বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হাইড্রোজেন জ্বালানি হিসেবে উপযোগী

নতুনধারা
  ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

বিজ্ঞানীরা শস্যের পরিত্যক্ত অংশ থেকে ওই হাইড্রোজেন জ্বালানি উৎপাদন করবেন। ফলে ভবিষ্যতে হয়তো একসময় রাস্তার আশপাশে পেট্রলপাম্পের জায়গা দখল করে নেবে জৈব জ্বালানি উৎপাদন কারখানাগুলো। ভাজিির্নয়া টেকের বিজ্ঞানীদের ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

হাইড্রোজেন জ্বালানি হিসেবে যেমন ব্যবহারের উপযোগী, তেমনি গ্রিনহাউস গ্যাস নিগর্মন কমানোর ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে। তবে কম দামে এবং কাবর্ননিরপেক্ষ উপায়ে হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য নতুন প্রযুক্তি প্রয়োজন। ভাজিির্নয়া টেকের গবেষক পাসির্ভ্যাল ঝ্যাং বলেন, তাদের উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নিভর্রশীলতা কমতে পারে। আর হাইড্রোজেনই হবে ভবিষ্যতের সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ জৈব জ্বালানি।

ঝ্যাং ও তার সহযোগীরা নতুন ওই পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিমাণে হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণার জন্য ইতোমধ্যে অথর্ বরাদ্দ পেয়েছেন। তাদের ওই পদ্ধতিতে ভুট্টাজাতীয় শস্যের বজর্্য হিসেবে জমে থাকা চিনির শতভাগই হাইড্রোজেন গ্যাসে রূপান্তরিত করা সম্ভব। এতে বায়ুমÐলে কোনো কাবর্ন ডাইঅক্সাইড নিগর্মন হবে না। আর এ পদ্ধতিতে ভুট্টার খোসা এবং শঁাসেরও সদ্ব্যবহার হবে। চিনির বড় উৎস হিসেবে পরিচিত জাইলোজ থেকে বিপুল পরিমাণ হাইড্রোজেন উৎপাদনের বিষয়টি আগে কেবল তাত্তি¡ক পযাের্য়ই সীমাবদ্ধ ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাজিির্নয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এবার জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন ব্যবহারের একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। মোটরগাড়িতে এ গ্যাস ব্যবহার করাটা যেমন সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হবে, তেমনি গাড়ির গতিও হবে তুলনামূলক বেশি।

ভাজিির্নয়া টেকের বিজ্ঞানীদের প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে হাইড্রোজেন উৎপাদনে কোনো গ্রিনহাউস গ্যাস নিগর্মন হবে না। পাশাপাশি কোনো ভারী ধাতব পদাথর্ ব্যবহারেরও প্রয়োজন নেই। মূলত প্রক্রিয়াজাত চিনি থেকেই ওই হাইড্রোজেন তৈরি করা হয়। ঝ্যাং বলেন, স্থানীয় জৈব উপাদান থেকে হাইড্রোজেন উৎপাদনের ব্যাপারটি অথৈর্নতিকভাবেও অনেক লাভজনক হতে পারে। আর জৈব জ্বালানি ব্যবহারের এ পদ্ধতি প্রচলিত হলে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর চাপ কমবে।

নতুন ওই পদ্ধতিতে উৎপাদিত হাইড্রোজেন হবে অত্যন্ত বিশুদ্ধ, যা যানবাহনের জ্বালানি কোষে ব্যবহারের বিশেষ উপযোগী। পদ্ধতিটি জটিল হলেও এর মাধ্যমে উৎপাদিত জ্বালানির কাযর্কারিতা শতভাগ। জাইলোজ বা চিনিনিভর্র অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত জৈব জ্বালানি (যেমন ইথানল ও বিউটানল) এতটা কাযর্কারিতা দেখাতে পারে না। ঝ্যাং আগেও হাইড্রোজেন উৎপাদনের একটি পদ্ধতি বের করেছিলেন, কিন্তু তা প্রয়োগ করে বেশি পরিমাণে উৎপাদনে যাওয়াটা অনেক বেশি ব্যয়বহুল ছিল।

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল জ্বালানির ওপর নিভর্রশীলতা কমাতে দীঘির্দন ধরে বিকল্প জ্বালানির অনুসন্ধান চলছে। হাইড্রোজেন ব্যবহারের ধারণাটি বেশ পুরনো। মাকির্ন জ্বালানি দপ্তর স্বীকার করছে, বিশুদ্ধ ও পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন জ্বালানির ব্যবহার শুরু হলে জীবনযাত্রার ধরনে নাটকীয় পরিবতর্ন আসবে।

বিকল্প জ্বালানিচালিত মোটরগাড়ির ধারণাটি এখনো অনেকের কাছে আজগুবি মনে হতে পারে। কিন্তু গবেষকদের তৎপরতায় অজির্ত অগ্রগতির ফলে সে রকম ভাবনা থেকে সরে আসার সময় হয়েছে। ‘নথর্ আমেরিকান অটো শো’ শীষর্ক মোটরগাড়ি প্রদশর্নীতে চলতি বছর হাইড্রোজেনচালিত গাড়িও ঠঁাই পেয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের আরো দ্রæত এগিয়ে যেতে হবে। বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বাজার এত দ্রæত বিস্তৃত হচ্ছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে জ্বালানি ব্যয় ১ হাজার ৩০০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড কমে যাবেÑ নতুন এক গবেষণায় এমনই তথ্য মিলেছে। পশ্চিমা বিশ্বের পাশাপাশি চীনও থেমে নেই।

সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট ও রাশিয়া টুডে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<17177 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1