শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বেড়ানো

শিল্পমন্ডিত টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদ

আটিয়া মসজিদের প্রধান কক্ষ ও বারান্দা দুই ভাগে বিভক্ত। প্রধান কক্ষটি বগার্কৃতির, এর ভিতর প্রত্যেক বাহুর দৈঘ্যর্ ২৫ ফুটের উপরে মনোমুগ্ধকর বিরাট একটি গম্বুজ আছে। এর বারান্দার উপরে অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ আছে...
আখতার হোসেন খান
  ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:৪২

প্রাচীন যুগে স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম কীতির্ হচ্ছে মসজিদ। অনিন্দ সুন্দর সৃষ্টি কমের্র জন্য তৎকালীন স্থপতিরা রাজপ্রাসাদের পাশাপাশি মসজিদকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এগুলো প্রাচীন যুগ, সুলতানী যুগ ও মুঘল যুগে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এরকম একটি আদি নিদশর্ন হচ্ছে টাঙ্গাইলের আটিয়ায় অবস্থিত ‘আটিয়া মসজিদ’। যেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভনর্র খোরশেদ আলম স্বাক্ষরিত দশ টাকার নোটে ‘আতিয়া জামে মসজিদ, টাঙ্গাইল’ নামে খ্যাত। মসজিদটি নিমার্ণ করেছেন করটিয়ার বিখ্যাত খান পনি বংশের আদি পুরুষ সায়িদ খান পনি। তার পিতার নাম বায়োজিদ খান পনি। এ মসজিদে স্থাপিত প্রথম আদি শিলালিপি এখনো ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এই শিলা লিপিটি ফরাসী ভাষায় লেখা। এতে উল্লেখ আছে ‘নূর উদ দীন জাহাঙ্গীর বাদশাহ গাযীব রাজত্বকালে ১০১৯ হিজরি সালে ১৬১০-১১ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ খান পনির মসজিদ (নিমার্ণ) সমাপ্ত হয়। মসজিদটির নিমার্ণ কাজ শুরু হয় ১০১৮ হিজরি সালে ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে। আটিয়া মসজিদে স্থাপিত প্রথম আদি শিলা লিপিটি পাওয়া যায়নি। তবে পরবতীর্ কালে স্থাপিত শিলালিপি থেকে আমরা নি¤েœাক্ত তথ্য পাই: ঞযব অঃরধ গড়ংয়ঁব ইঁরষফ নু ংধরফ শযধহ ঢ়ধহবব রহ ১৬০৯; জবংঃড়ৎবফ ইু জড়ংিযঁহ শযধঃড়ড়হ পযড়ফিযঁৎধহর রহ ১৮৩৭; জবঢ়ধৎবফ ইু অযসবফ ঈযঁুহধার শযধহ রহ ১৯০৯ রিঃয ঃযব পড়-ড়ঢ়বৎধঃরড়হ ড়ভ ধিলবফধষর শযধহ ঢ়ধবব ্ ড়ঃযবৎ তবসরহফধৎং ড়ভ অঃরধ. আটিয়া মসজিদের প্রধান কক্ষ ও বারান্দা দুই ভাগে বিভক্ত। প্রধান কক্ষটি বগার্কৃতির, এর ভিতর প্রত্যেক বাহুর দৈঘ্যর্ ২৫ ফুটের উপরে মনোমুগ্ধকর বিরাট একটি গম্বুজ আছে। এর বারান্দার উপরে অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ আছে। মসজিদের বারান্দার পূবর্ দেয়ালে পত্রাকারে খিলানের সাহায্যে নিমির্ত ৩টি প্রবেশ পথ এবং বারান্দা থেকে মসজিদে প্রবেশের জন্য ৩টি প্রবেশ পথ রয়েছে। মসজিদের পূবর্ দেয়ালের সম্মুখ ভাগ উপর ও নিচ এই দুই ভাগে বিভক্ত। এর প্রবেশ পথগুলোর নিকটবতীর্ অংশ প্যানেলের সুন্দর অলঙ্করণ দ্বারা সুশোভিত। মসজিদের সামনের প্রাচীরের কানির্শ ও প্যারাপেট সুলতানী আমলের মসজিদের মতো বঁাকানোভাবে নিমির্ত এবং প্যারাপেটের উপরের অংশ ব্রাটলম্যান্ট দ্বারা সুশোভিত। এর কিছু কিছু অংশ পুনঃসংস্কার করা হয়েছে। তাতে মসজিদের গঠন শৈলীতে সুলতানী ও মুগল আমলের স্থাপত্য শিল্পের সুষম সমন্বয় ঘটেছে। এক একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত আটিয়া মসজিদের আয়তন ৫৯দ্ধ৪০ মসজিদটির পূবর্ পাশে একটি মুক্ত মাঠ রয়েছে। এর উত্তর-পূবর্ কোণে একটি বঁাধানো সমাধি আছে। এই সমাধিটির তলদেশে যাওয়ার জন্য একটি সুড়ঙ্গ ও সিঁড়ি পথ রয়েছে। আটিয়া মসজিদের উত্তর-পূবর্ দিকে একজন সাধু পুরুষের মাজার রয়েছে। তিনি স¤্রাট আকবরের শাসনামলে ইসলাম প্রচারের জন্য এ দেশে আসেন। কথিত আছে, তিনি যখন টাঙ্গাইলের আটিয়া আগমন করেন তাকে দেখে এবং তার আচরণে মুগ্ধ হয়ে সন্তোষের তৎকালীন জমিদার ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তিনি এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী নাম ধারণ করেন। তার সঙ্গে তার মেয়ে ও ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পিতার মৃত্যুর পর সে আবার স্বধমের্ ফিরে যান। এই সাধু পুরুষ হযরত শাহান শাহ আদম কাশ্মিরীকে (রঃ) ঘিরে এলাকায় অনেক জনশ্রæতি রয়েছে। তিনি শাহ বাবা আদম কাশ্মিরী নামে খ্যাত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে