অভিনয় দিয়েই শুরু করা যাক। নিদির্ষ্ট কোনো নাটক কিংবা টেলিছবি নয়, বলা চলে যেখানেই তিনি অভিনয় করছেন, সেখানেই নিজস্বতা কিংবা স্বকীয়তা ফুটিয়ে তুলেছেন। সুধী ও দশর্কমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এইতো গত কোরবানির ঈদে মিথিলার যে কটি নাটক প্রচারিত হয়, তার সবটিতেই নিজের মেধার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। মিথিলার কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই গ্রহণযোগ্যতার পেছনে মূল কারণ কোনটা? মিথিলা বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ নেই। কাজের প্রতি সততা ও ভালোবাসাটাই আসল। আমি শুধু টাকার জন্য অভিনয় করি না। করলে মাসের ত্রিশ দিনই অভিনয়ে ব্যস্ত থাকতাম। অন্য পেশায় যেতাম না। তবে অভিনয়ের প্রতি টান রয়েছে হৃদয়ের গহিনে। তাই ব্যক্তিগত ও পেশাগত হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও অভিনয় করি। বলতে পারেন, আমি একটি ভালো গল্পের অপেক্ষায় থাকি মাসের পর মাস। গল্প-চরিত্র-নিদের্শক-সহশিল্পী ও বাজেট সব ব্যাটে-বলে মিলে তবেই অভিনয় করি। তাই হয়ত কাজটি ভালো হয়। আর ভালো কাজই দশর্ক গ্রহণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।’
মিথিলা আরও বলেন, ‘তাছাড়া আমি যেহেতু পদার্য় কম আসি এজন্য হয়তো দশর্ক আমাকে মিস করেন। যার ফলে নতুন কাজ এলে তারা আগ্রহ নিয়ে দেখেন। যদিও তাদের এই আস্থার জায়গাটি আমি তৈরি করতে পেরেছি। দীঘির্দন ভালো কাজের সঙ্গে থেকেছি বলেই দশর্ক আমার ওপর ভরসা করনে। তারা জানেন, আমি যে কাজটি করব তা অনন্ত মানসম্মত হবে। ভালোবাসা থেকেই অভিনয় করি। ছুটি পেলেই শুটিংয়ে নেমে যাই।’
ঈদের পর মিথিলা অভিনীত এনটিভির একটি টেলিছবি করেও দারুণ দশর্ক সাড়া পেয়েছেন মিথিলা। রেদোয়ান রনির ‘বিয়ের দাওয়াত রইলো’ টেলিছবিটি ইউটিউবে এরইমধ্যে কয়েক মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে। টেলিছবিটিতে কনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিথিলা।
অভিনয়ের আলোচনার মধ্যেই নতুন আরেকটি খবর মনে পড়ে যায় মিথিলার। জানালেন, ‘বিয়ের দাওয়াত রইলো’ টেলিছবির গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে দুটি বিজ্ঞাপনচিত্র। আর তাতে একই চরিত্রে দেখা যাবে মিথিলাকেও। সঙ্গে আছেন ‘বিয়ের দাওয়াত রইলো’ টেলিছবিতে তার বিপরীতে থাকা মনোজ কুমার। বাংলালিংকের এই বিজ্ঞাপন দুটি নিমার্ণ করেছেন আদনান আল রাজিব। কিছুদিন আগেই আমরা শুটিং করেছি। খুব মজার কাজ হয়েছে। বিয়ের আমেজ, উৎসব উৎসব ভাব আছে বিজ্ঞাপন দুটিতে। আশা করি দশের্কর উপভোগ্য হবে।’
মনোজ কুমারের সঙ্গে একটি নতুন নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি। আইফ্লিক্সে প্রকাশিত ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত নাটকটির নাম একটি সবুজ ব্যাগ।
অভিনয়ে নিয়মিত না পাওয়া গেলেও ভক্তদের কাছ থেকে দূরে থাকেন না মিথিলা। মাঝেমধ্যেই বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়ে দশের্কর সামনে আসেন মিথিলা। পাশাপাশি আজকাল উপস্থাপিকা হিসেবেও দেখা যাচ্ছে তাকে। বতর্মানে বাংলাভিশনের জনপ্রিয় সেলিব্রেটি টকশো ‘আমার আমি’র উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ইতোমধ্যে অনুষ্ঠানটির কয়েক পবর্ প্রচার হয়ে গেছে। প্রতিটি পবর্ই দশর্ক বেশ উপভোগ করছেন।
‘আমার আমি’ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা প্রসঙ্গে মিথিলা বলেন, ‘এই অনুষ্ঠান কিন্তু বহুদিন ধরে টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে। এটার একটা লিগেসি রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে অনুষ্ঠানের প্রযোজক সাজ্জাদ হুসাইন চাইছিলেন, আমি যেন অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করি। কিন্তু আমাকে এত কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়, সময় বের করাটাই মুশকিল। অবশেষে মাসে দুই দিন এই অনুষ্ঠানের জন্য সময় বের করেছি। সবার খুব প্রিয় ও অনেক পরিচিত একটি অনুষ্ঠান। এর আগে যারা উপস্থাপনা করেছেন সবাই খুব ভালো করেছেন। আমি চেষ্টা করছি আমার মতো করে ভিন্ন কিছু করতে। আমার চেষ্টা সাথর্ক বলেই মনে হচ্ছে। কারণ আমার উপস্থাপনার জন্য আরও কিছু মানুষ অনুষ্ঠানটি পছন্দ করছে।’
মিথিলা আরও বলেন, ‘আমার অনুষ্ঠানের প্রথম পবের্র অতিথি হয়ে এসেছিলেন অণর্ব। এই পবির্ট নিয়ে আমি খুবই উচ্ছ¡সিত ছিলাম। কারণ আমার গান শেখা, ছবি অঁাকা ও গিটার বাজানো শেখার যাবতীয় উৎসাহ অণর্ব ভাইয়ের কাছ থেকে। আমরা তো প্রায় একই সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। শান্তিনিকেতন থেকে ভাইয়া যখন ছুটিতে ঢাকায় আসতেন, তখন আমরা একসঙ্গে গান গাইতাম, ছবি অঁাকতাম। অণর্ব ভাইয়ার প্রথম রেকডির্ং করা গানে আমি, মিম ও মিলিতা আপু কণ্ঠ দিয়েছি।’
‘আমার আমি’র আগে সম্প্রতি জন সচেতনতামূলক রেডিও অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে বেশ প্রসংশিত হয়েছেন মিথিলা। শুধু রেডিও অনুষ্ঠান করেই সমাজের প্রতি দায় এড়িয়ে যাননি মিথিলা। নারী অধিকার ও নারী-পুরুষের সমমযার্দা নিয়ে দীঘির্দন ধরে কাজ করছেন এই তারকা। তার মতে, নারী-পুরুষের সমমযার্দার অনেকখানি নিশ্চিত করতে পারে শুধু নারীরাই। এ সম্পকের্ নিজের অভিব্যক্তি জানিয়ে শাশুড়িদের প্রতি একটি খোলা চিঠি ফেসবুকে শেয়ার করেন মিথিলা। চিঠিতে শ্বশুরবাড়িতে একটি মেয়ের নববধূ হিসেবে আগমনের পর তার পৃথিবীটা কিভাবে বদলে যায় সে কথা উল্লেখ করেছেন। তুলে ধরেছেন শ্বশুরবাড়ির পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার পাশাপাশি সবার মনজয়ের জন্য একটি মেয়ের প্রাণপণ চেষ্টা ও সন্তান লালন-পালনের কথা।