শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বালিশ পাচ্ছেন কারাবন্দিরা

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ১৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

দেশের কারাগারগুলোতে ২৩০ বছর পর প্রথমবারের মতো বন্দিদের ঘুমানোর জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে তুলার বালিশ। আগামী সপ্তাহ থেকে বন্দিদের মধ্যে পযার্য়ক্রমে এ বালিশ সরবরাহ করা হবে বলে আশাবাদী কারা কতৃর্পক্ষ।

দেশে ৬৮টি কারাগারে বতর্মানে বন্দির সংখ্যা প্রায় আশি হাজারের কাছাকাছি। বতর্মানে একমাত্র ডিভিশনপ্রাপ্ত ও হাসপাতালে ভতির্ বন্দিরা বালিশ ও মশারি ব্যবহারের সুযোগ পান। আর সাধারণ বন্দিদের জন্য সম্বল তিনটি কম্বল। একটি বিছানো হয়, অন্যটি ভঁাজ করে বালিশের মতো ব্যবহার করা হয় আর অন্যটি গায়ে দেয়ার জন্য। তবে এ উদ্যোগের ফলে কারাগারে আটক সব শ্রেণির বন্দিই এখন থেকে বালিশ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।

প্রসঙ্গত, ১৭৮৮ সালে একটি ক্রিমিনাল ওয়াডর্ চালুর মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে) যাত্রা শুরু। ২০১৬ সালে পুরনো ঢাকার এ কারাগারটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিবেশী দেশ ভারতে অনেক আগেই বন্দিদের বালিশ প্রদানসহ আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে।

কারা সূত্র জানায়, বন্দিদের আরামে ঘুম ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই কারা প্রশাসন অতিরিক্ত কোনো প্রকার সরকারি ব্যয় না করেই একটি করে বালিশ সরবরাহের কাযর্ক্রম হাতে নিয়েছে। সাবেক একজন কারা কমর্কতার্ বন্দিদের মধ্যে বালিশ সরবরাহের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আমাদের সময়ও আমরা বন্দিদের জন্য বালিশ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তখন আমাদের বলা হয়েছিল, কারাগারে বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় বন্দিদের মধ্যে প্রায়ই মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে থাকে। বালিশ থাকলে মারামারির সময় কোনো বন্দি বালিশ চাপা দিয়ে অন্য কোনো বন্দিকে মেরে ফেলতে পারে। এ খেঁাড়া অজুহাতের বালিশ সরবরাহের অনুমতি মেলেনি।

সাবেক ওই কারা কমর্কতার্ আরও বলেন, বন্দিদের মধ্যে বালিশ প্রদান করেই দায়িত্ব শেষ করলে হবে না। এজন্য কঠোর মনিটরিং থাকতে হবে। কোনো বন্দি মুক্তি পাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া বালিশটি পরিষ্কার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। তবেই এ কাযর্ক্রম সফলতা পাবে। পাশাপাশি তদারকি থাকতে হবে যাতে বালিশের মধ্যে মাদকদ্রব্য, মোবাইল ফোন, টাকা বা অন্য কোনো সামগ্রী লুকিয়ে রাখতে না পারে।

জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ক্রমে বালিশ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে কারা কতৃর্পক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় কারা অধিদপ্তর ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬ হাজার ৪২০টি তুলার বালিশ ক্রয় করেছে। এ ছাড়া ৫০ হাজার ৩৫৫টি বালিশ কেনার প্রক্রিয়াও শুরু করা করেছে। প্রতিটি বালিশের ক্রয়মূল্য কভারসহ ৩০০ টাকা। আর প্রতিটি বালিশের ওয়ারেন্টি এক বছর। এ সময়ের মধ্যে যদি বালিশ নষ্ট হয়ে যায় তবে তা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত আরামদায়ক ঘুমের জন্য বালিশ অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হয়। আর কারাগারে আটক বন্দিদের ক্ষেত্রে যার প্রভাব সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। অনেক বন্দিই মাঝে-মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই মানবাধিকার রক্ষায় ও বন্দির সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে আমরা বন্দির ঘুমানোর জন্য কম্বলের বতর্মান পদ্ধতির পরিবতের্ এই প্রথমবারের মতো আরামদায়ক কভারযুক্ত তুলার বালিশ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছি।

আইজি প্রিজন্স আরও বলেন, এরই অংশ হিসেবে আমরা ই-টেন্ডারের মাধ্যমে সারাদেশের প্রায় ৮০ হাজার বন্দিকে একটি করে বালিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অধিকসংখ্যক বন্দি ও গুরুত্বপূণর্ কারাগার বিবেচনায় দেশের সব কারাগারে আগামী সপ্তাহ থেকে বালিশ সরবরাহ শুরু করতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<3796 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1