শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোদ বৃষ্টির দিনে ঝলমলে চুল

বৃষ্টির পানি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ঠিক নয়। তার ওপর এই সঁ্যাতসেঁতে গুমোট আবহাওয়ায় মাথার ঘাম সৃষ্টি করে আরও একটা জটিল সমস্যা। চুল ঠিকমতো না শুকানোর কারণে চুলে নানা জীবাণু দেখা দিতে পারে। এসব জীবাণু চুলের গোড়ায় ইনফেকশন, খুশকি, চুলপড়াসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। তা ছাড়া বর্ষার এই সময়টায় কখনো অতিরিক্ত আর্দ্রতায় কখনো বা বৃষ্টিতে বারবার ভিজে চুল হারায় প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা। তাই নিয়মিত শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, অয়েল ম্যাসাজ ছাড়া চুলের চাই বিশেষ যত্ন।
নতুনধারা
  ১৪ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

বর্ষা কে না ভালোবাসে। ঝুম ঝুম বর্ষার জলে ভিজতেই বা কে না ভালোবাসে! তবে একটু কম ভেজাই ভালো। কেননা, বর্তমান দূষণের দিনে বৃষ্টির পানি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ঠিক নয়। তার ওপর এই সঁ্যাতসেঁতে গুমোট আবহাওয়ায় মাথার ঘাম সৃষ্টি করে আরও একটা জটিল সমস্যা। চুল ঠিকমতো না শুকানোর কারণে চুলে নানা জীবাণু দেখা দিতে পারে। এসব জীবাণু চুলের গোড়ায় ইনফেকশন, খুশকি, চুলপড়াসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। তা ছাড়া বর্ষার এই সময়টায় কখনো অতিরিক্ত আর্দ্রতায় কখনো বা বৃষ্টিতে বারবার ভিজে চুল হারায় প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা। তাই নিয়মিত শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, অয়েল ম্যাসাজ ছাড়া চুলের চাই বিশেষ যত্ন।

এই সময় প্রধান সমস্যা হলো চুল পড়ে যাওয়া, যা নিয়ে অল্প-বিস্তর প্রত্যেকেই চিন্তিত। একে তো আবহাওয়ার জন্য চুল শুকানো দায়। তার ওপর ড্রায়ার ব্যবহার করে শুকাতে হলে, চুলের আর্দ্রতা হারিয়ে প্রাপ্তি শুষ্কতা। তাই কীভাবে করবেন সাধের চুলের যত্ন। জেনে নিন টিপস।

এ সময় অনেকেই চুলের প্রতি অযত্ন অবহেলা করে মাথার স্কাল্পে বাঁধিয়ে বসেন নানা সমস্যা। অনেকেই আবার অতিরিক্ত যত্নের খাতিরে বাজারের হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে চুলের নানা সমস্যায় ভোগেন। বর্ষার সময় চেষ্টা করুন যথাসম্ভব কম হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে। অর্থাৎ হালকা কোনো শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করলে ভালো, আর হেয়ার স্প্রে না লাগানোই ভালো। রঙিন চুলের অধিকারীরা বর্ষাকালে হিট একদমই দেবেন না

ডিম ও টকদই

ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। আর টকদইয়ে ল্যালটিক এসিড। ডিম চুলে প্রোটিন প্যাক হিসেবে দারুণ কার্যকর। ডিম চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়, ত্বকের খুশকি দূর করে। চুলপড়া রোধ করে। অন্যদিকে টকদই চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে। আগা ফাটা রোধ করে। যাদের চুল রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে এবং চুলপড়ার প্রবণতা আছে তারা চুলে এই প্রোটিন প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। এই প্যাক তৈরি করতে প্রয়োজন ১টি ডিম ও ৪ টেবিল চামচ টকদই।

দুধ ও মধু

দুধ ও মধুর তৈরি প্যাকটি আপনার চুলের জন্য দারুণ কার্যকর। এটি প্রাকৃতিকভাবে চুল পরিষ্কার করে ও ত্বকে পুষ্টি জোগায়। এ প্যাকটি বাড়িতে তৈরি করা খুব সহজ। বর্ষাকালের জন্য একটি আদর্শ চুলের প্যাক এটি। তাই চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী নিয়ে নিন পরিমাণ মতো দুধ ও কয়েক ফোঁটা মধু। ভালোভাবে মিশিয়ে পুরো চুলে ও স্কাল্পে লাগিয়ে নিন। ঘণ্টাখানেক রেখে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

