বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাভাইরাসের হোমিও চিকিৎসা

নতুনধারা
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বর্তমানে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট তৎপর রয়েছে। ভবিষ্যতে সাবধানতার জন্য এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আছে কিনা এবং কোন কোন হোমিওপ্যাথিক ওষুধ রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের আরোগ্য দিতে সহায়তা করতে পারে তার জন্য এ বিষয়ে জানা একান্ত অপরিহার্য।

ব্যাপক অর্থে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের নিয়মনীতি অনুসারে করোনাভাইরাসসহ কোনো ভাইরাসেরই প্রতিষেধক হিসেবে একক হোমিওপ্যাথিক ওষুধ নে। তবে কোনো একটি এলাকায় বসবাসরত অধিকাংশ লোক যদি সবাই একই লক্ষণ সমষ্টি নিয়ে করোনাভাইরাসসহ অন্য যে কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য যে একক ওষুধটি নির্বাচিত হবে, ওই ওষুধটি-ই ওই এলাকার ওই সময়ের সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য প্রতিষেধক ওষুধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলো : করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। এর সঙ্গে সঙ্গে থাকে অতিরিক্ত জ্বর, রক্ত বমি, রক্ত কাশি, নিদারুণ শারীরিক দুর্বলতা এবং অনবরত কফযুক্ত কাশি। অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া। হতে পারে নিউমোনিয়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তার পর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট।

নিম্নে বর্ণিত ওষুধগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরোগ্যের জন্য কাজ করতে পারে।

১. অ্যাকোনাইট নেপ

রোগের কারণ : অতিরিক্ত ঠান্ডা বা অতিরিক্ত গরম থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তনে, ধুলাবালি এবং অন্যান্য যে কোনো কারণে রোগাক্রমণ।

লক্ষণগুলো : করোনার আক্রমণ প্রবল ঝড়ের মতো আসে এবং অল্পক্ষণ থেকে রোগীকে একেবারে শেষ করে দেয়। অতিরিক্ত মৃতু্য ভয়, অস্থিরতা, শারীরিক জ্বালা-পোড়া, দ্রম্নতগতিতে তাপমাত্রা অনেক বেশি উঠে যাবে। অতিরিক্ত কফ, কাশি, শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে। মাথা ও বুকে ভার বোধ মনে হবে। সব শরীরে কম্পন দেখা দেবে। একটু পর পর প্রচুর পরিমাণ পানি একসঙ্গে পান করবে।

২. ব্রায়োনিয়া অ্যালবাম

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : রোগের কষ্টগুলো দুই-তিনদিনের মধ্যে আস্তে আস্তে দেখা দেবে। কয়েক দিনের মধ্যে রোগটি দেহের মধ্যে বিস্তার লাভ করবে। নাকের মধ্যে ঘন সর্দি, অনবরত শুষ্ক কাশি, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ রোগাক্রমণের তিন-চারদিনের মধ্যে দেখা দেবে। রোগের সময় রোগী সারাক্ষণ চুপচাপ শুয়ে থাকবে। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলবে না। সর্ব শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা ও জ্বর থাকবে। রোগী অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকবে। অতিরিক্ত হাঁচি ও শুষ্ক কাশি থাকবে। নাক দিয়ে রক্ত যাবে, রক্ত মিশ্রিত কফ, গলার স্বর বসে যাবে। ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, হুপিংকাশি ও ফুসফুসে পানি দেখা দিতে পারে। কষ্টদায়ক কাশি হবে। সর্ব অবস্থায় রোগী চুপচাপ থাকতে চাইবে। শরীরের সব ছিদ্র পথ শুষ্ক হয়ে যাবে। রোগী অলস প্রকৃতির হয়ে যাবে, এবং অনেকক্ষণ পরপর প্রচুর পরিমাণ পানি একসঙ্গে পান করবে।

৩. জেলসিমিয়াম

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : রোগাক্রমণের ৩-৪ দিন পর অতিরিক্ত ঠান্ডা, জ্বর, মাথাব্যথা দেখা দেবে। সব অবস্থায় রোগী মৃত ব্যক্তির মতো চুপচাপ অচেতন, তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকবে। সর্বশরীর ভারবোধ, অবশভাব, নিস্তেজভাব, থরথর করে শরীর কাঁপতে থাকবে। নিজে তার শরীর নাড়াতে পারবে না। হাত ও পা বরফের মতো ঠান্ডা কিন্তু মাথা অত্যন্ত গরম থাকবে। পানির পিপাসা একেবারে থাকে না। শুষ্ক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে।

৪. আর্সেনিক অ্যালবাম

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : রোগাক্রমণের প্রথম দিনেই অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা দেবে। সর্দি, কফ, কাশি, জ্বর এবং অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে। কাশির সঙ্গে দুর্গন্ধ যুক্ত ময়লা কফ বের হবে। রোগীর মধ্যে মৃতু্যভয়, মানসিক ও শারীরিক অস্থিরতা, শারীরিক জ্বালা-পোড়া, উৎকণ্ঠা দেখা দেবে। শ্বাসকষ্টে রোগীর বুক ভারী ভারী মনে হবে। রোগী সামনের দিকে ঝুঁকে বসে বা সামনের দিকে বাঁকা হয়ে ঝুঁকে থাকবে একটু বাতাস পাওয়ার জন্য। তেষ্টা নিবারণের জন্য কাতর হয়ে থাকবে। মুখ দিয়ে হালকা কফ, কাশি বের হবে। অল্প পরিমাণ পানি বারবার পান করিবে। রোগীর শরীরে জ্বর, মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাব থাকবে।

