সৌরশক্তিকে আরো কাযর্কর করতে পারলে তা প্রকৃত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। ফলে নতুন এই প্লান্টের মাধ্যমে সৌরশক্তি থেকে জ্বালানি উৎপাদনের প্রক্রিয়া আরো উন্নত হয়ে উঠবে। সাধারণ সোলার সেলও সিলিকন দিয়ে তৈরি। সেই সিলিকনের ওপর লেজার প্রয়োগ করলে নতুন ও উন্নত সোলার সেলের উপাদান তৈরি করা যায়। কন্টারমান আরো জানালেন, ‘আমাদের উচ্চশক্তির লেজার পালস ওপরের ভাগে পরিবতর্ন আনে। এরপর সেই রুক্ষ সারফেসের ওপর সূ² চোঙার মতো কাঠামো তৈরি হয়। ফলে প্রায় কোনো প্রতিফলন ছাড়াই আরো অনেক বেশি আলো ধরা পড়ে। খালি চোখে দেখলে তখন তা কালো মনে হয়।’
শুধু সূযের্র তাপ নয়, অদৃশ্য ইনফ্রারেড রশ্মি কাজে লাগাতে পারলে সৌরশক্তি আরো কাযর্কর হয়ে উঠবে। সোলার সেলের পেছনে কালো সিলিকন লাগিয়ে এমনটা করা সম্ভব।
সূযর্ আমাদের আলো ও উত্তাপ দেয়। সৌরশক্তি দিয়ে বিদ্যুৎও উৎপাদন করা হয়। সোলার সেল সৌরশক্তি ধারণ করে। এরপর তা বিদ্যুতে পরিণত করে।
তা সত্তে¡ও প্রায় এক-চতুথার্ংশ সৌরশক্তি নষ্ট হয়। কারণ সাধারণ সোলার প্যানেল এখনো সূযের্র ইনফ্রারেড রশ্মি ধারণ করতে পারে না। ফ্রাউনহোফার ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানী স্টেফান কন্টারমান তা বদলাতে চান। তিনি বলেন, ‘সূযের্র আলোর স্পেকট্রামের মধ্যে ইনফ্রারেড রশ্মিও রয়েছে। আমাদের এই সোলার সেলের পেছনে কালো সিলিকন বসানো রয়েছে, যা এই রশ্মিকে বিদ্যুতে পরিণত করতে পারে।’
অথার্ৎ কৃত্রিমভাবে তৈরি এই রুক্ষ সারফেস জ্বালানির অপচয় হতে দেয় না, আরো বেশি জ্বালানি ধারণ করে। কন্টারমানের মতে, ‘এটা একটা সিলিকন চাকতি, যার ওপরটা পালিশ করা। এর ওপর আমরা লেজার দিয়ে তিনটি অক্ষর খোদাই করেছি। এই কালো সিলিকন এবার আমার হাতের উত্তাপ শুষে নিচ্ছে। ইনফ্রারেড ক্যামেরার সামনে ‘ওয়েভার’ রাখলে আমার হাতের উত্তাপ এর মধ্য দিয়ে গলে যাবে। কিন্তু যেখানে লেজারের ছেঁায়া পড়েছে, সেখানে কিন্তু উত্তাপ জমা থাকবে।’
পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, যেখানেই কালো সিলিকন রয়েছে, সেখানে সোলার সেল ইনফ্রারেড রশ্মি শুষে নিচ্ছে। ডান দিকের ল্যাম্প সাধারণ আলো তৈরি করছে, বামের ল্যাম্প ইনফ্রারেড রশ্মি বিকিরণ করছে। সেই বিদ্যুৎই চাকাটিকে ঘোরাচ্ছে।
এর ফলে সৌরবিদ্যুৎ শিল্পে নতুন জোয়ার আসতে চলেছে। অনেক কোম্পানি এখনই কালো সিলিকনের এই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। এমনকি সূযের্র আলো ছাড়াই সেগুলো কাজ করতে পারে। কন্টারমান বলেন, ‘ইনফ্রারেড রশ্মি খালি চোখে দেখা যায় না। তাই ঘর অন্ধকার থাকলেও এই উত্তাপ কাজে লাগানো যায়, বিদ্যুতে রূপান্তর করা যায়।’
বড় যন্ত্র বা কারখানাও ইনফ্রারেড রশ্মির উৎস হতে পারে। বছর দেড়েকের মধ্যেই হাইনরিশ হ্যারৎস ইন্সটিটিউটের সোলার সেল বাজারে আসবে। ফলে গোটা বিশ্বে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনে বিপ্লব আসতে চলেছে।