শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
তানভীন সুইটি

অভিনেত্রী নয়, বাঙালি হিসেবেই পালন করতে চাই

সময়টা তখন ১৯৯৫ সাল। মঞ্চনাটকে ছোটখাটো চরিত্রের আস্থার প্রতীক তিনি। যে কোনো চরিত্রকেই রূপদান করেন অন্য আবেশে। পান করতালিও। বিষয়টি চোখ এড়ায়নি প্রয়াত নাট্যজন আব্দুলস্নাহ আল মামুনের। নিজের পরিচালিত 'স্পর্ধা' নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রের দায়িত্ব দেন অতিমানবীয় অভিনয় করা এই তরুণীকে। ব্যাস! নিজেকে প্রমাণ করতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। মঞ্চে আবির্ভূত হলেন নতুনরূপে। পেলেন জনপ্রিয়তা। কৃষ্ণ কান্তের উইল, মেরাজ ফকিরে মা ও এখনো ক্রীতাদসসহ বেশ কিছু মঞ্চনাটকে অভিনয় করে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ঠিক ক'বছর পরেই ঝলমলে টিভি পর্দায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। হয়েই উঠেন সময়ের আলোচিত অভিনেত্রীদের একজন। বড় পর্দায়ও তাকে দেখা গেছে প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহর বিপরীতে। নিজের অভিনয় গুণেই উঠেছেন জনপ্রিতার চূড়ায়। বর্তমানে টিভি নাটক পরিচালনার পাশাপাশি প্রযোজনাও করছেন নিয়মিত। তিনি তানভীন সুইটি। আজ মনে আগল খুলে যায়যায়দিনের পাঠকদের জানাচ্ছেন তার বৈশাখী ভাবনা ও উদযাপনের আদ্যোপান্ত...
রায়হান রহমান
  ১১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
তানভীন সুইটি

দেশে কিংবা দেশের বাহিরে, পহেলা বৈশাখ উৎযাপনে বাঙালিরা এখন অনেক সচেতন। সব ক্ষেত্রেই পহেলা বৈশাখের আমেজ পাওয়া যায়। মনে হয় অন্তত একটি দিন আমরা দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করছি। এটা খুবই ভালো লাগে। রাস্তায় বের হলেই সব জায়গায় হিন্দি বা ইংরেজি গানের আসর থাকে না। রেস্টুরেন্টেও ফরমায়েশি পাশ্চাত্যের খাবার পরিবেশন না করে দেশীয় খাবার পরিবেশন করা হয়। তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও এ দিনটিকে নিয়ে নানা আয়োজন থাকে। শার্ট-প্যান্ট বাদ দিয়ে সবাই পায়জামা পাঞ্জাবি আর মেয়েরা শাড়ি পড়ে। কত মিষ্টি লাগে দেখতে! সবার মধ্যেই এ দিনটিকে নিজস্ব ঢঙে বরণ করে নেয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। এটি আমার কাছে ইতিবাচকই মনে হয়।

তবে শৈশবের পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের সঙ্গে এখনকার বৈশাখী উৎসবের বিস্তর ফারাক রয়েছে। তখন এত বর্ণিলভাবে পালন করার সুযোগ ছিল না। এখন হচ্ছে। তখন বৈশাখ মানেই ছিল, সকাল বেলা মা বিভিন্ন রান্না বান্না করবে। খাবারে থাকবে বিশেষত্ব। সঙ্গে ইলিশ পান্তা তো থাকবেই। আমরা বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাব। সন্ধ্যার আগেই বাসায় আসব। এইতো।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব পাল্টেছে। দিন বেড়েছে, আমিও বড় হয়েছি। আমার কর্মব্যস্ততাও বেড়েছে। কর্মব্যস্তার মধ্যদিয়েই পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নিতে হয়েছে। তবে উৎসব পালনে কোনো অংশেই ভাঁটা পড়েনি। কারণ নাট্যজনদের সঙ্গে কাজ থাকত। শিল্পমনা মানুষগুলো তখন আমার চারপাশে। বৈশাখকে কেন্দ্র করে থিয়েটারে চলতো বিভিন্ন আয়োজন। যে সবে যেতাম, অংশগ্রহণ করতাম। দিনটা হইহুলোড় করে কেটে যেতো। ভালোই লাগতো।

পরে টিভি নাটকে ব্যস্ত হওয়ায় বৈশাখ পালন করতাম অন্যভাবে। দেখা যেত সবাই মিলে মৌসুমীর বাসায় চলে গেছি। সেখানেই চলতো সারাদিনের অনুষ্ঠানযজ্ঞ। রমনার বটমূলে যেতাম। প্রভাতী অনুষ্ঠানে যেতাম। অন্যরকম ছিল সেসব দিনগুলো। তবে বৈশাখ মানেই কিন্তু দু'একটি লোকজ গান নয়। এর ব্যাপ্তি অনেক বড়। এটাকে অবমূল্যায়ন করার উপায় নেই।

আগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম। এখন যাই অতিথি হয়ে। পহেলা বৈশাখের সকাল থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে হয়। দাওয়াত থাকে। সারাদিন এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেই পহেলা বৈশাখ কাটে। সময় পেলে মায়ের বাসায় বা বন্ধুদের বাসায় যাওয়া হয়। খাওয়া দাওয়া হয়।

এবারও পহেলা বৈশাখের সকালে শাড়ি পড়ার ইচ্ছা আছে। সকাল সকাল পান্তা ইলিশের আয়োজন তো থাকছেই। পরিবারকেও সময় দেব। অন্যসব বারে পরিবারকে সময় দেয়া হয় না। এবারের পরিকল্পনায় এসবও আছে। এরপরে হয়তো বিকাল বেলায় কোনো কলিগের বাসায় যাব। অনেকের সঙ্গে দেখা হবে। আড্ডা হবে। গল্প হবে। অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন বাঙালি হিসেবে বৈশাখ পালন করতে চাই। প্রতিবার তাই করি। এতেই আমার ভালো লাগে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<44913 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1