৫. ড্রসেরা

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকবে। বুকের মধ্যে ভার বোধ এবং আপেক্ষিক কাশি দেখা দেবে। কফ টুকরা টুকরা করে ঘন আকারে পড়তে থাকবে। গলার স্বর বসে যাবে। নাক, গলা এবং বুকের ভিতর থেকে রক্তকাশি বের হবে। হুপিংকাশি, রোগী উত্তেজনাপ্রবণ, অস্থির প্রকৃতির এবং মানসিক ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেবে।

৬. কার্ভো ভেজ

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : গলার মধ্যে চুলকানি যুক্ত কফ, আপেক্ষিক কাশি, গড়গড় আওয়াজ করে কাশি আসবে। কাশির সঙ্গে অতিরিক্ত বমি হবে। গলার স্বর বসে যাবে, গলার মধ্যে জ্বালা-পোড়া থাকবে, বমির কারণে রক্ত ও পানি শূন্যতা দেখা দেবে। নাড়ির গতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম থাকবে। শরীরের উপরিভাগ হিমশীতল হয়ে যাবে, শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে। রোগী বারবার বাতাস চাইবে। রোগী মরার মতো পড়ে থাকবে। ঠান্ডা ঘাম দেখা দেবে, সঙ্গে ঠান্ডা শ্বাস-প্রশ্বাস দেখা দেবে, জিহ্বা ঠান্ডা হয়ে যাবে এবং কথা বন্ধ হয়ে যাবে।

৭. এন্টিমোনিয়াম টার্টরিক্যম

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : মুখ বিবর্ণ ও রুগ্ন দেখাবে, নাকটি আকৃষ্ট ও কুঞ্চিত থাকবে, চক্ষু বসে যাবে, চোখের চারদিকে কৃষ্ণমন্ডল দেখাবে, কণ্ঠস্বর বিবর্ণ ও কুঞ্চিত হয়ে যাবে। মুখমন্ডল ঠান্ডা ঘামে আবৃত, ঠান্ডা এবং বিবর্ণ দেখাবে, শরীরের মধ্যে মৃত ব্যক্তির গন্ধ অনুভব হবে। সর্দি সংযুক্ত রোগী, শ্বাসনালি ও বায়ুনালিগুলোর মধ্যে সর্দির অবস্থা থাকবে। বক্ষে, কাশির ঘড়ঘড় এবং ভড়ভড় শব্দ শোনা যাবে, মনে হয় মৃতু্যর পূর্ব মুহূর্ত। বক্ষদেশে ক্রমাগত শ্লেষ্মায় ভর্তি হয়ে থাকবে। কিন্তু রোগী কফ তুলতে অক্ষম এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেবে। ঘড়ঘড় শব্দ বের হতে শোনা যাবে। রোগটি দ্রম্নতগতিতে অগ্রসর হতে থাবে সঙ্গে জ্বর থাবে। ২-৩ দিনের মধ্যে রোগী দুর্বল, অবসন্ন এবং শীতলতা দেখা দেবে।

৮. বেলাডোনা

রোগের কারণ : একই।

লক্ষণগুলো : রোগের আক্রমণ হঠাৎ এবং তীব্র আকার ধারণ করবে। রোগীর নাক, কান, গলা, ফুসফুসসহ শরীরের সর্ব অঙ্গ আক্রমণ করবে। এসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রক্তাভ হয়ে যাবে। সর্ব শরীরে জ্বালা-পোড়া, আপেক্ষিক কাশি, প্রচুর মাথাব্যথা, উৎকণ্ঠা এবং সর্ব শরীরে কম্পন দেখা দেবে। হাতের তালু, পায়ের তালু অত্যন্ত শীতল অনুভব হবে কিন্তু মাথা ও মুখমন্ডল অতিরিক্ত গরম অনুভব হবে। রোগীর শরীরে তীব্র ব্যথা ও জ্বর অনুভব হবে। জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট একবার অতিরিক্ত হবে আবার রোগের তীব্রতা কম অনুভব হবে। এভাবে রোগগুলো সারাদিন বাড়া-কমার মধ্যে থাকবে। রোগে লক্ষণগুলো অতি তাড়াতাড়ি দেখা দেবে এবং অতি তাড়াতাড়ি রোগী আরোগ্য লাভ করবে। রোগ লক্ষণের সঙ্গে মিলিয়ে গেলে অন্যান্য ওষুধও নির্বাচিত হতে পারে।

ডোজ : একজন রোগীর জন্য উপরে বর্ণিত যে কোনো ওষুধের ২০০ শক্তির ৪টি ডোজের প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিটি ডোজ পাউডারের সঙ্গে মিশ্রিত করে প্রতিদিন দুই ডোজ ওষুধ সেবন করবেন। দুদিন পর ওই রোগী তার রোগ থেকে মুক্তিলাভ করতে পারে। দয়া করে উপরের বিষয়টি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং অন্যদের কাছে সরবরাহ করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

উপদেশ : দয়া করে মেডিকেল মাস্ক ব্যবহার করুন। ফ্রিজের খাবার খাবেন না এবং পানিজাতীয় কিছু পান করবেন না। ঠান্ডা আবহাওয়া, ধুলাবালি, বিড়ি-সিগারেটের অভ্যাস পরিহার করুন। আপনার নাক, গলা ও ফুসফুস রক্ষা করুন।

\হডা. মো. নজরুল ইসলাম ভূইয়া

সহকারী অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত)

সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ইসলাম হোমিও ফার্মেসি

(সকল প্রকার জটিল রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র)

২৪/৩, চামেলীবাগ (২য় তলা), শান্তিনগর, ঢাকা-১২১৭

মোবাইল- ০১৭১২২৯৩০০৬

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<90038 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1