ব্যক্তিজীবনে বেশ ডানপিটে ও দস্যি স্বভাবের মেয়ে মৌসুমী। কখনোই এক জায়গায় স্থির থাকতে পারেন না। তাই যেখানেই যান মনের মতো বন্ধু জুটিয়ে ফেলেন। অভিনয়কেও আপন করে নিয়েছেন। ক্যারিয়ারের দিকে রীতিমতো ছুটছেন এই অভিনেত্রী।
নাটক-টেলিফিল্ম ও চলচ্চিত্রের পাশাপাশি মিউজিক ভিডিওতেও কাজ করছেন। অভিনয়ে যেন ষোল আনাই পূণর্ তার। মিডিয়ার রঙিন মঞ্চে চলতে গিয়ে অনেকের মতো ফঁসকে যাননি। বরং এগিয়েছেন বুঝেশুনেই। শুরুটাই ছিল চমকে ভরা। ধারাবাহিক নাটক ‘রশ্নি’ মধ্য দিয়েই তিনি অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন। এর পর রেডিও চকলেট, ভালোবাসার চতুষ্কোণের মতো দশর্কপ্রিয় নাটকের মাধ্যমে দশের্কর মনে জায়গা করে নেন মৌসুমী। এ পযর্ন্ত অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন।
গেল ঈদেও তার অভিনীত বেশ কিছু নাটক সাড়া ফেলেছে। ঈদের নাটক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোজার ঈদে বেশ কিছু নাটকে কাজ করেছি। খÐ ও ধারাবাহিকসহ ৮-১০ টার বেশি হবে। এবার তো ধারাবাহিক নাটকের সংখ্যা-বেশি ছিল। আমিও কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজ করেছিলাম। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই সাড়া পেয়েছি গেল ঈদের নাটকে। বিভিন্ন চ্যানেলে তার কয়েকটি ধারাবাহিক নাটক প্রচার হচ্ছে। এর মধ্যে ‘সুখী মীরগঞ্জ’, ‘ইডিয়েট’, ‘যখন কখনো’ ‘সিনেম্যাটিক’ ও ‘ঘরে বাইরে’। আসছে ঈদের নাটকেও মৌসুমীকে দেখা যাবে। তবে এবার বেছে বেছে কাজ করবেন বলেই তিনি জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, আসছে ঈদুল আজহার একটি নাটকের কাজ শেষ করেছি। আরও কিছু নাটকের স্ক্রিপ্ট হাতে পেয়েছি। শিগগিরই এসব নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেব। সংখ্যায় বেশি নাটক না করে এবারের ঈদে বেছে বেছে কাজ করব। দীঘর্ ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটকে তিনি বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কখনো গল্পের রোমান্টিক নায়িকা, কখনো দস্যুরানী, আবার কখনো কমেডি, কখনো সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করেন। সব ধরনের চরিত্রেই তাকে দেখা যায়। নাটকের চরিত্র নিয়ে বলেন, অভিনয় করা আমার কাজ তাই কমেডি ও সিরিয়াস সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করি। যে কোনোটাতেই আমি অভিনয়ে অভ্যস্থ। একই ধরনের চরিত্রে অভিনয় না করে বারবার নিজেকে ভাঙতে চাই। চরিত্রের বৈচিত্র আনতে কমেডি/সিরিয়া সব ধরনের কাজই জরুরি।’
টিভি নাটকের পাশাপাশি মৌসুমী রুপালি পদাের্তও সুনাম কুড়িয়েছেন। ২০১৩-এ না মানুষ চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। কিন্তু ২০১৪-এ হাডসনের বন্দুক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এরপর বøাকমানি, বøাকমেইল, মেন্টাল, জালালের গল্পসহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় কাজ করে নিজের অভিনয়ের নৈপুণ্যতা ধরে রেখেছেন। সবের্শষ ‘জালালের গল্প’ ছবিটি মুক্তির পর দারুণ প্রশংসা পান মৌসুমী। গল্প ও চরিত্র বুঝে কাজ করছেন চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছোটপদার্য় নিয়মিত কাজের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও কাজ করছি। সিনেমার অনেক প্রস্তাব এলেও করা হয় না। কারণ গল্প ও চরিত্রে যখন নিজেকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ পাই তখনই কাজটা করার চেষ্টা করি। সম্প্রতি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় চরিত্রগুলো নিয়ে নিমির্তব্য আরিফুর জামান আরিফের ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করছেন মৌসুমী। এর শুটিং প্রায় শেষের দিকে। এ ছবিতে তাকে দেখা যাবে ‘রাজল²ী’ চরিত্রে । ছবিটি নিয়ে তিনি বলেন, এটা আমার জন্য একদিকে সৌভাগ্য যে শরৎচন্দ্রের রাজল²ী চরিত্রে অভিনয় করছি। চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। চেষ্টা করছি চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। সম্প্রতি তার একটি মিউজিক ভিডিও ‘আগুন পানি’ প্রকাশ পেয়েছে। ক্যারিয়ারে এটাই তার প্রথম মিউজিক ভিডিও। এতে তার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। ভিডিওটি প্রকাশের পর ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন মৌসুমী। মিউজিক ভিডিও নিয়ে তিনি বলেন, প্রকাশের পর থেকেই খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। সবাই প্রশংসা করেছেন। এখন পযর্ন্ত গানটি নিয়ে কারো নেতিবাচক মন্তব্য শুনিনি। মনে হয় আমার উপস্থাপনা (অভিনয়) তাদের ভালো লেগেছে। কাজটি নিয়ে আমার এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। তিনি খুব সাহায্য করেছেন কাজটি করার সময়। সহশিল্পী হিসেবে আসিফ আকবর অসাধারণ। সামনে এরকম ভালো মানের মিউজিক ভিডিওয়ের প্রস্তাব পেলে তাতে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
গøামার গালর্ হিসেবে মৌসুমীর বেশ সুনাম রয়েছে। নিজের রূপচর্চা ও ফিটনেস প্রসঙ্গে তিনি বলেন-‘আমি খুব একটা রূপচচার্ করি না। কিন্তু সব সময় ত্বকটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি। এ ছাড়া খাওয়া-দাওয়ার প্রতি আমার তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তাই আমি নিধাির্রত কোনো ডায়েট চাটর্ অনুসরণ করি না। তবে আমি সব সময় হালকা খাবার খেতেই বেশি পছন্দ করি। এ ছাড়া ফাস্ট ফুড এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার সব সময় এড়িয়ে চলি।’
কাজের বাইরে অবসর পেলে কি করেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে মৌসুমি বলেন, ‘অবসর খুব একটা পাই না। তবে পেলে তা উপভোগ করার চেষ্টা করি। অবসরে গান শুনতে এবং বই পড়তে বেশি ভালোবাসি। বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী এবং সায়েন্স ফিকশনধমীর্ বই পড়তে আমার ভালো লাগে। তাছাড়া খ্যাতনামা লেখকদের গল্প-উপন্যাস পড়তেও স্বাচ্ছসন্দ্যবোধ করি।’