধারা
  ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে শীত এলে বেশ কিছু চর্ম রোগ দেখা যায় যা কিনা গরমকালে তেমন একটা লক্ষ্য করা যায় না। আর একটা ব্যাপার আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করে থাকি যে রোগীরা এসে বলে শীত এলে তার শরীর খুবই চুলকায়। অথচ রোগীর শরীর পরীক্ষা করলে কিন্তু কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে চুলকানির মূল কারণ হচ্ছে শীত এলে তার ত্বক অধিক পরিমাণে শুষ্ক হয়ে যায় আর এ শুষ্কতার কারণ হচ্ছে বাতাসে যেহেতু শীতকালে জলীয় বাষ্প কমে যায় তাই বায়ুমন্ডল ত্বক থেকে পানি শুষে নিয়ে যায় ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং ত্বকে চুলকানি শুরু হয়। সেই চুলকানি আরো বেড়ে যায় যখন নখ বা অন্য কিছু দিয়ে বারবার চুলকানো হয়।

মনে রাখতে হবে আপনি যতই চুলকাবেন চুলকানির গতি ততই প্রবল হতে থাকবে। তাই নখ দিয়ে কখনই চুলকানো উচিত নয়। যদি একান্তই অসহ্য হয় তবে সে ক্ষেত্রে হালকাভাবে হাতের তালু দিয়ে চুলকানো যেতে পারে। যদি শুষ্কতার কারণেই এরকম চুলকানি দেখা দেয় তাহলে ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক ভালো থাকে। ময়েশ্চারাইজার পাওয়া না গেলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলেও ত্বক ভালো থাকে। চুলকানির পরিমাণ মারাত্মক হলে গিস্নসারিনের সঙ্গে পানি মিশিয়ে ব্যবহার করলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।

রোগটি কখনই একেবারে ভালো হয় না। তবে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব যদি ত্বকের গায়ে তৈলাক্ত পদার্থ নিয়মিত মাখা যায়। সে ক্ষেত্রে আলফা হাইড্রোক্সি এসিড খুবই কার্যকরী। এটি পাওয়া না গেলে গিস্নসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলেও খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে গিস্নসারিন ব্যবহারের সমস্যা হচ্ছে যে ত্বক আঠা আঠা হয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে একটি টাওয়েল দিয়ে অতিরিক্ত গিস্নসারিনটুকু চেপে তুলে নিলে ত্বকের আঠালো বা চট চটে ভাবটা কেটে যায় এবং ত্বক খুবই ভালো রাখা সম্ভব। একজিমার নাম আমরা সবাই জানি। সেই একজিমাও কিন্তু শীত এলে বাড়তে পারে। তাই একজিমায় আক্রান্ত রোগীদের আমরা সব সময়ই বলে দেই ভালো হওয়ার পরও যেন সেই স্থানটি শুষ্ক হতে দেয়া না হয়। একটি বিশেষ ধরনের একজিমা আছে যার নাম হচ্ছে একজিমা ক্রাকুয়েলেটাম। এটি সাধারণত চলিস্নশ বছরের ঊর্ধ্বের লোকদের হয়। এটি শীত এলেই বাড়ে কারণ শীতে বাতাসের জলীয় পদার্থ কমে যায়। এক্ষেত্রে শুষ্ক ত্বকের গায়ে ফাটা ফাটা দাগ ও হালকা পরিমাণ আঁইশ লক্ষ্য করা যায়। কখনো কখনো ত্বক পুরো হয়ে পড়তেও দেখা যায়। একটা কথা মনে রাখা খুবই প্রয়োজন ত্বক চুলকালে ত্বক পুরো হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তা শক্ত ও অস্বাভাবিক আকার ধারণ করে থাকে।

আর একটি রোগ আছে যার নাম আমরা প্রায় সবাই জানি। রোগটি হচ্ছে স্কেবিস। বাংলায় খুজলি পাঁচড়াও বলে থাকেন অনেকেই। এটির সঙ্গে যদিও সরাসরি শীতের বা বাতাসের আর্দ্রতার কোনো সম্পর্কের কথা জানা যায় না তবুও দেখা গেছে এ রোগটি শীত এলেই ব্যাপক আকারে দেখা দেয়। বিশেষ করে শিশুরা এতে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হতে থাকে। হতে পারে শীতকালে যেহেতু এক বিছানায় একত্রে অনেকেই চাপাচাপি করে শোয় সে কারণে রোগটি এ সময়ে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে। এ রোগটি আমাদের দেশের গরিব শ্রেণীর মধ্যে বেশি হতে দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যে সব শিশু স্কুলে যায় তারাই এতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এটি একটি জীবাণুবাহিত রোগ। যে কীটটি দিয়ে এ রোগটি হয় তার নাম হচ্ছে স্কেবিয়াইসারকপটিস স্কেরিবাই। এক্ষেত্রে শরীরে অসম্ভব রকম চুলকানি হতে দেখা যায় এবং রাতে চুলকানির তীব্রতা আরো বাড়ে। রোগটি খুব সাধারণ হলেও চিকিৎসায় দেরি হলে, এমন সব অবস্থা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসে যে ভালো অভিজ্ঞতা না থাকলে অনেকেই ভুল চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে সাধারণত ঘরের একাধিক ব্যক্তি এ রোগে ভুগে থাকেন। ফলে ঘরের সবাইকেই এ রোগের চিকিৎসা এক সঙ্গে করাতে হয় নয়ত ভালো হয়ে এ রোগ আবার তার দেহে দেখা দেবেই।

এছাড়াও কিছু কিছু রোগ আছে যেমন হাম ও চিকেন পকস। এগুলোর সঙ্গে আমরা খুবই পরিচিত। এগুলো ভাইরাসজনিত চর্ম রোগ। লক্ষ্য করলে দেখতে পাব যে এগুলো শীতকালেই বেশি হয়ে থাকে।

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<86336 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1