মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ধূলিঝড়ে ঢাকা পড়েছে মঙ্গল বিপদে ‘অপরচুনিটি’

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ধূলিঝড়ে ঢেকে গেছে লালগ্রহ মঙ্গল। এতে বিপদে রয়েছে নাসার মঙ্গলযান ‘অপরচুনিটি’। কারণ ‘অমঙ্গলজনক’ কিছু না হয়ে যায়, এই চিন্তায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

গত ১৫ বছর ধরে লালগ্রহে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে অপরচুনিটি। তার ঘুরে দেখা হয়ে গেছে লালগ্রহের এক-চতুথার্ংশ। বিজ্ঞানীদের আশা, আরও বেশ কিছু দিন কাজ চালিয়ে যেতে পারবে সে। কিন্তু ঝড় কবে থামবে, কবে সূযের্র আলো গ্রহের মাটি ছেঁাবে, অপরচুনিটির ভবিষ্যৎ নিভর্র করছে তার ওপর। কারণ, সৌরশক্তিতে চলে অপরচুনিটি। ঝড়ের কারণে মঙ্গলযানের সোলার প্যানেলে সূযের্র আলো পেঁৗছাচ্ছে না। ফলে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে যান। দুযোর্গ কাটতে সপ্তাহ, এমনকি মাসও ঘুরে যেতে পারে।

গত মে মাসের শেষে ঝড় শুরু হয়েছে। অপরচুনিটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক (প্রজেক্ট ম্যানেজার) জন ক্যালাস বলেন, ‘আমাদের হাতে কিছুই নেই। ভয়াবহ ঝড়। কত দিনে থামবে, জানা নেই। মঙ্গলের আকাশ যখন পরিষ্কার হবে, তখনো পরিস্থিতি কেমন থাকবে, জানা নেই।’ ১২ জুন গভীর রাতে নাসার বিশেষজ্ঞরা অপরচুনিটির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।

২০০৩ সালে জোড়া মঙ্গলযান পাঠিয়েছিল নাসাÑ ‘অপরচুনিটি’ ও ‘স্পিরিট’। ২০০৪ সালের মঙ্গলের মাটিতে নামে যান দুটি। স্পিরিট বেশি দিন কাজ করতে পারেনি। অপরচুনিটি এখনো তার কমর্কাÐ চালিয়ে যাচ্ছে। নাসার আরও এক যান ‘কিউরিওসিটি’ও মঙ্গলে রয়েছে। কিন্তু তাকে নিয়ে অতটা চিন্তায় নেই বিজ্ঞানীরা। প্রথমত. তার বয়স কম, দ্বিতীয়ত. গ্রহের অন্য প্রান্তে রয়েছে সে।

ধূলিঝড় মঙ্গলে নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই হয়। যখন হয়, বায়ুমÐলের ১০-২০ কিলোমিটার ধুলার আস্তরণে ঢেকে যায়। দিনের বেলায় অন্ধকার নেমে আসে। মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরতে থাকা যানগুলোর তাই বিপদ কম নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধুলায় হয়তো চাপা পড়ে যাবে না যান। চাকাও হয়তো আটকে যাবে না। মূল চিন্তা, অপরচুনিটির কিছু বিশেষ যন্ত্রাংশ নিয়ে। তা ছাড়া মঙ্গলযানের ব্যাটারির ক্ষমতাও কমে এসেছে। একটিমাত্র ঘড়ি কাজ করছে। সেটি ‘অফলাইন’ হয়ে গেলে সময়ের হিসাব গুলিয়ে ফেলবে। পৃথিবীতে আর খবর পাঠাতে পারবে না অপরচুনিটি।

তবে এবারই প্রথম নয়। ২০০৭ সালেও এক ভয়াবহ ধূলিঝড়ের কবলে পড়েছিল অপরচুনিটি। ফলে বেশ কিছু দিন কাজ করতে পারেনি। কিন্তু এবার মঙ্গলযানে সঞ্চিত শক্তি (চাজর্) খুবই কম। সেটাই আশঙ্কার অন্যতম কারণ। নাসার ‘মাসর্ এক্সপ্লোরেশন প্রোগ্রাম’-এর ডিরেক্টর জিম ওয়াটজিন বলেন, ‘মনে রাখবেন, আমরা যে যানটির কথা বলছি, সেটার বয়স ১৫ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু বানানো হয়েছিল মাত্র ৯০ দিনের জন্য!’

উল্লেখ্য, মঙ্গল সৌরজগতের শেষ পাথির্ব গ্রহ। অথার্ৎ, এরও পৃথিবীর মতো ভ‚ত্বক রয়েছে। এর অতি ক্ষীণ বায়ুমÐল রয়েছে, এর ভ‚ত্বকে রয়েছে চঁাদের মতো অসংখ্য খাদ, আর পৃথিবীর মতো আগ্নেয়গিরি, মরুভ‚মি এবং মেরুদেশীয় বরফ। সৌরজগতের সবর্বৃহৎ পাহাড় এই গ্রহে অবস্থিত। এর নাম অলিম্পাস মন্?স। সবর্বৃহৎ গভীর গিরিখাতটিও এই গ্রহে, যার নাম ‘ভ্যালিস মেরিনারিস’। মঙ্গলের ঘূণর্ন কাল এবং ঋতু পরিবতর্নও অনেকটা পৃথিবীর মতো। তাই প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা এখানেই বেশি। সংবাদসূত্র : ইউএসএ টুডে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে