বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
করোনা মহামারি

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ মৃতু্য

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ১২ এপ্রিল ২০২০, ১০:৩০

একটি সুসংবাদের আশায় সারা বিশ্ব অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, সেটি হলো 'মৃতের সংখ্যা কমে আসছে' এ খবরটি শোনা। কিন্তু কথাটি শোনা তো দূরে থাক, চিন্তাই যেন করা যাচ্ছে না। কারণ, প্রতিদিনই পালস্না দিয়ে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, যা শেষ এক সপ্তাহে হয়েছে দ্বিগুণ। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, গত ৩ এপ্রিল সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার পার হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে উহানে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর প্রায় সাড়ে তিন মাসে মৃতু্য ঘটেছিল ৫০ হাজার মানুষের। কিন্তু পরে মাত্র এক সপ্তাহেই সেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণ। অর্থাৎ, বরাবর এক সপ্তাহের ব্যবধানে, ১০ এপ্রিল মৃতু্য সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে এক লাখ। মৃতু্যর এই পরিসংখ্যানই জানান দিচ্ছে, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি দিনের পর দিন কতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখন প্রতিদিনই কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষের মৃতু্য ঘটছে। কখনো কখনো সেটা সাত থেকে আট হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। জ্যামিতিক হারে কীভাবে মৃতু্য বেড়েছে, সেটা লক্ষ্য করলেই শিউরে উঠতে বাধ্য যে কেউ। ৩ এপ্রিল রাতেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ৫০ হাজার। ৪ এপ্রিল মৃতু্য ৬০ হাজার ছাড়ায়। এরপর ৭ এপ্রিল মৃতের সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৭৫ হাজার। পরের দিনই মৃতু্য ছাড়িয়ে গেছে ৮১ হাজার। শেষ পর্যন্ত ১০ এপ্রিল রাতে, তথা ৫০ হাজার মৃতু্য সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ পর, এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আগামী এক সপ্তাহ পর বিশ্বের পরিস্থিতি কোথায় যায়, কেউ জানে না। কারণ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যাচ্ছে। কোথাও কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাস নিয়ে প্রতিমুহূর্তের হালনাগাদ (আপডেট) তথ্য দেওয়া জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের ওয়েবসাইটে চোখ রাখলেই বোঝা যায়, কত দ্রম্নত আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি কয়েক সেকেন্ড পরপর পরিবর্তন হচ্ছে এই সংখ্যা। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, আক্রান্ত ছাড়িয়ে গেছে ১৭ লাখ। মৃতের সংখ্যাও এক লাখ তিন হাজারের বেশি। সুস্থ হয়েছে তিন লাখ ৮২ হাজার জন। চীনের মূল ভূখন্ড উহানে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। শুরুর দিকে শুধু উহানেই সীমাবদ্ধ ছিল ভাইরাসটির বিস্তার। তারপর ধীরে ধীরে সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং ইরানে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। ইরানে তান্ডব চালাতে চালাতেই ফেব্রম্নয়ারির শেষ দিকে ইতালিতে শুরু হয় করোনার প্রকোপ। মার্চের শুরুর দিকেই ইতালিতে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। এরপর ইউরোপের বাকি দেশগুলো- স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এর উপস্থিতি বাড়তে থাকে আটলান্টিকের ওপারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রেই সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনা আক্রান্ত পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া মৃতু্য ১৮ হাজারের বেশি মানুষের। মৃতের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এখনো রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। সবচেয়ে বেশি মৃতু্য ঘটেছে ইতালিতে। মৃতের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে আক্রান্ত এক লাখ ৫৭ হাজার ৫৩ জন। মৃতু্য হয়েছে ১৫ হাজার ৯৭০ জনের। ফ্রান্সে মৃতু্য হয়েছে ১২ হাজার ২২১ জনের। আক্রান্ত এক লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯ জন। জার্মানিতে আক্রান্ত বেশি, মৃতু্য কম। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ১৯ হাজার ৬২৪ জন। মৃতু্য দুই হাজার ৬০৭ জন। যুক্তরাজ্যেও মৃতু্যর মিছিল অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার মৃতু্য হয়েছে ৯৮০ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা আট হাজার ৯৫৮ জন। ইরানে আক্রান্ত ৬৮ হাজার ১৯২ জন। মৃতু্য হয়েছে চার হাজার ২৩২ জন। বেলজিয়ামে মৃতু্য তিন হাজার ৩৪৬ জন। নেদারল্যান্ডে মৃতু্য হয়েছে দুই হাজার ৫১১ জনের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে