বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিগ ব্যাং-এর গভীরে

শামীমা জান্নাত
  ০২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

মহাবিশ্ব নিয়ে মানুষের চর্চা দীর্ঘদিনের। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সংশ্লিষ্ট মানুষ নিজেদের স্বার্থেই নির্মাণ করেছে মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণার নানা রকম প্রতিষ্ঠান। এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইউরোপের সার্ন। এ প্রতিষ্ঠানটি বেশ ভালোভাবেই শুরু করেছে সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্স বর্ডারে বিগ ব্যাং গবেষণা। এ গবেষণা নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানী মহল ও মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। এ গবেষণার মাধ্যমে নাকি মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য নিয়ে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর জানা সম্ভব হবে।

প্রোটনের দুটি বিম ঘড়ির দিকে এবং ঘড়ির বিপরীত দিকে তাক করে সার্নের বিজ্ঞানীরা ছুড়ে দিয়েছেন ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে অবস্থান নেয়া টানেলে। এ দুই বিপরীতমুখী বিমের যখন সংঘর্ষ হয় তখন ঘটে বিগ ব্যাংয়ের সময়কার পরিবেশ। বিজ্ঞানীরা জানান, যে কোনো বেগে বিম ছুড়লে এ পরিবেশ অর্জন সম্ভব নয়। ছুড়তে হবে আলোর প্রায় কাছাকাছি বেগে। সার্নের বিজ্ঞানীরা এ কাজটিই করেছেন।

এ ধরনের প্রোটন বিমের সংঘর্ষের মাধ্যমে বিগ ব্যাং শুরুর সময়কার পরিবেশ পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি আরেকটি বিষয় বিজ্ঞানীরা অর্জন করবেন তা হচ্ছে নতুন নতুন কণা আবিষ্কার। তারা আশা করছেন হিগ-বোসন নামক কণিকা আবিষ্কারের। এ হিগ-বোসন পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কণিকা। এ কণিকাকে অনেকে মজা করে ঈশ্বরের কণিকাও বলেন। হিগ-বোসন কণিকা নিয়ে গবেষণার দিক দিয়েও তাই এ গবেষণা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

লার্জ হাডরন কলাইডারের মাধ্যমে এ গবেষণা পরিচালিত করেছেন ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চের বিজ্ঞানীরা। এ প্রতিষ্ঠানটি সংক্ষেপে সার্ন হিসেবে পরিচিত। উচ্চতর পদার্থ বিজ্ঞানের বেশকিছু প্রশ্ন সামনে রেখে ১৯৭১ সালে এই লার্জ হাডরন কলাইডারের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০৮ সাল থেকে এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এবারের পরীক্ষা থেকে সবচেয়ে বেশি আলোচিত যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হচ্ছে সুপারসিমেট্রিক পদার্থ হিগ-বোসন আবিষ্কার। হিগ-বোসন বিজ্ঞানীদের কাছে একটি হাইপোথেটিক্যাল কণিকা হিসেবে বিবেচিত ছিল। পদার্থ বিজ্ঞানের বিশেষ থিওরি 'স্ট্যান্ডার্ড মডেল' থেকে বিজ্ঞানীরা এ কণিকা সম্পর্কে ধারণা পান। হিগ-বোসনের ভর ১১৫ থেকে ১৮৫ এবং এ কণিকার স্পিন হচ্ছে শূন্য। হিগ-বোসন হচ্ছে সৃষ্টির শুরুর সময়কার প্রাথমিক কণিকা। এ কণিকার কথা মাথায় রেখেই অনেক বিজ্ঞানী মন্তব্য করেছেন হিগ-বোসনের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরুর সময়কার পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। হিগ-বোসনকে মিডিয়ায় অনেক সময় মজা করে গড কণিকা বলা হয়। বেশকিছু জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্রে হিগ-বোসনের কথা উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে লেক্স, সোলারিস, হোয়াইট মারস, ফ্লাশফরওয়ার্ড, ইনটো দ্য লুকিং গস্নাস, দ্য গড পারটিকলস, এ হোল ইন টেক্সাস ইত্যাদি।

হিগ-বোসনের ব্যাপারটি ছাড়া আরো বেশকিছু কারণে এ সার্ন লার্জ হাডরন কলাইডারের কার্যক্রমের দিকে সবার মনোযোগ রয়েছে। এর মধ্যে এক্সট্রা ডাইমেনশন, সুপারসিমেট্রিক পার্টনার, স্ট্রিং থিওরি, গ্র্যান্ড ইউনিফিকেশন থিওরি, গ্র্যাভিটি অ্যান্ড ফান্ডামেন্টাল ফোর্সেস, কোয়ার্ক ফ্ল্যাভোর মিক্সিং, সিপি ভায়োলেশন বা ম্যাটার-অ্যান্টিম্যাটার ভায়োলেশন, কোয়ার্ক-গস্নুয়োন পস্নাজমা প্রবলেম ইত্যাদি উলেস্নখযোগ্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<38933 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1