শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যা করেছি, বেশ করেছি

খোলামেলা চরিত্রে বেশ প্রাণবন্ত কলকাতার অভিনেত্রী পাওলি দাম। এ নিয়ে প্রশংসিত হওয়ার পাশাপাশি সমালোচিতও হয়েছেন তিনি। এমনকি বাদ যায়নি সহকর্মীরাও। রাখি সায়ন্তী থেকে শুরু করে মলিস্নকা শেরওয়াত সবাই চোখে চোখ রেখে কথা শুনিয়েছেন এ অভিনেত্রীকে। যদিও কলকাতার চলচ্চিত্রাঙ্গনের একাংশ মনে করে পাওলি পশ্চিমবঙ্গের সিনেমার সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছেন। সম্প্রতি এসব নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পাওলি দাম। তারার মেলায় থাকল সে কথাবার্তার চুম্বক অংশ। প্রতিবেদনটি সাজিয়েছেন রায়হান রহমান
নতুনধারা
  ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

আলোচনা-সমালোচনা হবেই...

আমাকে নিয়ে যারা এসব বলে বেড়ায়, তাদের সত্যিকার অর্থে কোনো কাজকর্ম নেই। আমি এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তারকাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হবেই। তবে সেই সমালোচনায় যদি চলচ্চিত্রাঙ্গনের লোকজন জড়িত হয়, তখন একটু খারাপ লাগেই। যেসব সহকর্মী আমার খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেন, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই- কালবেলা, মনের মানুষ, তখন ২৩, সব চরিত্র কাল্পনিক চলচ্চিত্রগুলো দেখুক। আগে শিল্প বিষয়টি না বুঝে শিল্পী হওয়া মানুষের প্রতি বিনীত অনুরোধ, তারা এসব সিনেমা আগে দেখুক। তারপর না হয় আমার সমালোচনা করা যাবে। 'কালবেলা'র পর সবাই বলতে শুরু করেছিল মাধবীলতার চরিত্রটা পাওলি দারুণ করেছে। টিপিক্যাল বাঙালি মেয়ে থেকে বের হয়ে চরিত্রটি নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করেছিলাম। একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব হলো ফুল ভলিউমে অভিনয় করা। আর মানুষকেও বোঝতে হবে চরিত্র অনুযায়ী সব কিছু পাল্টে যায়। ফিগার বদলায়, মানসিকতাও বদলায়। চরিত্রের প্রকাশভঙ্গি বদলায়।

চরিত্রে লজ্জা বলে কিছু নেই...

অনেকের মুখেই বলতে শুনেছি, আমি নাকি বাঙালি নারীর লজ্জার শেষ জায়গাটিও প্রকাশ্যে জলাঞ্জলি দিয়েছি। এটা কেন বলা হচ্ছে, আমি জানি না। আমার মনে হয়, কলকাতার বাঙালিরা এখনো আধুনিক হতে পারেনি। তাদের মধ্যে সেকেলে ভাবটা রয়ে গেছে। বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে যে মুভি হচ্ছে সেসবের কাছে আমার এমন অভিনয় ডালভাত। তারকোভস্কি, ফেলিনি বা বার্গম্যানের মতো তারকারাও কিন্ত পূর্ণ নগ্নতা তাদের চলচ্চিত্রে দেখিয়ে। শিল্পে ব্যাকরণে একটি চরিত্রে লজ্জা বলে কিছু নেই। চরিত্রের আবেদন অনুযায়ী সবটাই করা যেতে পারে। যারা এসব এখনো বোঝে না- তারা সংকীর্ণমনা। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, নায়িকাকে যখন কেউ জড়িয়ে ধরছে, গানের তালে নাচিয়ে দিচ্ছে ছোট পোশাক পরে তখন লজ্জা করে না? আমি তো মনে করি একজন শিল্পীর লজ্জা থাকারই কথা নয়।

আমি ষোলো আনা বাঙালি

যারা বলে বেড়ায়, আমি নামে (পাওলি দাম) বাঙালি কিন্তু আদতে বাঙালিয়ানা বেইজ্জতি করেছি- তারা সত্যিই ভুল করছে। আমার চেয়ে বেশি বাঙালি কেউ নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই রক্ষণশীল। বাঙালিয়ানা মেনেই জীবন কাটাই। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, একই সঙ্গে আমি একজন অভিনেত্রী। আমার মতেই দুটো সত্তাই কাজ করে। রূপালি পর্দার আমি তো সত্যিকারের আমি না। ওটা অন্য এক পাওলি। সিনেমাকে যে পাগলের মতো ভালোবাসে। ফিল্মে যার ইনহিবিশন বলে কিছু নেই। চরিত্রের জন্য যতটুকু কাপড় খুলতে হয়, খুলব। খুলেছিও। কখনো এ নিয়ে নেতিবাচক বিষয় ভাবিনি। বরারবই মনে হয়েছে- যা করেছি বেশ করেছি। আমি যখন ঢাকাই শাড়ি পরে কোনো ফেস্টিভ্যালের রেড কার্পেটে হাটি, সবাই তখন প্রশংসা করে। আর যখন চরিত্রের জন্য সেটা খুলে রাখি তখন সবাই শিক্ষকমশাইয়ের মতো আমাকে জ্ঞান দেয়। আসলে লোকে আমাকে না আমার কাপড়কে মূল্যায়ন করে সেটাই বুঝি না।

বাংলা চলচ্চিত্রের ধারা পরিবর্তন হচ্ছে

বাংলা সিনেমায় আগের চেয়ে অনেক বেশি সাহসী দৃশ্য থাকে। এখন বাংলা সিনেমায় চুমুর দৃশ্য থাকবেই। তবে লোকে যদি ছবির সাবালক ভাষা না বোঝে সেটা তাদের সমস্যা। তবে পর্দায় যদি দেখানো হয় একটি মেয় ধর্ষণ হচ্ছে তাহলে সে সহানুভূতি পায়। যখনই একটি মেয়ে স্বেচ্ছায় নিজের জামাকাপড় খোলে, তখন কেউ মেনে নিতে পারে না। বাঙালি নাকি গেস্নাবাল হচ্ছে, এই বুঝি গেস্নাবালের ছিরি!

ছুটছি নিজের গতিতে

আমি কখনো পরিকল্পনা করে কাজ করি না। আর কার ভাগ্যে কখন কি আছে কেউ জানে না। যেমন কালবেলার প্রস্তাব পেয়েছিলাম বাড়িতে বসেই। আমার হাতে এখনও পাঁচটা ছবি। তবে আমার এখন ঋতুপর্ণ ঘোষের মতো একজন দরকার ছিল। একবার ঋতুপর্ণদা আমাকে মেসেজ লিখে পাঠালো, কিরে ভয় পাচ্ছিস না তো? একদম ভয় পাবি না। লোকে কেন যে তোর পেছনে লেগেছে, কেন মিডিয়া লিখছে আমার অবাক লাগছে। তুই বলবি আমার কথা। দারুণ সাহস দেখিয়েছিস।' এরকম ধারা গোটা পাঁচেক মানুষ আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রিতে থাকলে বাংলা সিনেমা অনেকদূর এগিয়ে যেত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63317 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1