হেনা প্যাক

মেহেদির তৈরি চুলের প্যাকটি ও বর্ষাকালে দারুণ কার্যকর একটি প্যাক। এটি ব্যবহারে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে। চুল ভেঙে যাওয়া ও চুলপড়া রোধ করে। অকালপক্বতা দূর করে। চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে। মেহেদি ভালোভাবে বেটে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মেহেদি দেয়ার আগে অবশ্যই চুলে তেল দিয়ে নেবেন এতে চুল আরও বেশি মসৃণ হয় ও জট হয় না। ৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু করে নিন।

অলিভ অয়েল, মধু ও কলা

অলিভ অয়েল ও কলার তৈরি চুলের প্যাক চুলের আর্দ্রতা ঠিক রাখে। অলিভ অয়েল চুলের গোঁড়া মজবুত করে ও খুশকির প্রবণতা কমিয়ে দেয়। চুলের জন্য এই তেল খুব উপযোগী। কলা চুলকে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। ১টি পাকা সাগর কলা, ২ চামচ অলিভ অয়েল ও ২ চামচ মধুর তৈরি এই প্যাকটি প্রাকৃতিকভাবে চুলে কন্ডিশন করে।

নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরা

শুধু বর্ষাকাল নয়- চুলের জন্য এই প্যাকটি সব ঋতুতে কার্যকর। নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরা চুলপড়া রোধ করে, চুল ঝরঝরে, উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। চুলের কোঁকড়ানো ভাব কমিয়ে দেয়। এই প্যাকটি ব্যবহারের জন্য আগে চুলে তেল দিয়ে নিতে হবে। সারারাত অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে রেখে সকালে উঠে গোসল করে নিতে হবে। সারারাত রাখতে না চাইলে ১-২ ঘণ্টা চুলে রেখে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন। এই চুলের প্যাকটি একবার ব্যবহারে চুলের পরিবর্তন দেখে আপনি আপনার চুলের প্রেমে পড়ে যাবেন।

\হনিমপাতা ও লেবু

বর্ষাকালে চুলে খুশকি প্রবণতা বেড়ে যায়। মাথার ত্বকে ফাঙ্গাস ও চুলকানি হয়। যদি আপনার চুলে খুশকি বা উকুন প্রবণতা খুব বেশি থাকে তাহলে নিমপাতা ও লেবু মিশ্রিত এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। নিমপাতা ত্বকের ফাঙ্গাস দূর করে, উকুন দূর করে ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। লেবু চুলের গোঁড়ায় পুষ্টি জোগায় ও খুশকি দূর করে। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী পরিমাণমতো নিমপাতা বাটা ও ৪ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে তৈরি করবেন এই প্যাকটি।

আমলকী ও পেঁয়াজের রস

আমলকী ও পেঁয়াজের রস চুলের গোঁড়া খুব মজবুত করে, চুলপড়া কমায়। নতুন চুল গজাতে দারুণ কার্যকর এই প্যাক। আমলকী ও পেঁয়াজের রস তৈরি করে ছেঁকে নিতে হবে। ৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

মেহেদি ও টকদই

মেহেদি ও টকদই মিশ্রিত এই প্যাক চুলের জন্য দারুণ উপকারী। চুলের প্রোটিন প্যাক হিসেবে কাজ করে এটি ব্যবহারে চুলে পুষ্টি জোগায় ও চুলকে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী পরিমাণ মতো মেহেদি ও টকদই মিশ্রিত করে চুলে লাগাতে হবে। ৩০ মিনিট রেখে চুলে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।

নারিকেল তেল ও ভিটামিন ই তেল ব্যবহার : চার ভাগ নারিকেল তেল এবং এক ভাগ ভিটামিন ই তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি ভালো করে গরম করে নিন তারপরে মাথার স্কাল্পে মালিশ করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে কয়েক মিনিট ধরে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। আপনার চুল অনেক বেশি মজবুত হবে এবং চুল কম উঠবে?

চুলে তেল দেয়া জরুরি তবে চুলে তেল দিয়ে তা যেন চিটচিটে হয়ে দীর্ঘক্ষণ না থাকে সেদিকেও নজর দেবেন। কারণ তেল চিটচিটে থাকলে মাথার ত্বকে খুশকির উপদ্রব বাড়ে। দ্রম্নত এবং ভালো করে শ্যাম্পু করে চিটচিটে ভাব দূর করে নেবেন। শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার বেছে নিন অনেক বুঝে-শুনে। অ্যান্টিড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু অনেক ক্ষতিকর কেমিক্যাল যুক্ত হয়ে থাকে। তাই যেটা আপনার চুলে সু্যট করবে না এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। ভালো কোনো শ্যাম্পু বেছে নিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58029 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1