শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলা কবিতায় বষার্-বাদন

শাহমুব জুয়েল
  ২৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

সাহিত্যের কতগুলো মৌলিক ও ক্ষুদ্র অনুষঙ্গ থাকে। বষার্-বাদন বাংলা সাহিত্যের সংহত ও গুরুত্বপূণর্ উপাদান যা আদিম সাহিত্য চযার্পদে গলে মিশে মধ্যযুগ, আধুনিকযুগ এবং সমকালীন কবিতায় নিবিড়বন্ধনে সংযুক্ত হয়েছে। গ্রীষ্মাবকাশ মাঠে-ঘাটে, মেঠোপথে, নদ-নদীতে জলের আবাহন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, রাস্তা খেঁাড়াখুঁড়ির শহরে নগরে হঠাৎ জলসংযোগ, গ্রামের পিচ্ছিল পথ, ধান ভুট্টা পাটখড়ির কারণে স্যঁাতসেঁতে জনপদ, প্রকৃতি ও বষার্মুখর বাস্তবদৃশ্য কবিতা হয়ে কবির ব্যক্তিক অনুভ‚তিগুলো ধরা দেয়। জলের সঙ্গমে প্রকৃতির সঙ্গে জীবন জিজ্ঞাসার অন্তমিল ঘটে। বষার্র আগমনী আবেশে সে বষার্র ছবি অঁাকে কবিতার জলরঙে। সেই ছবি দেখে অনুভ‚ত হয় এটি বাঙালির নেশা ধরানো ঋতু বষার্। বষার্, গগনে কোনায় কোনায় কখনো সাদা কখনো কালো মেঘের হুড়হাড়। আচম্বিত ধেয়ে আসা অবুঝ বৃষ্টি। জল কাদা, মেটোপথ, উন্মাদ নদীর গ্রাম সঙ্গমের ফুতির্বাজি। অদৃশ্য চরে সবুজের ছায়া, ঘাট বদল মাঝির হৈ চৈ, জেলেদের উচ্ছ¡াস, গোধূমের মাঠে কচি পাতাদের সংসার, শামুক ঝিনুকের প্রজনন, ভগ্নাংশ ব্রিজের পাশে খেয়া বা কাঠের পুল, অদৃশ্য কিশোরীর কিঞ্চিৎ পা, স্কুল পলাতকের জলক্রীড়া, গৃহবধূর নেশাঘুম, বিরহানল, অসংযত আবেগ সময়ের ভঁাজে চিত্রিত হয় রোমান্টিক কবিতা। শ্রাবণ বরিষনে একদা গৃহকোণে/দু’কথা বলি যদি কাছে তারে/তাহাতে আসে যাবে কিবা কার (বষার্র দিনে, রবীন্দ্রনাথ) মহাকবি কালীদাসের মেঘদূত কাব্যে মেঘকে দূত করা হয়েছে যক্ষ তার প্রিয়াকে খবর পাঠিয়েছেন মেঘের মাধ্যমে। বৈষ্ণব কবি চÐীদাস ও বিদ্যাপতি পদেও বষার্ আনীত হয়েছে তাদের নিপুণতায়- ‘এ ঘোর রজনী মেঘের ঘটা কেমনে আইল বাটে/আঙ্গিনার মাঝে বধূয়া ভিজিছে দেখিয়া পরান ফাটে’- (চÐীদাস) এ ভাদর মাহ বাদর শূন্য মন্দির মোর- (বিদ্যাপতি) বষার্ সকল সৃষ্টিশীল মনেই অবাধে বিচরণ করে। এর আগমনে মনে নানা বিহŸলতা তৈরি হয়।

রবীন্দ্রনাথই বষার্-বাদন রূপায়নের ব্যতিক্রম শিল্পী। তার উক্তিতে যখন ব্যক্ত হয়-‘বাল্যকালের দিকে যখন তাকাইয়া দেখি তখন সবার চেয়ে স্পষ্ট করিয়া মনে পড়ে তখনকার বষার্র দিনগুলোর কথা বাতাসের বেগে জলের ছঁাটে বারান্দায় একেবারে ভাসিয়া যাইতেছে। সারি সারি ঘরের দরজা বন্ধ হইয়াছে।’ কবিতায় বষার্ যাপন করেছেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত, অমীয় চক্রবতীর্, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বুদ্ধদেব বসু, জসীমউদদীন, জীবনানন্দ দাশ, আহসান হাবীব, ফররুখ আহমদ, সুকান্ত, শামসুর রাহমান, নিমের্লন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, হুমায়ুন আহমদ, মহাদেব সাহা প্রমুখ।

বাংলায় বষার্র প্রকৃতি দুটো নিটোলধারায় প্রবাহিত হয়। ১. জলনিঃস্ব প্রকৃতির বিলাপ ২. জলময় প্রকৃতির উচ্ছ¡াস। একটি আরেকটির আপাত ও স্ববিরোধী। জলনিঃস্ব বিলাপে সবুজে ছেয়ে যাওয়া- ভুট্টা, ধান, ফলাদি গাছ, গৃহপালিত প্রাণী, জীবজন্তু কখনো মরা কখনো আধমরা, কখনো একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যায়। জলময় প্রকৃতির উচ্ছ¡াসে-প্রকৃতির কচুরিপানা, বহুল প্রজাতির ঘাস, কলমি, হানচে ও ধনচেলতা, আয়রনবাহিত কচু ও লতা, কঁাশবন এবং নানান প্রজাতির শ্যাওলা ও উদ্ভিদ এবং জলবাহিত সবুজেরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। প্রকৃতির মতো মানব হৃদয়ে আনন্দ-বিহরের ঐকতান শোনা যায়। কবি তা ধারণ করে শব্দের জাল বুনেন। তাতেই হয়ে ওঠে বষার্ গঁাথা আবেগ-বিহŸল কবিতা।

বষার্ ঋতু নিয়ে বিশ্বসাহিত্যে তেমন লেখাঝোকা না থাকলেও জাপানি কবিদের তীক্ষè চিন্তনে বিভিন্ন কবিতা পাওয়া যায়। জাপানিদের ভাষায় এ ধরনের কবিতাকে বলা হয় হাইকু। ছোট ছোটা কবিতাই এক একটি হাইকু। ইউকিউ সুজি (ণড়শরড় ঞংঁলর) এর কথা এবং তার কবিতা- অ ঐঙজঝঊঋখণ

“ও’স লঁংঃ ষরংঃবহরহম ঃড় ঃযব ৎধরহ/ ও’স ষরংঃবহরহম ঃড় ঃযব ংড়ঁহফ ড়ভ সধহু/ ফৎড়ঢ়ং ড়ভ ধিঃবৎ/ভধষষরহম ংষরমযঃষু ংষধহঃরহম ড়হ ঃযব/ ষবধাবং ধহফ ঢ়ধারহম ংঃড়হবং/ ঃযব বহপড়ঁহঃবৎ ড়ভ ঃযরহমং ড়হ যরময/ ধহফ ঃযরহমং যবৎব নবষড়ি সধশবং ধ হড়রংব”

বাংলা সাহিত্যে বষার্ স্বতন্ত্র ঋতু। এ ঋতুতেÑ মেঘ বৃষ্টি ও জলকাদার বাহুল্যতায় একাকার হয়ে আছে বাঙালির মনে এ আনন্দ ও বেদনার প্রতিধ্বনি শোনা যায় বারে বার। যা অন্য শিল্প সাহিত্যে ততটা স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় না।

প্রায় ৯০০ বছর আগে পÐিত জীমূত বাহন এই মাছের নাম দেয়া হয়েছে ইলিশ। বারো শতকে সবার্নন্দের টীকাসবর্স্ব গ্রন্থে এ ইলিশ শব্দটি পাওয়া যায়। বুৎপত্তিগতভাবে ইলিশ হলেও ইল হলো জলের মধ্যে ঈশ মানে ঈশ্বর, রাজা বা প্রভু। বহুকাল পূবর্ থেকেই বাংলা ভাষাভাষী ভোজন রসিকদের মধ্যে ইলিশ মাছ খুব জনপ্রিয়। ১৫ শতকের কবি বিজয় গুপ্তের মনসামঙ্গল কাব্যে ইলিশ মাছের রুচিশীল হিসেবে মাছের সাথে কলার ব্যঞ্জনায় ঝোলের কথা উঠে এসেছে/আনিয়া ইলিশ মৎস্য /করিল ফালা ফালা / তাহা দিয়া রান্ধে ব্যঞ্জন/দক্ষিনা সাগর কলা’। জলের প্রবাহে ঝঁাকে ঝঁাকে ইলিশ ধরা পড়ে। তাই কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯১৫ সালে বষার্ এবং ইলিশের যোগসূত্র অঙ্কিত করেন। হালকা হাওয়ায় মেঘের ছাওয়ায় ইলিশেগুঁড়ির নাচ/ ইলশেগুঁড়ির নাচন দেখে/নাচছে ইলিশ মাছ। দিনে ঘোর অন্ধকার গৃহকোণে কেশগুচ্ছে মেরামত হচ্ছে দেহের কারুকাজ, মাঠে-ঘাটে মেঘের খেলা, দস্যি কিশোরের উদোম ঝঁাপ, স্কুল দপ্তরে শূন্য বেঞ্চি ও চেয়ার, শুষ্ক মাটিতে সবুজের হাতছানি, হা-ডু-ডু, লুডু, তাসের কটকটানি, মসৃণ শিশুর হালুম কাহিনী মায়াময় ও মোহনীয় হয়ে ধরা দেয় কাব্যিক সুষমায় এবং এ বাংলার জীবনালেখ্যে। ‘কোন ছেলের ঘুম পাড়াতে কে গাহিল গান/বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর নদের এলো বান’ (বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, রবীন্দ্রনাথ), গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি জলে কখনো মৃদু কখনো প্রবল হাওয়ায় ধেয়ে বষার্ আসে সবুজ শ্যাওলায় ভরে যায় পদ্মা মেঘনার জল। জেলেরা মহানন্দে জাল ও নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে ছুটে বেড়ায়। টনে টনে ইলিশ নিয়ে তীরে আসে। ভরসা পায়, স্বাদ পায় ভোজনরসিক।

ত্রিশ শতকের তিমির হননের কবি জীবনানন্দ দাশ। কবিতায় রূপকল্প চিত্রকল্প বষার্ও এসেছে বিমোহন চিত্তে- ‘একদিন জলসিঁড়ি নদীটির সাজায়ে রেখেছি চিতা: বাংলার শ্রাবনের বিস্মিত আকাশ/চেয়ে রবে; ভিজে পেঁচা শান্ত স্নিগ্ধ চোখ মেলে কদমের বনে’। এই জল ভালো লাগে কবিতায়- ‘এই জল ভালো লাগে’- ‘বৃষ্টির রুপালি জল কতদিন এসে ধুয়েছে আমার দেহ/বুলায়ে দিয়েছে চুল চোখের উপরে তার শান্ত স্নিগ্ধ হাত রেখে খেলিয়াছে’-আবেগের ভরে; ‘শ্রাবণ রাত কবিতায়’-‘চোখ তুলে আমি দুই স্তর অন্ধকারের ভিতর ধূসর মেঘের মতো প্রবেশ করলাম; সেই মুখের ভেতর প্রবেশ করলাম।’ পল্লী কবি জসীমউদদীন গ্রাম বাংলার পাশাপাশি বষার্-বাদনও হয়েছে কবিতার পরিপত্র। ‘রঙিন অধরে সরল হাসিটি বিহান বেলার আগে/মেঘগুলি যেন রঙের ডুগডুগি উষার অনুরাগে’। (কৈশোর যৌবন দুহু মিলে গেল হলুদ বরনী) পল্লীবষার্ কবিতায় বষর্ণমুখর গ্রামবাংলার দোছিপায় আড্ডা বসে ফঁাকেফঁাকে ‘অসমাপ্ত কাজগুলো সেরে নেয়। কিচ্ছা কাহিনী যে লোকায়ত কৃষ্টি কালাচার তা ব্যক্ত হয়েছে এ কবিতায়Ñ ‘বাহারে নাচিছে ঝরঝর জল/গুরু মেঘ ডাকে এসবের মাঝে রূপকথা যেন রূপ অঁাকে’। বুদ্ধদেব বসুর কবিতায় প্রেম ও প্রকৃতির প্রেয়সী, উদ্ভিদহীন, ইটপাথরে কনক্রিটে ঠাসা কলকাতার শ্রাবণের বষর্ণ তাকে পেঁৗছে দেয় স্মৃতির মননে কল্পনার মাঠে শ্রাবণদিনে বৃষ্টি ঝরছে ট্র্যামবিহীন রাস্তার ফঁাকে গজানো ঘাসে, তার মাঝে গজাচ্ছে ডালপালা।

