শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সঁ্যাতসেঁতে মুক্ত থাক শখের ঘর

তানিয়া তন্বী
  ৩০ জুন ২০১৯, ০০:০০

শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। এই রোদ তো এই ঝুমঝুম বৃষ্টি। ঘরের ভেতরেও এ সময় একটু বৃষ্টি বৃষ্টি ভাব লেগে থাকে। প্রকৃতির এমন পরিস্থিতিতে যেমন শারীরিক ও মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে তেমনি অন্দরের ভারসাম্য রক্ষা করাও বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এমনিতেই এবারের এই ঘন বৃষ্টির পর যখন কটকটে প্রখর রোদ উঠেছিল তখন সবার মনে একটাই আতঙ্ক ছিল বাড়ি ভিজে পানি পানি বা ঘর্মাক্ত হয়ে যাওয়া। তবে এতে ভয়ের বা ঘাবড়ে যাওয়ার কিছুই নেই।

এটা প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কয়েক দিনের অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বাতাসে জলীয় কণার পরিমাণ বেড়ে যায়। বাইরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ও ঘরের ভিতরে তাপ কম থাকায় জলীয় কণাগুলো পানিতে রূপান্তরিত হয়ে যায়।

এ কারণেই ঘরের মেঝে, দেয়াল, ছাদ, আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র সব স্থানে ঘাম ঘাম ভাব দেখা দেয়। অনেক জায়গায় পানি গড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে মেঝে, দেয়াল, ছাদ, আসবাবপত্র, তৈজসপত্র কোনো কিছুই ঘামেনি। মূলত এগুলো জলীয় কণাই হলো রূপান্তরিত পানি। তাই পরে এমন কোনো ঘটনার সম্মুখীন হলে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। সঁ্যাতসেঁতে আর গুমোট ভাব, সঙ্গে সোঁদা গন্ধ, যা চার দেয়ালের মধ্যে বাড়িয়ে দেয় বাড়তি কিছু ঝামেলা। যেমন- বর্ষাকালে দীর্ঘ বৃষ্টি হলে আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড়ে ভেজা ও সঁ্যাতসেঁতে ভাব চলে আসে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঘরবাড়ির সঁ্যাতসেঁতেভাব কাটাতে অনেকটাই সাহায্য করে। তাই ঘরের ভেতর যথেষ্ট আলো-বাতাসের চলাচল নিশ্চিত করুন। বৃষ্টি শেষে দরজা ও জানালা খুলে দিন। রোদ উঠলে জানালার পর্দা সরিয়ে ঘরে রোদ আসার ব্যবস্থা করুন। দেয়ালের রং পুরনো হয়ে গেলে দেয়াল ড্যাম্প হয়ে বৃষ্টির পানি ঘরের ভেতরের দেয়াল পর্যন্ত চলে আসতে পারে। সম্ভব হলে বর্ষার আগে বাড়ির বাইরের দেয়ালে পানি নিরোধক রং লাগিয়ে নিন। সেটা সম্ভব না হলে ভেতরের দেয়ালে পস্নাস্টিকের ওয়াল পেপার লাগিয়ে নিলেও খানিকটা উপকার মিলবে। এ ছাড়া এই মৌসুমে দেয়াল থেকে কিছুটা দূরত্বে কাঠের ফার্নিচার রাখুন। ফার্নিচার ভালো থাকবে। দেয়াল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে আসবাব সাজান। যদি দেয়াল ঘেঁষে রাখতেই হয়, তাহলে আসবাবের পেছনে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখুন। এ সময় কাঠের আসবাবে পোকার আক্রমণ বেশি হয়। আলমারিতে আপনি ন্যাপথলিন রেখে দিন, সব ধরনের আর্দ্রতা থেকে দূরে রাখে এটি। কাপড়কেও ঠিক রাখে। নিমপাতা একটি খুব জরুরি এবং প্রয়োজনীয় বস্তু। বর্ষায় পোকামাকড়ের হাত থেকে আসবাব রক্ষায় এর বিকল্প নেই। এ ছাড়া পোকা দূর করতে কাঠমিস্ত্রির পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহার করুন। ন্যাপথলিন, স্পিরিট ও নিমের তেল পোকামাকড় দূর করতে বেশ উপকারী।

যাদের বাসায় কাঠের মেঝে, তাদের বিশেষ নজরদারি রাখা ছাড়া উপায় নেই। বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন আছে এই সঁ্যাতসেঁতে মৌসুমে। খেয়াল রাখতে হবে, কাঠের মেঝে আর্দ্রতামুক্ত কিনা। এগুলো রক্ষার জন্য ওয়াক্স একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। বাড়ির বাইরের পরিবেশ যখন কর্দমাক্ত বা বৃষ্টিস্নাত, তখন ঘরটা অবশ্যই শুকনো হওয়া উচিত। আর এটা সম্ভব হলে এই মৌসুমে অনেক সমস্যা থেকেই মুক্ত থাকা যাবে। ঘর শুকনো রাখতে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। দেয়ালে ঝুলানো কার্পেট নিয়মিতভাবে ধুলামুক্ত রাখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে কার্পেট ক্লিনার ব্যবহার করুন। মেঝের কার্পেট সম্ভব হলে বর্ষা মৌসুমে তুলে রাখুন। পলিথিন দিয়ে কার্পেট ভালো করে মুড়ে রাখলে পানি বা আর্দ্রতা কিংবা পোকামাকড় থেকেও সুরক্ষিত থাকবে।

বর্ষাকালে শখের ঘরটির জন্য দরকার হয় কিছু বিশেষ যত্ন। কিন্তু বর্ষাকালে কীভাবে ঘরের যত্ন নিতে হবে, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তার মধ্যে থাকেন। তবে ছোটখাটো এসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখলেই এ সময় বাড়তি সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<55846 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1