শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সদপের্ শিমু

ছোটপদার্র প্রিয়মুখ সুমাইয়া শিমু। দীঘর্ অভিনয় জীবনে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য দশর্কপ্রিয় নাটক ও টেলিছবি। টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েও নজর কেড়েছিলেন তিনি। সাবলীল অভিনয়শৈলী, মায়াবী মুখ, মিষ্টি হাসি আর উচ্চশিক্ষা তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। বিয়ে, সংসার ও পড়াশোনার ব্যস্ততায় বেশ কিছুদিন মিডিয়া থেকে দূরে থাকলেও সদপের্ আবার ফিরেছেন শিমু। আসছে ঈদুল আজহায় তার অভিনীত একাধিক নাটক প্রচার হবে। লাস্যময়ী এই তারকাকে নিয়ে লিখেছেন মাসিদ রণ
নতুনধারা
  ১৬ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
সুমাইয়া শিমু

ছোটপদার্র সুঅভিনেত্রী হিসাবে পরিচিত সুমাইয়া শিমুর ছোটবেলা কেটেছে নড়াইল জেলায়। বাড়ির সবাই তাকে শিমুল নামে ডাকে। খুবই শান্তশিষ্ট মেয়েটি বরাবরই লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিলেন। খুলনা শহর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ‘সরকার ও রাজনীতি’ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর নিজের প্রিয় বিষয় ‘নাটক’-এর ওপর এমফিল ও পিএইচডি করেন তিনি।

অল্প বয়সে মিডিয়ায় তার পদচারণা। পাশের বাড়ির মিষ্টি মেয়েটির মতো মুখাবয়ব, চঞ্চল বাচনভঙ্গি আর মিষ্টি হাসির জাদুতে অল্প দিনেই তারকাখ্যাতি পান শিমু। তবে অনেকের মতো তারকাখ্যাতি তাকে উড়তে শেখায়নি। তিনি দেখিয়েছেন মাটিতে থেকে কীভাবে আকাশ ছেঁায়া যায়। তাইতো শিমু নামটি উচ্চারিত হলেই দশের্কর চোখে ভেসে ওঠে মেধাবী এক অভিনেত্রীর মুখ। যিনি ভদ্র, বিনয়ী, মাজির্ত ও রুচিসম্পন্ন। শিমুর জীবনের লক্ষ্যই হলো- একজন মানুষ ও একজন শিল্পী হিসাবে যেন জীবনের শেষ দিন পযর্ন্ত মানুষের কাছে শ্রদ্ধা পান।

তাইতো জীবনের এই পযাের্য় এসে তিনি আরও বেশি সচেতন কাজ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। একসময় লেখাপড়া আর অভিনয়কে ব্যালেন্স করেছেন। আর এখন সংসার ও অভিনয় সামলাচ্ছেন ছন্দময় গতিতে। শিমু বলেন, ‘অভিনয়কে ভীষণ ভালোবাসি। জীবনের শেষ দিন পযর্ন্ত যেন অভিনয়ের প্রতি এই ভালোবাসা থাকে সেই প্রাথর্না করি সৃষ্টিকতার্র কাছে। আর দশের্কর কাছে আমার অনেক ঋণ। কারণ তারা শ্রদ্ধা, ভালোবাসা দিয়ে সাধারণ একটি মেয়েকে আজকের সুমাইয়া শিমু বানিয়েছেন। তাদেরকে ঠকানোর কোনো অধিকার আমার নেই। এ জন্য শুধু টিভিতে নিজের চেহারা দেখানোর জন্য কোনোদিন কাজ করিনি। যেদিন থেকে সত্যিকার অথের্ অভিনয়ের প্রেমে পড়েছি সেদিনই আমার এই দায়িত্ববোধ তৈরি হয়েছে। ভক্তের ভালোবাসার বিনিময়ে তাদের ভালো কিছু কাজ উপহার দেওয়ার এক ধরনের চেতনা আমার মধ্যে কাজ করে। তাই এখন আর মাসের ত্রিশ দিন অভিনয়ে ব্যস্ত থাকতে পারি না। ১০টি নাটকের প্রস্তাব পেলে তারমধ্যে সবচেয়ে ভালো গল্পের হয়ত দুটি নাটকে অভিনয় করি।’