মানবদরদী ও সংবেদনশীল কবি আহসান হাবীব। এদেশের জল হাওয়ামাটির খামির অরণ্যছায়া, সুনীল গগন প্রতিবেশ পরিবেশ, বিচিত্র রং রৌদ্রজলে এবং মেঘবৃষ্টি ঝড়ে কমর্রত মানুষের চোখের ভাষা তুলে আনেন শিল্পের জলরঙে। ‘কায়সুল’, আমাকে তুমি বষার্র কবিতা আর পাঠাতে বলো না/বষাের্ক আমার বড় ভয়/বষার্তীর মঞ্জুরি আসেনি/ আজও পাবো কিনা তাও জানি না।’ কবি আল মাহমুদের ‘আষাঢ়ের রাত্রে’- ‘শুধু দিগন্ত বিস্তর বৃষ্টি ঝরে যায়/শেওলা পিছল আমাদের গরিয়ান গ্রহটির গায়।’ প্রেমের কবি নিমের্লন্দু গুণ- বষার্র চিত্র তার কবিতায় এসেছে প্রতিবাদী চাতুযর্তায়। ‘আমি কত ভালোবাসা দুপায়ে মাড়িয়ে পেঁৗছেছি অবশেষে/কল্পনা মেঘোলোক ছেড়ে বাস্তব মেঘে’। হুমায়ুন আহমেদ যিনি বষার্পাগল লেখক। বষার্র আবহকে পাগলের মতো ভালোবাসতেন। বষার্র প্রতি মাদকতা তা আমরা পাই তার কবিতায়। যখন প্রিয়তমাকে সে সম্মোধন করে বষার্র আবহে। ‘যদি মন কঁাদে তুমি চলে এসো এক বরষায়।’

শামসুর রাহমানের কবিতায় শহরের বণার্ঢ্য চিত্র, তাদের চেতনা, অবচেতনের অনুষঙ্গ স্বাধীনতা, বিজয়, রাজনীতি, প্রেমই শানিত হয়নি, এসেছে বষার্ও যাতে তিনি বুদ হয়ে আছেন। মানব হৃদয়ের জন্য প্রেমিকার অন্তরন্ত দৃষ্টিতে দেখেন ‘টেবিলে রয়েছি ঝুঁকে, আমিও চাষির মতো বড় ব্যাগ্র হয়ে চেয়ে আছি খাতার পাতায় যদি জড়ো হয় মেঘ যদি ঝরে ফুল বৃষ্টি/অলস পেন্সিল হাতে বকমাকার্। পাতা জোড়া আকাশের খঁাখঁা নীল। (কবিতা, অনাবৃষ্টি) সৈয়দ শামসুল হক বষাের্ক জলফোয়ারার মতো কল্পনা করেছেন। বৃষ্টি জলই কাক্সিক্ষত। বৃষ্টি জলে ভিজে কামনা প্রিয় দেশকে... তোমাকে অভিবাদন বাংলাদেশ, তুমি ফিরে এসেছো তোমার বৃষ্টিভেজা খড়ের কুটিরে যার ছায়ায় দীঘর্ অপেক্ষায় আছে সন্তান এবং স্বপ্নের কবিতা।’ ফররুখ আহমদের কবিতায় ‘বৃষ্টি এলো কাশবনে/জাগলো সাড়া ঘাসবনে/বকের সারি কোথায় রে/লুকিয়ে গেল বঁাশবনে/নদীতে নাই খেয়া যে/ডাকলো দুরে দেয়া যে/কোন সে বনের আড়ালে/ফুটলো আবার কেয়া যে’। অশ্রæ বিসজের্নর কবি মহাদেব সাহা। কবি বষার্ ও বন্যাকে লালন করেছেন- বোধের কোটরে। তাই কবির মিনতি, ‘তুমি বুঝলে না আমি কতকাল এই বষার্ হয়ে আছি/মেঘে মেঘে মল্লার হয়ে আছি তোমার জন্য/একবিন্দু অশ্রæহয়ে আছি সমস্ত প্রেমিকের চোখে’। কবি আসলাম সানীর কবিতায় বষার্য় নৈসগের্র চিত্র পাই বৃষ্টি কবিতায়- ‘জল নামে অবিরত সৃষ্টি সুখে/আমার ঘরের ছোট্টবুকে/পড়ুক ঝুঁকে আকাশটা ওই/ঋতুর রাণী আমি সানী/অপেক্ষাতে রই/বষার্ এলে ছন্দে ঢেলে অন্তরে হইচই’। অসীম সাহার কবিতায় প্রিয় মাধবী সে যেন বষার্মুখর দিনে বাহিরে না যায়। মাধবীর জন্য কবির মায়াকান্না ঠিক যেন বষার্রই জল- ঢাকার আকাশটা আজ মেঘাচ্ছন্ন মাধবী/এখন তুমি বাহিরে যেও না/এই করুণ বৃষ্টিতে তুমি ভিজে গেলে/বড় ¯øান হয়ে যাবে তোমার শরীর/মাধবী বৃষ্টিতে তুমি বাহিরে যেও না’। (শহরে এই বৃষ্টিতে)। কামাল চৌধুরীর কবিতায় বষার্ ধরা দেয়- ‘খোলা জানালায় জল ভরা এই চোখ/কঁাদতে এসেছে চরাচরে মুখ গুঁজে/বৃষ্টিতে নূপুর পরাও আজ বিরোহী শালিক অশ্রæকে নেবে খুঁজে’।

এ ছাড়াও সুফিয়া কামাল, রফিক আজাদ, শহীদ কাদরী, আহমদ রফিক, মুহম্মদ নুরুল হুদা প্রমুখ বষাের্ক নিয়ে ছন্দিতমালা গেঁথেছেন। কখনো আংশিক কখনো পূণার্ঙ্গরূপে তাদের কবিতা বষাের্ক অনুষঙ্গ করেছে। জায়গা করে নিয়েছে সমকালীন পাঠক সুহৃদের হৃদয়মাঠে। সময়ান্তরে পরিবেশ প্রকৃতি থেমে নেই। রবীন্দ্রনাথ জমিদারি দেখার সুবাধে পদ্মার বোটে বসে শ্রাবণের সাথে মিশেছেন; গ্রন্থিত করেছেন বষার্র আলোকচিত্র যা সা¤প্রতিক সময়ে লেখককেরা পাচ্ছেন না। বাস্তবতা সম্পূণর্ ভিন্ন।

বাংলায় বষার্ আসে। দেখা মেলে বিস্তৃত চরের ঝাউবনের খেলা, চোরাবালির সৌন্দযর্, শোভিত ধান, পাল তোলা নৌকা, সরলা মেয়ের হাসি, মাঝি, মৎস্য শিকার, টিনের চালের শব্দ, দূরের বষর্ণমুখর বিল। তারা এগুলো নিজ চোখে অবলোকন করেছেন। এখন সমাজ বাস্তবতা ও প্রকৃতির দৈন্য এত আপেক্ষিক তাতে মেলবন্ধন মোটেও যথাযথ নয়, তবুও রচিত হচ্ছে কবিতা। কবিতা আসছে যান্ত্রিক সভ্যতার কঁাধে বষার্জল নিয়ে। পিচঢালা পথ, বিরহী নারীর বণর্না, রেইনকোট, রঙিনছাতা, পাকের্র সবুজে যুগল বঁাধন, বলা চলে- জল¯্রােতে গ্রামবাংলার বাস্তব পরিস্থিতি ও বষাির্বধৌত বিহŸল বাংলা কবিতার বাদন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<5215 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1