বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়, তদন্ত কমিটি করেই দায় শেষ

যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সকালের ট্রেন ছেড়েছিল বিকালে, বিকালেরটা রাতে। এমনকি নির্ধারিত সময়ের ৩৩ ঘণ্টা পরও ট্রেন ছেড়েছে এবারের ঈদুল আজহায়। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলে এমন শিডিউল বিপর্যয় আগে কখনো ঘটেনি। এত বড় ঘটনায় শুধু তদন্ত কমিটি করেই দায় শেষ করেছে রেল মন্ত্রণালয়। এবারের ঈদে ৭ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ধূমকেতু, নীল সাগর, রংপুর, দ্রম্নতযান, চিত্রা, একতা, বনলতা, সিল্কসিটি, মোহনগঞ্জ, রাজশাহী এক্সপ্রেসসহ পশ্চিমাঞ্চলের সব ট্রেনে প্রতিদিনই শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এ ছাড়াও ট্রেনযাত্রার মধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের তিনটি কোচ লাইনচু্যত হয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে যাত্রীদের। সূত্র জানায়, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ঈশ্বরদী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন। ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলে যোগাযোগে ২৪ ঘণ্টায় ২৪টি ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। কিন্তু ঈদে চলাচল করেছে ৪৪টি ট্রেন। এছাড়া বিরতিহীন ট্রেন চলেছে তিনটি। স্মরণকালের ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল সদর দপ্তরে ওই সময়ে প্রতিদিনই দফায় দফায় বৈঠকে বসেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। রেলসেবায় কারও গাফিলতি পেলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে সব শাখায় সতর্কতামূলক চিঠিও দিয়েছিল রেল মন্ত্রণালয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় একমাস হতে চললেও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি, কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৪টি ট্রেনের জায়গায় ৪৪টি ট্রেন চালালে শিডিউল ঠিক রাখা যাবে না, সেটি আগে থেকেই জানত অপারেশন বিভাগ। কিন্তু রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে খুশি করতে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার এ পদক্ষেপের কারণে পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন। রেলসচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ঈদে শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখানে ব্যবস্থা নেয়ারও কিছু দেখেন না। তবে তদন্ত করতে গিয়ে তারা কিছু বিষয় পেয়েছেন। নতুন ট্রেন যোগ হওয়া, ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়া, যাত্রীর চাপের কারণে স্টেশনে ট্রেন দেরি ও বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেনের ধীরগতির কারণে শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হবে। অতিরিক্ত ট্রেন যুক্ত হলে শিডিউল বিপর্যয় ঘটবে, সেটি অপারেশন বিভাগ আগে থেকে জানার পরও কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি? এমন প্রশ্নে রেলসচিব বলেন, শুধু অপারেশন বিভাগ না, তারা সবাই জানতেন। এরপরও যাত্রীর চাপের কারণে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা মূল উদ্দেশ্যে ছিল। তিনি বলেন, তারা পরিকল্পনা নিয়েছেন, আগামী ঈদে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে স্পেশাল ট্রেন না চালানোর। অতিরিক্ত ট্রেন চালালে শিডিউল ঠিক রাখা যায় না। স্পেশাল ট্রেনের বগিগুলো নিয়মিত ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে তারপর চালানো হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে