শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেক্সিট নিয়ে বদলে যাচ্ছে মনোভাব

যাযাদি ডেস্ক
  ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে যেসব ভোটার সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন, তাদের বেশির ভাগই এখন মনে করছেন, বেরিয়ে আসার বদলে থেকে যাওয়াটাই ভালো। ভোটারদের পরিবতির্ত মনোভাবের এই তথ্য উঠে এসেছে ‘ফোকালডাটা কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন’র অনুসন্ধানে। মূলত লেবার পাটির্র সমথর্ক যেসব ভোটার ভেবেছিলেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হলে তাদের অথৈর্নতিক অবস্থার উন্নতি হবে, তাদের ক্ষেত্রেই মতামত পাল্টে যাওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। দুই বছর ধরে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের অথৈর্নতিক ও অন্যান্য শতর্ নিধার্রণ ছাড়াই এটি কাযর্কর হওয়ার শঙ্কার মুখে এখন তারা ভাবছেন, ব্রেক্সিট নিয়ে যে আশা তারা করেছিলেন, তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে ২০১৬ সালের জুন মাসে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। গণভোটে ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় দেন ব্রিটিশ ভোটাররা। এর পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া থেরেসা মে ২০১৯ সালের ২৯ মাচের্র মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন। কী কী শতের্ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাবে, তা নিধার্রণ করতে গিয়ে ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দর কষাকষি চলতে থাকে। একপযাের্য় প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র বিরুদ্ধে ইইউয়ের অনেক শতর্ বিনাবাধায় মেনে নেয়ার কারণ উল্লেখ করে গত জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। তার পরপরই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রস্তাবের শতের্র সঙ্গে একমত হতে না পেরে পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। এখন নতুন গবেষণায় জানা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্যের বেশির ভাগ আসনে ব্রেক্সিটপন্থিরা তাদের অবস্থান পাল্টেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে বরিস জনসনের আসনের ভোটাররাও।

ফোকালডাটা কনজুমার অ্যানালিটিক্সের গবেষকদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের বেশির ভাগ আসনেই এখন ব্রেক্সিটবিরোধী মনোভাবের ভোটারের সংখ্যা বেশি। এ ঘটনা ঘটেছে মূলত সেইসব লেবার পাটির্র সমথর্কদের মধ্যে, যারা ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর ব্রেক্সিট চাইছেন না। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার বিষয়েই এখন তাদের আগ্রহ। ফোকালডাটা কনজুমার অ্যানালিটিক্সের গবেষণায় দুটি ‘ইউগভ’ জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, ব্রেক্সিট সমথর্ক হয়েও এখন আর তা চান না, এমন মত পাল্টানো ভোটারদের সংখ্যা ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে বেশি। সেখানে লেবার পাটির্র শক্ত অবস্থান।

ফোকালডাটার সঙ্গে গবেষণার যৌথ উদ্যোগ নিয়েছিল ব্রেক্সিটবিরোধী সংগঠন ‘বেস্ট ফর ব্রিটেন’ ও বণর্বাদবিরোধী সংগঠন ‘হোপ নট হেইট’। গণভোটের তথ্যের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর কাছে পাওয়া আদমশুমারির তথ্য নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের ৬৩২টি আসনের তথ্য ব্যবহৃত হয়েছে গবেষণায়। এদের মধ্যে ১১২টি আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ইইউ ছাড়ার বদলে এখন থাকার পক্ষে। এতে ইইউ ছাড়ার বিরুদ্ধে আসন সংখ্যা দঁাড়াচ্ছে ৩৪১টিতে। ২০১৬ সালের গণভোটে ২২৯টি আসনের ভোটাররা ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।

৫০ হাজার নমুনার ওপর করা ইউগভের জরিপের ফল গণভোটের ফলের খুব কাছাকাছি ছিল। ফোকালডাটা অবশ্য ১৫ হাজার নমুনার ওপর জরিপ চালিয়েছে। জরিপের এই ফল এমপিদের ব্রেক্সিট বিষয়ে নতুন গণভোটের সিদ্ধান্তটি পযাের্লাচনা করার ক্ষেত্রে নতুন করে উৎসাহ জোগাবে। যদিও ব্রেক্সিটপন্থি এমপিরা মনে করেন না, ভোটারদের মনে এমন কোনো পরিবতর্ন এসেছে, যাতে নতুন গণভোটের প্রয়োজন।

ভোটারদের এই মত পরিবতের্নর ঘটনায় লেবার পাটির্র প্রধান জেরেমি করবিনের ওপর ব্রেক্সিট সমথের্নর বিষয়ে দলীয় অবস্থান পুনবিের্বচনার চাপ বাড়ছে। ব্রেক্সিটের বিষয়ে নতুন গণভোটের দাবিও উত্থাপিত হয়েছে কোনো কোনো মহলে। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আলোচনাকালে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা থেকে সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ‘সানডে টেলিগ্রাফে’ লেখা এক মতামতে থেরেসা জানান, ইইউর সঙ্গে আলোচনায় তার প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় (চেকাসর্ এগ্রিমেন্ট) জাতীয় স্বাথির্বরোধী হয়, এমন কোনো বিষয়ে কোনো সমঝোতা তিনি করবেন না। তার মতে, যারা ব্রেক্সিট প্রত্যাহার চান, তাদের আহŸানে সাড়া দিয়ে তিনি দেশে দ্বিতীয় কোনো গণভোটের আয়োজন করবেন না। এটি হলে তা হবে দেশের গণতন্ত্র ও বিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। সংবাদসূত্র: গাডির্য়ান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<10894 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1