শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধূমপান নিয়ন্ত্রণে জাপানে কঠোর আইন

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ০৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

ধূমপান নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগে কঠোর হওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে জাপান। ‘সংবিধিবদ্ধ সতকীর্করণÑ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’- এই চেনা কথাটা কেবল সচেতনতামূলক বাক্য হিসেবে থাকছে না জাপানে। যেমন ধরুনÑ কোনো ভবনের ভেতরে সিগারেট খাওয়া নিষেধ। অথচ অহরহই সেখানে এতদিন ধরে ধূমপান করা হয়েছে। কিন্তু এবার জাপান সরকার কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষত দেশটিতে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিককে সামনে রেখে এই আইন বাস্তবায়নের তোড়জোড় চলছে। যদিও এই বিধিবদ্ধ আইন কতটা সফলতার মুখ দেখবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যোন্নয়নমূলক এই আইন পুরোপুরি কাযর্কর হবে। ওই বছরই জুলাই থেকে টোকিও অলিম্পিকস এবং প্যারাঅলিম্পিক শুরু হতে যাচ্ছে দেশটিতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চোখে তামাক গ্রহণ নিয়ন্ত্রণে জাপানের অবস্থা শোচনীয়। তাই অলিম্পিকের মতো বিশেষ আয়োজনের আগেভাগে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশটাকে আরও স্বাস্থ্যকর করে তুলতে চায় জাপান।

এ সংক্রান্ত বিলটি গত মাসে জাপানের হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভে পাস হয়েছে। পরে হাউস অব কাউন্সিলরসে পুনঃনিরীক্ষণ শেষে সরকারি এবং বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের হাতেও পৌঁছেছে।

প্রথম ধাক্কাতেই স্কুল, হাসপাতাল এবং পাবলিক ইনস্টিটিউশনের ভেতরে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হবে। এই নিয়মের প্রয়োগ ঘটবে ২০১৯ সালের গ্রীষ্মের মধ্যে। আর ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নীতিগতভাবে রেস্টুরেন্ট, বার, অফিস এবং হোটেলে সিগারেট টানা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবশ্য এসব স্থানে ধূমপায়ীদের জন্য বিশেষ কক্ষ থাকতে পারে। সেখানে আবার কোনো খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা থাকা চলবে না।

তবে কথা আছে। ধূমপান প্রতিরোধে কঠোর আইন করা হলেও ধূমপায়ীদের স্বাথের্ কিছু বিধানও রাখা হয়েছে এই আইনে। কিছু কিছু অনুমোদিত স্থানে ধূমপায়ীরা সুখটান দিতে পারবেন। যেসব খাবারের দোকান এবং বার তৈরিতে ৫০ মিলিয়ন ইয়েন পযর্ন্ত (৪ লাখ ৪৩ হাজার ডলার) মূলধন ব্যয় করা হয়েছে, সে সব স্থানে এবং তার ১০০ বগির্মটারের মধ্যে ধূমপান করা যাবে। তবে সেখানে অবশ্যই ‘স্মোকিং অ্যালাউড’ জাতীয় সাইন থাকতে হবে। তবে এখানেও আছে ভিন্ন রকমের বিধিনিষেধ। এসব স্থানে চাইলেই ২০ বছরের কম বয়সীরা এসে ধূমপান করতে পারবেন না। এসব স্থানে আইন ভঙ্গ করলে ধূমপায়ীদের ৩ লাখ ইয়েন (প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা) এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কমর্কতাের্দর ৫ লাখ ইয়েন পযর্ন্ত জরিমানা করা হবে।

অনেক খাবারের দোকান ও বারে ভোজনরত অবস্থায় ধূমপানের জন্য বিশেষ তামাকের ব্যবহার করা হয়। এগুলো উত্তপ্ত হয়ে ধেঁায়া উৎপন্ন করে, কিন্তু পোড়ে না। এসব ব্যবহারেও বাধ্যবাধকতা জুড়ে দেবে আইন।

জাপানের এই আয়োজনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় দেশটি উন্নতির দিকে গেলেও অনেকে কিছু বিষয়ে আপত্তি তুলছেন। যেমন- নিজের বাড়িতে বসে আয়েশ করে ধূমপানের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আনাটা কতটা বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ? আবার অনেক ক্ষেত্রে খাবারের দোকান আর বারেও ধূমপানে বাধা মানতে নারাজ অনেকে। এমনকি ক্ষমতায় থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির্র অনেক প্রভাবশালী সদস্যই ধূমপানের আসক্ত এবং তাদের অনেকের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে।

এদিকে, জাপানের জাতীয় সংসদের চেয়ে আরও বেশি কঠোর হয়েছে টোকিও মেট্রোপলিটন। তাদের এক অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সব ধরনের বার এবং রেস্টুরেন্টে এক ‘দুবৃর্ত্ত’ হিসেবে চিহ্নিত হবে ধূমপান। এর জন্য প্রতিষ্ঠানের কোনো কমীর্ বা ক্রেতার বয়স বিবেচ্য হবে না। গোটা টোকিওর ৮৪ শতাংশ এলাকায় এই আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<6782 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1