বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আদালতের পর্যবেক্ষণ

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চরিত্র হরণের চেষ্টা ছিল জঙ্গিদের

বিচারক বলেন, সর্বোচ্চ সাজা প্রদানই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং ভাগ্যহত মানুষের স্বজনরা কিছুটা হলেও শান্তি পাবেন
নতুনধারা
  ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:৪৫

যাযাদি রিপোর্ট হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় করা মামলার সাত আসামির মৃতু্যদন্ডের আদেশ দিয়েছে ট্রাইবু্যনাল। এ রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, 'বাংলাদেশে তথাকথিত জিহাদ কায়েম করার লক্ষ্যে জননিরাপত্তা বিপন্ন করার এবং আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য জেএমবির একাংশ নিয়ে গঠিত নব্য জেএমবির সদস্যরা গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে নারকীয় ও দানবীয় হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নিরপরাধ দেশি-বিদেশি মানুষ যখন রাতের খাবার খেতে হলি আর্টিজান বেকারিতে যান, তখনই আকস্মিকভাবে তাদের ওপর নেমে আসে জঙ্গিবাদের ভয়াল রূপ।' 'জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা শিশুদের সামনে এ হত্যাকান্ড চালায়। মৃতু্য নিশ্চিত করার জন্য জঙ্গিরা নিথর দেহগুলোকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায়। মুহূর্তের মধ্যে মৃতু্যপুরীতে পরিণত হয় হলি আর্টিজান বেকারি।' আদালত আরও বলেছে, 'কলঙ্কজনক এ হামলার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চরিত্র হরণের চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ফলে শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য পরিচিত বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়। সেজন্য সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে আসামিরা কোনো ধরনের অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না। এ ক্ষেত্রে আসামিদের সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৬ এর (৬) (২) (অ) ধারায় প্রদত্ত সর্বোচ্চ সাজা প্রদানই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং ভাগ্যাহত মানুষের স্বজনরা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।' ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তাদের গুলিতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাও নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনার পর গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। গত ১৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইবু্যনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর (বুধবার) দিন ধার্য করেন। মামলা দায়ের করার পর ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। একই বছর ২৬ নভেম্বর ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে