মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাজের সঙ্গে ব্যস্ত জীবনকে মানিয়ে নেয়া

সব কাজ নিজেরই করতে হবে, এই মন-মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন। বাচ্চাদের কাজগুলো বাচ্চাকেই করতে বলুন এটি যেমন একদিকে আপনার বাচ্চাকে দায়িত্ববান করে তুলবে তেমনি আপনারও কাজের চাপ কমবে। ছুটির দিনে সবাই মিলে ডাইনিং সাজানো কিংবা ক্লিনিংয়ের কাজ, বাগান পরিচর্যা ইত্যাদি কাজগুলো করলে যেমন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় তেমনি ফ্যামিলি বন্ডিংও বাড়ে।
তানিয়া জাহিদ
  ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
তানিয়া জাহিদ, এইচআর প্রফেশনাল

ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স? এটা কি আদৌ আনা সম্ভব? নারীরা একদিকে যেমন কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে তেমনি ফ্যামিলি লাইফেও দিন দিন বাড়তে থাকে দায়িত্ব। তবে এখন সংসারের সবাই অনেক হেল্পফুল, যেটা আমাদের আগের জেনারেশনের মধ্যে অনেকটাই অনুপস্থিত ছিল। নারীদের জন্য ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স একটা চ্যালেঞ্জ। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সবসময় ডেভেলপমেন্টের ওপর থাকতে হয়। অফিস, ফ্যামিলি, সামাজিকতা রক্ষা ইত্যাদির পর ডেভেলপমেন্টে সময় দেয়া যে কতটা কঠিন সেটা একজন কর্মজীবী মা হাড়ে হাড়ে টের পায়। আর সব কিছু করতে গিয়ে স্ট্রেস বাড়ে এতে প্রচন্ড বার্নআউট হয়, ফলাফল কর্মক্ষমতা হ্রাস। আমরা এখানে কিছু পন্থা দেখব যা কিনা আমাদের এই ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সে কিছুটা হলেও সহায়ক হতে পারে।

পজিটিভ মনোভাব- পজিটিভ মনোভাব আনুন সঙ্গে সঙ্গে মনশ্চক্ষুতে দেখে নিন আপনার পস্ন্যানিং ঠিক আছে কিনা। এরপর কাজে লেগে যান। পজিটিভ মনোভাব আত্মবিশ্বাস বাড়াবে, যা কিনা পস্ন্যানিং থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন করতে সহায়ক হবে।

লক্ষ্য স্থির করুন- আপনার লক্ষ্য স্থির করুন। এবং আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে কতটুকু স্পিডে চলবেন সেটা বর্তমান সময় বিবেচনা করে ঠিক করুন। রাস্তায় জ্যামে গাড়ি থাকা অবস্থায় যদি গাড়ির গতি বাড়ান এতে ক্ষতি ছাড়া আর কিছু হবে না, জীবনটাও ঠিক তেমনি। কখনো কম কখনো জোরে চাপ রাখতে হবে আপনার লাইফের স্কেলেটরের ওপর। সঙ্গে সঙ্গে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছতে কি কি সহায়ক জিনিস আপনার প্রয়োজন সেগুলোর তালিকা করে নিন।

প্রায়োরিটি অনুযায়ী কাজ সাজান- কর্মক্ষেত্রের প্রায়োরিটি, ফ্যামিলি প্রায়োরিটিগুলোর মধ্যে সমন্বয় আনুন। অন্যকে দেখে অনুকরণ না করে নিজের অবস্থান সম্পর্কে ভেবে কাজ করতে হবে। এমনটা না হয় আজকে কর্মক্ষেত্রকে কিংবা নিজের পার্সোনাল ডেভেলপমেন্টের জন্য ফ্যামিলি ইগনোর করে কাজ করে যাচ্ছেন। একটা সময় আফসোস হতে পারে আপনার সন্তানের কিংবা ফ্যামিলি লাইফের জন্য। সুস্থ সুন্দর ইমোশনাল হেলথ যেমন বাচ্চাদের তেমনি সবার জন্য জরুরি। এতে আপনার স্ট্রেস কম হবে।

স্বচ্ছ সম্পর্ক গড়ুন- বসের সঙ্গে ট্র্যান্সপারেন্ট থাকুন। উদাহরণস্বরূপ অনেক সময় বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছানোর জন্য অফিসে যেতে দেরি হয়ে যায়। আপনার সুপারভাইজারকে এই বিষয়টা জানিয়ে রাখুন। আপনার সুপারভাইজার আপনাকে বিষয়টা সাহায্য করতে পারে। যদি সেটা সম্ভব না হয়। দ্বিতীয় কোনো পন্থা বের করুন। স্বামী বা আপনার আত্মীয় বা বিশ্বস্ত কারও সাহায্য নিতে পারেন। ইদানীং মানুষ যৌথ ফ্যামিলির দিকে বেশি আগ্রহী, একক ফ্যামিলির চেয়ে। যেটা কর্মজীবী মাদের অনেক স্বস্তি দিয়ে থাকে। কলিগ, বন্ধু-বান্ধব, বাচ্চার স্কুলের শিক্ষক, আয়াদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুন। আপনার প্রয়োজনে তারা এগিয়ে আসবে।

কাজের সুষম বণ্টন- কাজগুলো সবার মধ্যে ভাগ করে দিন। সব কাজ নিজেরই করতে হবে, এই মন-মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন। বাচ্চাদের কাজগুলো বাচ্চাকেই করতে বলুন এটি যেমন একদিকে আপনার বাচ্চাকে দায়িত্ববান করে তুলবে তেমনি আপনারও কাজের চাপ কমবে। ছুটির দিনে সবাই মিলে ডাইনিং সাজানো কিংবা ক্লিনিংয়ের কাজ, বাগান পরিচর্যা ইত্যাদি কাজগুলো করলে যেমন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় তেমনি ফ্যামিলি বন্ডিংও বাড়ে। পাশাপাশি ফ্যামিলি মেম্বাররা এক সঙ্গে যখন সময় কাটাবেন তখন অপ্রয়োজনীয় মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না, এতে উপস্থিত ব্যক্তি মনে করতে পারে তাকে ইগনোর করা হচ্ছে।

অপ্রয়োজনীয় কাজে সময়ক্ষেপণ- সারাদিনে আমরা অনেক সময় নষ্ট করি সোশ্যাল মিডিয়া, অপ্রয়োজনীয় ফোন চ্যাটিং, গসিপিং, ইউটিউব, টিভি শো ইত্যাদিতে। এসব থেকে সময় কমিয়ে এনে সময়ের কাজ সময়ে করুন, অফিসের কাজ অফিসেই শেষ করার চেষ্টা করুন। এবং পার্সোনাল ডেভেলপমেন্টে সময়টা দিন।

টেকনোলজি ব্যবহার- টেকনোলজিকে কাজে লাগান। ফোন কল, ভিডিও কলের মাধ্যমে বাচ্চাদের সঙ্গে লাঞ্চ টাইমে যোগাযোগ করুন। এতে আপনার মেন্টাল স্ট্রেস যেমন কমবে, বাচ্চারাও আশস্ত হবে যে আপনি ওদের সঙ্গেই আছেন।

না বলতে শিখুন- যেসব বিষয় আপনার সময়কে নষ্ট করবে, আপনার মনকে কষ্ট দেবে, সে সব থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। সামাজিকতা বা চক্ষু লজ্জার ভয়ে কিছু করবেন না। সুন্দর মার্জিত ভাষায় না বলা শিখুন।

নিজের প্রতি যত্নবান হোন- নিজের প্রতি যত্নবান না হলে এনার্জি লেভেল কমবে। আর অফিস বাসা সামলানো সম্ভবপর হবে না সুষ্ঠুভাবে। পর্যাপ্ত ঘুমান, সুষম খাবার খান আর নিয়মিত ব্যায়াম করুন। আপনার পার্টনার কিংবা বাচ্চাদের সঙ্গে রাখতে পারেন, আপনার মর্নিং ওয়াক কিংবা ব্যায়ামের সময়। এতেও এক সঙ্গে দুই দিক রক্ষা করা যাবে। সর্বোপরি প্রতিদিন নিজের জন্য কিছুটা সময় অবশ্যই রাখবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78788 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1