কাজ নিবার্চনের ক্ষেত্রে কোন দিকে বেশি গুরুত্ব দেন জানতে চাইলে শিমু বলেন, ‘অবশ্যই সামগ্রিক গল্পটি কেমন তা আগে পড়ি। যদি দেখি গল্পটি ভিন্নধমীর্ তারপর আমার চরিত্রটির গভীরতা বা গল্পে তার গুরুত্ব কতখানি তা বিচার করি। আর একটি বিষয় খেয়াল করি, তা হলোÑ গল্পে বিনোদন থাকবে সেটা ঠিক আছে, কিন্তু তা সমাজের জন্য সকল দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো কি-না? যে গল্পে সমাজের প্রতি কোনো ইতিবাচক বাতার্ বহন করে সেই কাজ করতে অনেক বেশি আগ্রহী হই। এই কাজগুলো করলে শিল্পী বা দেশের নাগরিক হিসাবে দায়বদ্ধতা কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছি বলে মনে হয়।’

প্রায়ই শোনা যায়, বতর্মানে আমাদের নাটকের গল্প নিদির্ষ্ট একটি গÐির মধ্যে আটকে যাচ্ছে। তরুণ-তরুণীর বাইরে নাটকের প্রধান চরিত্রে অন্য বয়সীদের কথা খুব একটা চিন্তা করা হয় না। ফলে কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হওয়া অনেক জনপ্রিয় তারকার কাজের সুযোগ কমে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিমু বলেন, ‘কথাটা মোটামুটি ঠিক। গল্পে ভিন্নতা দরকার। এতে দশর্ক যেমন ভিন্ন স্বাদের নাটক পাবেন, তেমনি অভিজ্ঞ অভিনয়শিল্পীরাও কাজে আরও আগ্রহী হবেন। আর অভিনয়শিল্পীকেও বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। বয়সের সঙ্গে মানুষের সৌন্ধযর্, সামাজিক অবস্থান, দায়-দায়িত্ব সব কিছুরই পরিবতর্ন হয়। ফলে সব সময় সমান ব্যস্ততা না থাকাটাই স্বাভাবিক। কলেজ পড়–য়া মেয়ের চরিত্র কি সব বয়সে মানায়? তাছাড়া প্রতিটি বয়সেরই আলাদা সৌন্দযর্ আছে। সেই সৌন্দযর্ বিকশিত করা উচিত। আমি নিজের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি খুবই খেয়াল করি। কোনো চরিত্র খুব সুন্দর হলেও যদি মনে হয় আমাকে মানাবে না তাহলে সেই কাজ আমি করি না। ফলে বয়স, কম ব্যস্ততা-বেশি ব্যস্ততা এসব নিয়ে আমার কোনো দুশ্চিন্তা নেই। আমি শুধু ভালোমানের কিছু কাজ করতে চাই। যা দেখে দশর্ক আমার ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে না ফেলেন।’

অনেক হিসাব করে কাজ করেন বলে ইদানীং শিমু অভিনীত নাটকের সংখ্যা বেশ কম। তবে যে কাজটি করেন সেটি দশর্ক সানন্দ্যে গ্রহণ করেন। গত ঈদের আগে লম্বা সময় আমেরিকাতে ছিলেন বলে তেমন কোনো নাটক প্রচার হয়নি তার। এ ঈদের আগেও সিঙ্গাপুরে ছিলেন। তারপরও তিনটি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। দুটি নাটক বেশ কিছুদিন আগে করা বলে নাটকের নাম মনে নেই শিমুর। এ সপ্তাহে করেছেন ফেরদৌস হাসানের রচনা ও পরিচালনায় ‘সবুজ দরজা’ নামের একটি খÐ নাটক। এতে আরও অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও সজল। এ নাটকটি নিয়ে শিমু বলেন, ‘এ নাটকের বিষয়বস্তু আবহাওয়া পরিবতর্ন। তা থেকে অনুভ‚ত সমস্যা ও কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় এ বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে। যা এ সময়ের পৃথিবীর জন্য খুবই মানানসই। এখানে আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া মেয়ে। পরিচালক ও সহশিল্পীরা দারুণ। সবমিলিয়ে কাজটি ভালো হয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<8048 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1