বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
সৌদি রাজকন্যা রিমার তথ্য

নারীদের অভিভাবকত্ব আইনে পরিবতর্ন আনা হচ্ছে

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
রাজকন্যা রিমা সুলতান আল-সোউদ

সৌদি আরবে নারীদের জন্য চালু থাকা অভিভাবকত্ব আইনে পরিবতর্ন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির একজন রাজকন্যা। তবে এই পরিবতের্নর কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি। আরবি ভাষার দৈনিক পত্রিকা ‘ওকাজ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্ভাব্য এই সংস্কারের কথা জানিয়েছেন দেশটির ক্রীড়া পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের আন্ডার সেক্রেটারি রাজকন্যা রিমা বিনতে বন্দর বিন সুলতান আল-সোউদ। তিনি বলেন, সৌদি নারীদের এখন আর চাকরি, গাড়ি চালানো বা পড়াশোনার জন্য অনুমতির দরকার পড়বে না।

কট্টর ইসলামী শাসনব্যবস্থার তেলনিভর্র অথর্নীতির দেশ সৌদি আরবে নারীদের জন্য অভিভাবকত্ব আইন প্রচলিত রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী, নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়াসহ অন্য কাজের আগে অভিভাবকের অনুমতির দরকার পড়ে। গত বছর অথৈর্নতিক নিভর্রতা কমাতে সৌদি যুবরাজ এক সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এর আওতায় দেশটিতে জুন মাসে প্রথমবারের মতো গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছেন নারীরা। তবে অভিভাবকত্ব আইন বহাল থাকায় ওই অনুমতির সুফল পাওয়া নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন অনেকে।

সৌদি রাজকন্যা রিমা জানান, সৌদি সংসদ ‘সুরা কাউন্সিল’ এবং সরকারে থাকা নারীদের মধ্যে অভিভাবকত্ব আইন নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কবে নাগাদ এই আইনে পরিবতর্ন আসবে, এর সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি। তবে শিগগিরই এই পরিবতর্ন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। নারীদের গাড়ি চালানোর মতো কিছু অধিকার দেয়া হয়েছে জানিয়ে রাজকন্যা রিমা বলেন, আরও অনেক অধিকার দেয়া হবে।

সৌদি আরবে কোনো নারী মন্ত্রী নেই। নারীদের যাতায়াত, বিয়ে, এমনকি অস্ত্রোপচারের সময়ও পুরুষের অনুমতি প্রয়োজন হয়। দীঘির্দন ধরেই এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন সৌদি নারীদের একটি অংশ। তাদের ভাষায়, এই আইনের মাধ্যমে তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে আছেন।

সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা দূর হলেও সমাজের অচলায়তন দূর হয়নি। সেখানকার সমাজে বিরাজিত পুরুষতান্ত্রিক মনোভঙ্গি, অভিভাবকত্ব-সংক্রান্ত আইনের বাধা আর যৌন নিপীড়নের ভীতি ডিঙিয়ে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসতে নিঃসংশয়ী হতে পারছেন না নারীরা। হয়রানির ভয়ে সৌদি নারীদের অনেকে এখনো রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছেন না। পরিবার থেকেও বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে সৌদি পুরুষদের অনেকে নারী চালকদের নিয়ে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। নারী চালকদের কারণে দুঘর্টনার সংখ্যা বাড়বে দাবি করে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছেন তারা।

মানবাধিকারকমীর্রা মনে করছেন, সৌদি আরবে কঠোর ‘অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা’র বিলোপ না হওয়া পযর্ন্ত গাড়ি চালানোর অনুমতির বিষয়টি নিছক প্রতীকীই থেকে যাবে। অভিভাবকত্ব ব্যবস্থার আওতায় নারীদের ভ্রমণ, স্কুলে যাওয়া, চিকিৎসাসহ জীবনের বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে তাদের কাছের পুরুষ অভিভাবকদের কাছ থেকে (স্বামী, বাবা কিংবা ভাই) অনুমতি নিতে হয়। তালাকপ্রাপ্ত কিংবা বিধবা মাকে থাকতে হয় তার কিশোর সন্তানের অভিভাবকত্বের অধীনে। সৌদি অধিকার রক্ষা কমীের্দর দাবি, নারী অধিকারের লড়াইয়ের জন্য অভিভাবকত্ব একটি বড় ইস্যু। পরিবার থেকে অনুমতি না পেলে নারীরা তখন আর গাড়ি চালাতে পারবেন না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে