দিতে হবে প্রতিভা বিকাশের পূর্ণ সুযোগ
য় নন্দিনী ডেস্ক
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষমতায়ন শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় ১৮৬০-এর সমসাময়িক সময়ে। অত্যন্ত সংকীর্ণ অর্থে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন বোঝাতে। আশির দশকে তা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বেসরকারি উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে নারীর সামগ্রিক অধিকার অর্জনের দাবি বোঝাতে। ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ উইথ উইমেন ফর নিউ ইরা নারীর ক্ষমতায়নের সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করেছে এভাবে- এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে জেন্ডার বৈষম্যবিহীন এক পৃথিবী গড়ে তোলা। যেখানে পৃথিবীতে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে নারী তার নিজের জীবনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে তিনটি দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সমন্বিত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধি। সমন্বিত উন্নয়ন তত্ত্বের মূল দর্শন হচ্ছে- পরিবার ও সামাজিক উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো নারী উন্নয়ন। অর্থনৈতিক উন্নয়ন তত্ত্বের মূল বক্তব্য হলো যে বিষয়গুলো নারীকে পিছিয়ে রাখে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে। নারীর ক্ষমতায়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষমতার উৎস ও কাঠামোর পরিবর্তন, নারীর সুপ্ত প্রতিভা এবং সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশের সুযোগ, তার ওপর প্রভাব বিস্তারকারী সিদ্ধান্তসমূহে অংশ নিয়ে নিজের জীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ইত্যাদি।
পরিসংখ্যান বু্যরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী দেশের ৫ কোটি ৪১ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ নারী। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৯৭ জন। বিদেশে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ৭৬ লাখ প্রবাসীর মধ্যে ৮২ হাজার ৫৫৮ জন নারী। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধানতম ক্ষেত্র গার্মেন্টস খাতের ৮০ ভাগ কর্মীই নারী। দেশের ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবহারকারীও নারী। নানা প্রতিকূলতা, বাধা ডিঙিয়ে তার এখন কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে নারীর ব্যাপকহারে অংশগ্রহণ পৃথিবীর মধ্যে নজির রয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে নারীর আইনি সুরক্ষা
য় নন্দিনী ডেস্ক
কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রয়োজন হয় আইনি সুরক্ষার। তাই বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর আইনি সুরক্ষার বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংকের তৈরি করা এক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান পেছনের সারিতে। ২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বের ১৮৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৯তম। দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বাদে অন্যান্য দেশ বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। 'নারী, ব্যবসা ও আইন ২০১৯: এক দশকের সংস্কার' নামে এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীরা অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে গত ১০ বছরে অনেক সংস্কার হলেও এখনো পুরুষের সঙ্গে অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। এ সময়ে নারীর অবস্থানের উন্নতি হয়েছে। মোট আটটি নির্দেশকের ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যাংক প্রত্যেক দেশের স্কোর নির্ণয় করেছে। নির্দেশগুলো হলো- নারীর চলাচলের স্বাধীনতা, চাকরি শুরু করা, কাজের প্রাপ্তি, বিয়ে হওয়া, বাচ্চা থাকা, ব্যবসা পরিচালনা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পেনশন প্রাপ্তি।
জিডিপিতে নারীর প্রকৃত অবদান
য় নন্দিনী ডেস্ক
শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত, শিক্ষাবঞ্চিত- সব স্তরের নারীই কোনো না কোনোভাবে দেশের অর্থনীতিতে নিরবচ্ছিন্ন অবদান রাখছেন। সরকারি সংস্থা বিআইডিএসের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, জিডিপিতে কর্মজীবী নারীদের অবদান ২০ শতাংশ। শুধু তাই নয়- অর্থনীতিতে নারীদের অবদান বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর বিভিন্ন সমীক্ষার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী দেশে ১ কোটি ৬৮ লাখ নারী অর্থনীতির সূচকের তিন খাত-কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে কাজ করছেন। অর্থনীতিতে নারীর সাফল্য বেড়েছে, নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে উৎপাদন ব্যবস্থায়। সমীক্ষা অনুযায়ী, মূলধারার অর্থনীতি হিসেবে স্বীকৃত উৎপাদন খাতে মোট কর্মীর প্রায় অর্ধেকই এখন নারী। এখানে ৫০ লাখ ১৫ হাজার নারী-পুরুষ কাজ করেন। তাদের মধ্যে নারী ২২ লাখ ১৭ হাজার। তবে নারীকর্মীদের সিংহভাগই শ্রমজীবী। বাকিদের মধ্যে কেউ উদ্যোক্তা, কেউ চিকিৎসক বা প্রকৌশলী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শীর্ষ নির্বাহী এবং উচ্চ পদেও দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণায় বলছে, অর্থনীতিতে নারীর যে অবদান গণনায় আসে না, তার পরিমাণ জিডিপির ৭৭ থেকে ৮৭ শতাংশ। ফলে নারীর প্রকৃত অবদান গণনায় এলে জিডিপির হিসাবে বড় উলস্নম্ফন ঘটতে পারে।