বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দিরাইয়ে করোনা সংকটে দ্রব্যমূল্য পাগলা ঘোড়া

দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

সারাবিশ্বে চলছে মহামারি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রায় সারাদেশই লকডাউন। এরই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে সুনামগঞ্জ জেলা লকডাউন ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ। সরকারের নির্দেশনা মেনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন নিজ ঘরে। এ অবস্থায় কর্মহীন হয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। চৈত্র-বৈশাখ মাসে এমনিতেই হাওর পাড়ের মানুষ থাকেন অভাবে, এর মধ্যে করোনার কারণে কর্মহীন। যদিও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পরিবহণ লকডাউনের আওতার বাইরে, এরপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে দ্রব্যমূল্য যেন এখন পাগলা ঘোড়া। বর্তমানে বহুবিধ সমস্যার অন্যতম দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যের প্রতিনিয়ত দাম বাড়তে থাকায় কিছু মুনাফাশিকারি ও বিত্তশালী বাদ দিলে অবশিষ্ট জনসাধারণের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দুঃখ-দৈন্যে দিশাহারা। পণ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী, নির্দিষ্ট আয়ের চাকরিজীবী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত ও জীবন সংগ্রামে পযুদস্ত মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ছে। এই মহামারির সংকটময় মুহূর্তে পণ্যসামগ্রীর চাহিদা ও জোগানের সমতা রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে করে অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম ঘাটতি তৈরি করে মুনাফা লুটতে না পারে, সেদিকে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী জোরদার করার আহ্বান জানান হাওরের জনপদ দিরাইবাসী। এই দুর্যোগে হাওরবাসীর জন্য সরকারি ত্রাণ খুবই অপ্রতুল উলেস্নখ করে দিরাই পৌর শহরের মজলিসপুর গ্রামের প্রণয় তালুকদার বলেন 'এলাকায় অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া দিনমজুর। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় মানুষ ঘরবন্দি। এই মুহূর্তে গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ১৫-২০ টাকা, রসুনের দরও কেজিতে বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা। দ্রব্যমূল্যে লাগামহীন বৃদ্ধি পাওয়ায় মহাবিপাকে পড়েছি আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরার পাশাপাশি সরকারি ত্রাণ সহায়তা বৃদ্ধির দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে। দিনমজুর আবদুর রউফ ময়না বলেন, ভাইরাসের ভয়ে ঘর থেকে বের হই না, যদিও অভাবের তাড়নায় বের হই, আবার পুলিশ-সেনাবাহিনীর ভয়ে ঘরে ফিরে আসি। জিনিসপত্রের যে দাম ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনবেলা খাওয়া তো দূরের কথা, একবেলা পেট ভরে খেতেই হিমশিম খাচ্ছি।' দিরাই পৌরসভার বাজার মনিটরিং স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ বলেন, পণ্য সরবরাহ থাকার পরও ইদানীং কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তা আমাদের নজরদারীতে রয়েছে, ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করে বাজার মনিটরিং জোরদার করব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে