মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নানান রঙে চুলের সাজ

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যত ট্রেন্ড বদলেছে হেয়ার ট্রিটমেন্টও এসেছে বৈচিত্র্য। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের কাছে হেয়ার কালার বেশ জনপ্রিয় একটি নাম। এটির সামান্য ব্যবহারেই বদলে যায় পুরো লুক। শুধু মেয়েরা নয় ছেলেদের মধ্যেও আজকাল হেয়ার কালার করার স্টাইলটা প্রাধান্য পাচ্ছে। তাই কয়েকটি ব্যাপার মাথায় রাখলে আপনিও বিনা ঝামেলায় রাঙিয়ে নিতে পারবেন আপনার সুন্দর চুল...
সোরিয়া রওনাক
  ১২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আপনার চুল স্ট্রেইট কিংবা কোঁকড়ানো যেমনই হোক না কেন হেয়ার কালারের মাধ্যমে খুব অল্পসময়েই আপনি আপনার লুক চেঞ্জ করতে পারবেন। তবে মাথায় রাখতে হবে তা যেন আপনার বয়স, গায়ের রং পোশাক এবং ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানিয়ে যায়।

আগেকার দিনে পাকা চুল কালার করতে মেহেদি ব্যবহার করা হতো- যেটি কিনা একই সঙ্গে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক কালার এবং হেয়ার ট্রিটমেন্ট। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যত ট্রেন্ড বদলেছে হেয়ার ট্রিটমেন্টও এসেছে বৈচিত্র্য। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের কাছে হেয়ার কালার বেশ জনপ্রিয় একটি নাম। এটির সামান্য ব্যবহারেই বদলে যায় পুরো লুক। শুধু মেয়েরা নয় ছেলেদের মধ্যেও আজকাল হেয়ার কালার করার স্টাইলটা প্রাধান্য পাচ্ছে। তাই কয়েকটি ব্যাপার মাথায় রাখলে আপনিও বিনা ঝামেলায় রাঙিয়ে নিতে পারবেন আপনার সুন্দর চুল।

যেমন চাই বাহারি রং

চুলের কালার আসলে পুরো লুকটাই বদলে দেয়। অনেকে চুল পুরোটা কালার করেন। অনেকে পুরো কালার না করে কিছুটা স্টিক করে কালার করেন। সে ক্ষেত্রে অমেব্র মেহগনি কপার এই কালারগুলো হাইলাইট কিংবা লো লাইটের সঙ্গে বেশ ভালো যায়। এ ছাড়া বস্নন্ড বা সোনালি, বারগান্ডি, স্ট্রবেরি বস্নন্ড, রেডিশ বাদামি, জেট বস্ন্যাক ইত্যাদি হেয়ার কালারের শেড হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। ইদানীং তরুণ প্রজন্ম একই ধরনের কালার শেড ব্যবহার না করে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন শেড স্টিকের মতো করে ব্যবহার করছেন। এ ক্ষেত্রে বেগুনি, নীল, ডার্ক অবার্ন, চেস্টনাট, হালকা সবুজ বা নীলচে সবুজ ইত্যাদি কালার আধুনিক ট্রেন্ডের সঙ্গে মানানসই।

তবে চুল যেমনই কালার করুন না কেন তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হেয়ার কাটটাও থাকা চাই। চুল লম্বা হলে নিচের দিকে চুলগুলো হালকা রেডিশ বা বাদামি অথবা বস্নন্ড কালার করতে পারেন। আর অবশ্যই চুলের কালার করানোর আগে ফাটা চুল থাকলে তা ট্রিম করে নিন। আপনি কোন ধরনের পোশাক পরেন তার সঙ্গে মিলিয়ে চুলে কালার করুন- দেখবেন সব ধরনের পার্টিতে মানিয়ে যাবে আপনার নতুন হেয়ার সেটআপ।

মিলিয়ে নিন গায়ের রং

চুল রং করার আগে অবশ্যই গায়ের রং দেখে নেয়া উচিত। যদি রং একটু চাপা হয় তাহলে ডার্ক রং পছন্দ করা উচিত। ফর্সা রং যাদের তারা যে কোনো রং পছন্দ করতে পারেন। কিন্তু ফ্যাকাসে রং যাদের তারা কালো বা গাঢ় রং এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে গায়ের রং আরও ফ্যাকাসে লাগবে।

লাল রঙের শেড যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু কিছু জিনিস মাথায় রাখুন যেমন যাদের গোলাপি ফর্সা গায়ের রং তারা একটু গাঢ় লাল বাছুন। আবার ডার্ক রেড ব্রাউন একটু চাপা রঙের মহিলাদের ওপর ভালো লাগবে। আবার যাদের ফ্যাকাসে গায়ের রং তারা জিঞ্জার রেড ব্যবহার করুন। আবার যাদের গায়ের রং কালো তারা উজ্জ্বল লাল বেছে নিন।

ঘরে বসেই রং

ঘরোয়াভাবে রং করতে চাইলে বেশ কটা ব্যাপার মাথায় রাখা জরুরি। রং করার আগে পুরনো কোনো টি-শার্ট অথবা অন্য কোনো পুরনো পোশাক পরে নিন। কেননা এতে রং লাগতে পারে এবং দ্বিতীয়বার হয়তো পোশাকটি আর পরতে নাও পারেন। আপনার কপালে, গালে, পেছনে হেয়ার লাইনের নিচে রং লাগতে পারে তাই ভ্যাসলিন বা লিপ বাম মেখে নিন। একে বলা হয় কোটিং। এর মাধ্যমে রং লাগা প্রতিরোধ করা যায়।

সাধারণত ডাই অনেক ঘন থাকে। এটিকে আপনার পছন্দের রঙে পরিণত করতে হলে লঘু করতে হবে। এ জন্য ডাইটিকে ডেভেলপারের সঙ্গে মেশাতে হবে। যদি গাঢ় রং করতে চান তাহলে ১০% ডেভেলপার মিশিয়ে নিন। হালকা করতে চাইলে ২০%।

রং মেশানো হয়ে গেলে চিরুনি দিয়ে আপনার চুলগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ক্লিপ দিয়ে আলাদা করে ফেলুন। এবার ব্রাশের মাধ্যমে একটু একটু করে রং লাগাতে থাকুন। গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সাবধানে লাগাতে থাকুন যেন বেশি গড়িয়ে না পড়ে। হাতে রং লেগে যাওয়া ঠেকাতে গস্নাভস পরে নেবেন। মার্কেটে আপনি আপনার পছন্দের ব্র্যান্ড খুঁজে নিতে পারেন। বর্তমানে বেশকিছু জনপ্রিয় ব্যান্ড হলো- আপনার চুল কালার করার ক্ষেত্রে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্র্যান্ড বেছে নিন। কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলো- রেভলন, গার্নিয়ার, স্ট্রিক্স, ওয়েলা কলেস্টিন্ট, লরিয়াল, ম্যাট্রিক্স, কালার মেট, ডক্টর জেইনস ইত্যাদি।

যত্ন নিন চুলের

চুল কালার করানোর আগে থেকেই চুল যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর এবং ময়েশ্চারাইজড রাখার চেষ্টা করুন এবং কমপক্ষে ৩-৪ সপ্তাহ আগে থেকে চুলে কোনো কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করাবেন না।

কালার করা চুলে সপ্তাহে অন্তত একবার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। যতটা সম্ভব হেয়ার ড্রায়ার, কার্লার বা চুল আয়রন করা থেকে বিরত থাকুন। এসব জিনিস চুলকে ভেতর থেকে ড্যামেজ করে এবং ধীরে ধীরে চুল রুক্ষ ও মলিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে এসব হেয়ার স্টাইলার ব্যবহার করা।

চুল নরম ও উজ্জ্বল রাখতে লিভ ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এই কন্ডিশনার চুল থেকে ধুয়ে ফেলতে হয় না এবং এটি চুল নরম ও শক্ত করতে সাহায্য করে। এই কন্ডিশনার কেনার আগে এর উপাদানগুলোয় একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিন যে তাতে সিলিকন, সালফেট বা সালফার আছে কিনা কারণ এই উপাদানগুলো চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর।

কালারড চুলের জন্য ঘরোয়া প্যাক

চুলের এক্সট্রা সৌন্দর্যের জন্য চাই এক্সট্রা কেয়ার। কালার করা চুলের সৌন্দর্য ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুইবার হেয়ার মাস্ক লাগান। এর ফলে চুল প্রয়োজনীয় পরিমাণ ময়েশ্চার পাবে এবং চুল ফাটা বা রুক্ষতা দূর হয়ে চুল সুন্দর থাকবে।

কালারড চুলের জন্য নিচের ঘরোয়া প্যাকগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে যা আপনার চুলকে করবে আরও প্রাণবন্ত আর ঝলমলে।

প্যাক-১ : অলিভ অয়েল ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সামান্য কুসুম গরম করে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর ভালো মানের প্রোটিনযুক্ত কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি চুল মজবুত রাখতে সাহায্য করবে।

প্যাক-২ : দুটি কলা বেস্নন্ড করুন এবং এর মধ্যে অলিভ অয়েল, মধু ও পরিমাণ মতো টকদই দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ও ওপরে লাগান। আধা শুকনো অবস্থা হয়ে এলে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এই প্যাকটি কালারড চুলের জন্য দারুণ উপকারী।

দীর্ঘস্থায়ী কালারের কয়েকটি টিপস

চুলের রং হালকা হয়ে যায় পানির ব্যবহারের কারণে। কিন্তু চুল তো ধুতেই হয়! তাই মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন, এটা ধুতে কম পানি লাগে। চুলের প্রাকৃতিক শেডের কাছাকাছি হেয়ার কালার করাই ভালো। একেবারে বিপরীত শেডের কালার করলে রং দীর্ঘস্থায়ী হয় না। চুলে শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার লাগানোর পরে বেশিক্ষণ ঝরনা বা রানিং ওয়াটারের তলায় মাথা রাখবেন না। এতে রং অনেকটাই হালকা হয়ে যায়। সবচেয়ে জরুরি যে বিষয় গরম পানিতে চুলের রং তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তাই চুল ধুতে গরম পানি ব্যবহার না করাই ভালো। আর অবশ্যই কালার প্রটেকটিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এটা চুল নরমও রাখে আবার রংও দীর্ঘস্থায়ী করে।

উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে চুল কালার করার পরও আপনি থাকবেন নির্ঝঞ্ঝাটে। তবে বছরে দুইবারের বেশি কালার না করাই ভালো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<83909 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1