বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মার্ভেলকন্যার সাতকাহন

ব্রি লারসন। একজন মার্কিন চলচ্চিত্রাভিনেত্রী ও নির্মাতা। ক্যাপ্টেন মার্ভেল সিনেমায় অভিনয় করে উঠে আসেন প্রাদপ্রদীপের আলোয়। বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান মার্ভেলকন্যা হিসেবে। স্বীকৃতিস্বরূপ মেলে একাডেমি পুরস্কার, বাফটা পুরস্কার, গোল্ডেন গেস্নাব পুরস্কার ও স্ক্রিন অ্যাক্টরের গিল্ড পুরস্কার। তাকে নিয়ে লিখছেন- রায়হান রহমান
নতুনধারা
  ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ব্রি লারসনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোতে। তার বাবা সিলভানিয়ান ও মা হিদার। লারসনের বয়স দুই পেরিয়ে তিন বছর হতে না হতেই মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। বাধ্য হয়েই মায়ের সঙ্গে চলে আসেন লস অ্যাঞ্জেলসে। এরও তিন বছর পরে মা আন্দাজ করতে পারে মেয়ের প্রতিভার কথা। তাই মাত্র ছয় বছর বয়সে সান ফ্রান্সিস্কোর আমেরিকান কনজারভেটরি থিয়েটারে ভর্তি করেন লারসনকে। এখানেই চলে তার অভিনয় ও পড়াশোনা।

এই থিয়েটারের বদৌলতেই 'দ্য টুনাইট শো'তে অভিনয় করার সুযোগ পান লারসন। এরপর মার্কিন টেলিভিশনের 'রাইজিং ড্যাড' নামের একটি ধারাবাহিকেও কাজের সুযোগ পেয়ে যান ব্রি। সেই থেকেই হাটি হাটি পা পা করে শরু হয় ব্রি লারসনের অভিনয় জীবন।

২০০৪ সালে কিশোরী ব্রি লারসন 'গোয়িং অন থার্টি' চলচ্চিত্রের একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পান। এতে দুর্দান্ত অভিনয়ের সুবাদে মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চোখে পড়েন তিনি। একে একে কাজের সুযোগ পান 'স্কট পিলগ্রিম ভার্সাস দ্য ওয়ার্ল্ড, টোয়েন্টি ওয়ান জাম্প স্ট্রিট ও দ্য স্পেক্টাকুলার নাউ সিনেমায়। যদিও সিনেমাগুলো মধ্যম মানের ব্যবসা করায় নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। অনেকটা বাধ্য হয়ে মার্কিন টিভি সিরিজের দিকে ঝুঁকে পড়েন ব্রি। মাঝের কিছু সময় ছিলেন চলচ্চিত্রের একেবারেই বাইরে।

এভাবে কিছুদিন চলার পর ২০১৫ সালে লারসন যুক্ত হোন 'এমা ডোনোঘর' নামের একটি চলচ্চিত্রের সঙ্গে। ছবিটি মুক্তির পর বিশ্বব্যাপী যেমন সমাদৃত হয়েছে, তেমনই রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য করেছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব সিনেমা দুনিয়ায় লারসনের দ্বিতীয় জন্ম হয়। এ সিনেমায় একজন অপহৃত নারীর চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে অর্জন করেন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড'স। আর ২০১৭ সালে রোমাঞ্চকর সিনেমা স্কাল আইল্যান্ডে চিত্রগ্রাহক চরিত্রে অভিনয় করেও পান ইতিবাচক সাড়া। একই বছর যুক্ত হোন পরিচালনার সঙ্গে। একটি হাস্যরসাক্তক সিনেমা পরিচালনার মধ্য দিয়ে সিনেদুনিয়ায় নিজেকে পরিচিত করার অন্য আবেশে। তখন নিজের ঝুলিতে কুড়ান লাখ দর্শকের প্রশংসা। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। লারসন পর্দায় হাজির হোন মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের সুপারহিরো সেজে। এটি লারসনের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সংযোজন তো বটেই, সঙ্গে মার্ভেল সিরিজের প্রথম কোনো নারীকেন্দ্রিক সিনেমাও। এ সিনেমাটি করার জন্য লারসনকে মার্কিন এয়ারফোর্সে ছয় মাস ট্রেনিং পর্যন্ত নিতে হয়েছিল। ক্যাপ্টেন মার্ভেল চরিত্রে লারসন অভিনয় করেছেন মার্কিন বিমানবাহিনীর সাবেক যোদ্ধা হিসেবে। যিনি একটি দুর্ঘটনার মাধ্যমে সুপার পাওয়ারের অধিকারী হন। তার মধ্যে সৃষ্টি হয় অতিমানবীয় শক্তির। পরবর্তিতে তার ওপর দায়িত্ব বর্তায় পৃথিবী ও মহাকাশের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন সৃষ্টি করা। আবেগহীন ও অসাধারণ এক যোদ্ধার ভূমিকায় লারসান এত ভালো করবেন খোদ নির্মাতারও বিশ্বাস হয়নি। তবে সেটাই করে দেখিয়েছেন এ অভিনেত্রী।

অভিনেত্রী লারসনকে নিয়ে মার্ভেল স্টুডিওর প্রধান কেভিন ফেইগ সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেন, 'এ চরিত্রটির জন্য দরকার ছিল একজন সক্ষম নারী। যিনি মানবিক ও অতিমানবিক বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেন। লারসন তেমনই একজন অভিনেত্রী। যার মধ্যে এসব গুণ বিদ্যমান।' কেভিনের কথা যে সত্য, তা চলতি বছরের মার্চ মাসেই বোঝা গেছে। ক্যাপ্টেন মার্ভেল মুক্তির বিশ্বব্যাপী এ সিনেমা নিয়ে উন্মাদনাই প্রমাণ দিয়েছে লারসনের সক্ষমতাকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<69349 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1