শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিটোল পায়ে রিনিঝিনি নূপুর

হাঁটতে গেলে আওয়াজ করে এমন গহনা হওয়ায় অনেক বাঙালি বাড়িতে একসময় নূপুর ছিল নিষিদ্ধ। একটা সময় ছিল যখন নূপুরের জায়গা ছিল শুধু নৃত্যশালায়। ধীরে ধীরে নূপুর উঠে এসেছে বাঙালির ঘরে ঘরে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে মধ্যবয়সি সবার পায়ে এখন নূপুর সাজে। হাল সময়ে নূপুরের জনপ্রিয়তা বুঝি একটু বেশিই বেড়ে গেছে...
নতুনধারা
  ০৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

বসনের ঐশ্বর্য যেমনই হোক সঙ্গে মানানসই অলঙ্কার যেন নারীদের অহঙ্কারের অংশ। রূপসজ্জায় যুগে যুগে তাই গহনা ছিল নারীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। শরীরের নানা অংশে নানা আকৃতির গহনার প্রচলন আছে আমাদের দেশে। এসব গহনা প্রতিটি নিজের জায়গা থেকে স্বকীয়। কিন্তু সারা গায়ে ভর্তি গহনার মধ্যে একজোড়া গহনা থাকে যা কিনা বেজে চলে রিনঝিন সুরে। সেটি নূপুর। নিটোল পায়ে একজোড়া নূপুর রমণীর পায়ে রিনঝিন সুরে মাতিয়ে তুলতে পারে জগৎ সংসার। রমণীর পায়ের নূপুর কখনো সুর তোলে তার মনের আনন্দ কথার। আবার বিষাদের সময়ও নূপুর বেজে চলে বেদনার সুরে। রবীন্দ্রনাথের গল্প-উপন্যাস থেকে শুরু করে এ যুগের আধুনিক মেয়ে সবারই পদযুগল সাজায় নূপুর।

হাঁটতে গেলে আওয়াজ করে এমন গহনা হওয়ায় অনেক বাঙালি বাড়িতে একসময় নূপুর ছিল নিষিদ্ধ। একটা সময় ছিল যখন নূপুরের জায়গা ছিল শুধু নৃত্যশালায়। ধীরে ধীরে নূপুর উঠে এসেছে বাঙালির ঘরে ঘরে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে মধ্যবয়সি সবার পায়ে এখন নূপুর সাজে। হাল সময়ে নূপুরের জনপ্রিয়তা বুঝি একটু বেশিই বেড়ে গেছে। এর কারণ হলো পরিধানের পোশাকে কিছুটা পরিবর্তন। মেয়েদের সালোয়ার, প্যান্ট, জিন্স সবকিছুই এখন দৈর্ঘ্যে কিছুটা সংকুচিত। ফ্যাশনের এ নতুন ধারায় গা ভাসিয়েছেন সবাই। জিন্সটাকে গুটিয়ে উপরে তুলে রাখা, সালোয়ার একটু খাটো করে তৈরি করা, আর থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পরা এ সবকিছুই এখন ফ্যাশনের অংশ। আর যেখানে পায়ের অনেকটা অংশই উন্মুক্ত সেখানে খালি পা সাজাতে একচিলতে নূপুর না হলেই নয়।

নূপুরের ধরন

একসময় নূপুর দুই পায়ে একই ডিজাইনে জোড়া বেঁধে পরার রেওয়াজ থাকলেও হাল ফ্যাশনে নূপুরের আচরণটা কিন্তু একটু ভিন্ন। এখন এক পায়ে পাঁচ-ছয়টা নূপুর ঝোলানোও স্টাইলের পর্যায়ে পড়ে। নূপুরের এক পায়ে উঠে আসার স্টাইলটা ঢাকায় পুরনো। চিকন, সূক্ষ্ণ কাজের এসব নূপুর অনেকেই দু-তিনটা পেঁচিয়ে পায়ে জড়ান। তৈরি উপকরণের হিসেবে নূপুর বিভিন্ন ধরনের হয়। স্বর্ণের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় সোনার নূপুর এখন অনেকটাই উপন্যাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে। আর সেখানে জায়গা করে নিয়েছে রুপা, ইমিটেশনসহ আরও নানা উপকরণের নূপুর। ঢাকায় স্বর্ণের নূপুরের তুলনায় ইমিটেশনের নূপুরই বেশি জনপ্রিয়। খুব জমকালো নূপুরের ডিজাইনের প্রচলন এখন আর নেই বললেই চলে। এখন নূপুরের স্টাইলটা খুব হালকা ধরনের। সঙ্গে থাকতে পারে পুঁতি, স্টোন, কৃত্রিম মুক্তা আর ইমিটেশনের নানান ইলাস্ট্রেশন। এ ছাড়া স্বর্ণের নূপুরগুলোও ডিজাইনে অনেকটাই হালকা হয়ে এসেছে। কিছু পুঁতি আর মিনার কাজ করা নূপুর মানিয়ে যাবে যে কোনো পোশাকের সঙ্গে।

কোথায় পাবেন নূপুর

যদি স্বর্ণ কিংবা রুপার নূপুর কিনতে হয় তাহলে যেতে হবে সোনারুর দোকানে। ঢাকার চাঁদনী চক, মৌচাক, তাঁতিবাজার, বায়তুল মোকাররম আর বড় সব শপিং মলেই আছে কম-বেশি স্বর্ণের দোকান। যেখানে স্বর্ণ বা রুপার নূপুর কিনতে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ক্যাটালগ দেখে কিংবা নিজের ডিজাইন অনুযায়ী অর্ডার করেও তৈরি করতে পারেন নূপুর। সে জন্য যেতে পারেন বায়তুল মোকাররম কিংবা তাঁতিবাজার এলাকায়। যদি ইমিটেশনের নূপুর কিনতে হয় যেতে পারেন ঢাকার যে কোনো শপিং মলে। সব শপিং মলই কম-বেশি ইমিটেশনের গহনার দোকান থাকে। তবে যারা নূপুরে বিশেষ ধরনের স্টোন বা ডিজাইন ব্যবহার করতে চান তারা যেতে পারেন বসুন্ধরা সিটির নিচ তলায় ইরানি ইমপোরিয়ামে। এ ছাড়া ঢাকার অন্যতম প্রসিদ্ধ ইমিটেশন গহনার দোকান জেমস্‌ গ্যালারির প্রায় সব শাখায়ই পাওয়া যাবে নানান আকৃতি ও উপকরণের নূপুর। ইমিটেশন আর স্বর্ণের মাঝামাঝিও এক ধরনের নূপুর বাজারে এখন জনপ্রিয়। এটি হচ্ছে রুপার নূপুরের ওপর স্বর্ণের ইলেকট্রোপ্লেটিং পদ্ধতিতে প্রলেপ দেয়া। এ ধরনের গহনার খুব সহজে রং নষ্ট হয় না, পাশাপাশি দামও তুলনামূলকভাবে স্বর্ণের গহনা থেকে অনেকাংশেই কম। নূপুর যেমনই কিনুন না কেন খেয়াল রাখবেন খুব বিরক্তিকর শব্দ তৈরি করে এমন নূপুর পায়ে না ঝোলানোই ভালো। পাশাপাশি কেনার সময় দেখে কিনুন আপনার পায়ে যেন নূপুরটি আঁটসাঁট হয়ে অস্বস্তিকর ভাব তৈরি না করে।

\হ রঙ বেরঙ ডেস্ক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<82938 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1