শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অযোধ্যায় মসজিদ-মন্দির নিয়ে আইনি লড়াইয়ের লম্বা ইতিহাস

২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট নতুন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ফের নতুন করে তিন সদস্যের বেঞ্চ গঠিত হয়। ২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে নতুন করে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ তৈরি হয়। ৬ আগস্ট থেকে একটানা ৩৯ দিন ধরে প্রতিদিন চলছিল অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জমির অধিকারের মামলার শুনানি। এখন এই মামলার প্রধান বিবেচ্য বিষয় হলো, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিটি কার হাতে যাবে? এখন আদালত সূত্রে খবর, আগামী নভেম্বরে এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হতে পারে।
তানজিম ইফতেখার
  ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ নাকি রাম মন্দির- এ প্রশ্নের উত্তর জানাবে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। নাটকীয়ভাবে সমাপ্ত হয়েছে একটানা ঊনচলিস্নশ দিনের শুনানি। এখন অপেক্ষা চূড়ান্ত রায়ের।

মন্দির, মসজিদ বিতর্ক ভারতের হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। পরিস্থিতি বুঝে গত ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অযোধ্যায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। শুনানি চলাকালে আরও কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। যেমন- অনুমতি ছাড়া সেখানে ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ। তা ছাড়া নৌকা চালানো, আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রি না করা ইত্যাদি।

পাঁচশ বছর ধরে চলে আসা বিতর্কের আইনি পথচলার ইতিহাসও বেশ লম্বা। মহাকাব্য রামায়ণে বলা হয়েছে অযোধ্যা রামজন্মভূমি। যা উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত। মোঘল যুগে সেখানে মসজিদ তৈরি হয়। তারপর প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর ধরে মন্দির না মসজিদ তাই নিয়ে টানাপড়েন চলেছে। তবে আইনি লড়াই শুরু হয় ভারতে ব্রিটিশ শাসন শুরু হওয়ার পর। এরপর কেটে গেছে ১৩৪ বছর।

১৮৮৫ সালে বিতর্কিত জমির বাইরে শামিয়ানা টাঙিয়ে রামলালার মূর্তি স্থাপনের আবেদন জানান মহন্ত রঘুবীর দাস। আর্জি খারিজ করে দেয় ব্রিটিশ আদালত। ১৯৫৯ সালে বিতর্কিত জমির মালিকানা দাবি করে নির্মোহী আখড়া। ১৯৫০ সালে বিতর্কিত জমিতে রামলালার পুজোর অনুমতি চেয়ে মামলা হয় ফৈজাবাদ আদালতে। ১৯৮১ সালে জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করে সেন্ট্রাল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। ১৯৮৬ সালে পুজোর জন্য বিতর্কিত কাঠামোর দরজা খুলে দিতে নির্দেশ দেয় ফৈজাবাদ আদালত। আবার ১৯৮৯ সালে বিতর্কিত জমিতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয় এলাহাবাদ উচ্চ আদালত।

এই পর্যন্ত চলছিল আইনি লড়াই। তারপর যা ঘটেছে তা ভারতের ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় বলে অনেকে দাবি করেন। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয় হিন্দুত্ববাদীরা।

১৯৯৩ সালে দেশের সংসদে আইন পাস করে অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমির দখল নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১০ সালে এক মামলার রায়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানায়, জমিটি তিনভাগ করা হোক। দাবিদার রামলালা, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখাড়ার মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করা হোক। সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় মামলাকারী তিনটি পক্ষই। তারপর সুপ্রিম কোর্ট ২০১১ সালে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়।

এরপরেও ঘটনা থেমে থাকেনি। ২০১৭ সালে ৭ আগস্ট মামলার শুনানির জন্য তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট। ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের বেঞ্চে নতুন করে মামলার শুনানি শুরু হয়।

২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট নতুন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ফের নতুন করে তিন সদস্যের বেঞ্চ গঠিত হয়। ২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে নতুন করে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ তৈরি হয়। ৬ আগস্ট থেকে একটানা ৩৯ দিন ধরে প্রতিদিন চলছিল অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জমির অধিকারের মামলার শুনানি।

এখন এই মামলার প্রধান বিবেচ্য বিষয় হলো, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিটি কার হাতে যাবে? এখন আদালত সূত্রে খবর, আগামী নভেম্বরে এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<72135 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1