বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটে মোদির চ্যালেঞ্জ বাড়ছে

বিশ্লেষণ
যাযাদি ডেস্ক
  ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের লোকসভা নিবার্চনে বিপুল বিজয় পেয়েছিলেন ?‘আচ্ছে দিন’ বা ‘শুভ দিন আসছে’ ¯েøাগান দিয়ে। চার বছর পর আগামী মে মাসে আবার তাকে নিবার্চনী আসরে নামতে হচ্ছে। তবে এবার তাকে ও তার দল বিজেপিকে চাকরির অভাব, কৃষি পণ্যের মূল্য হ্রাস, মজুরি কমে যাওয়া, কর সংস্কার, নোট বাতিলকরণ ইত্যাদি জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে।

অথৈর্নতিক প্রবৃদ্ধি সত্তে¡ও চলতি বছর ভারতীয় মুদ্রা রুপির মান আশঙ্কাজনকহারে পড়ে গেছে। এর ফলে আমদানি করা জ্বালানির দাম বাড়াতে হচ্ছে। এতে করে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা ভারতে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এমন কি এই ইস্যুতে ভারত বন্ধও পালিত হয়েছে বিরোধী দলগুলোর ডাকে। এতে সাড়া মিলেছিল বেশ।

মধ্য ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভমাদা গ্রামের ৫২ বছর বয়সী মিসরি লাল বলেন, ‘আমাদের জীবনের কোনো উন্নতি হয়নি। আমরা দু’বেলা খেতে পারি, কিন্তু সাবান আর ডিটারজেন্ট বঁাচাতে হিমশিম খেতে হয়।’ তিনি একটি সয়াবিন খামারে কাজ করে দিনে দুই ডলার আয় করেন।

ভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্রভ‚মি উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে সাক্ষাৎকার নিয়ে দেখা গেছে, অনেক লোকই মোদি সরকারের প্রতি হতাশ। তবে ১৩০ কোটি লোকের দেশে ঠিক কতজন হতাশ, সেটা নিধার্রণ করা কঠিন। ফলে আগামী নিবার্চনে মোদি কেমন করবেন, সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি রয়ে গেছে। অনেক ভোটার তাদের পক্ষেই আছে। মোদির সহকারীরা মনে করেন, আগামী নিবার্চনে তাদের সমস্যা হবে না। তারা আরও বলছেন, ২০১৮ সালের শেষ দিকে হওয়া তিনটি বড় রাজ্যের নিবার্চনও ইঙ্গিত দিচ্ছে, সাধারণ নিবার্চনে তারা ভালো করবে। নিবার্চনী জরিপগুলো পূবার্ভাস দিচ্ছে, মোদি আবার ক্ষমতায় ফিরছেন। তবে বিরোধী ও সরকারি দলের মধ্যে ব্যবধান হ্রাস পাবে।

অবশ্য, ‘আচ্ছে দিন’ পরিভাষাটি সামাজিক মাধ্যমে এখন বেশ ট্রোল হচ্ছে। ফেসবুকের ওয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জিং প্ল্যাটফমের্ একটি লোককে টেলিস্কোপে ‘শুভ দিন’ খুঁজতে দেখা যাচ্ছে। আরেকটিতে দেখা যায়, মোদি তঁাতে ‘আচ্ছে দিন’ বুনছেন।

বিজেপির অনেক নেতা বলছেন, ছোট ছোট শহর বা গ্রামের অবস্থা সম্পকের্ তারা অবগত নন। আর সেখানেই বাস করে ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ লোক। যেমন কৃষিশ্রমিক লাল নিজে দীঘর্ দিন ধরে বিজেপির সমথর্ক। তবে এবার মত পরিতর্ন করতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বিজেপিকে ভোট দেই। কিন্তু লোকজন এবার ক্রুদ্ধ। এখন বিজেপিকে ভোট দিতে চায় না কেউ।’

মোদির প্রশাসনও স্বীকার করেছে, কৃষকরা সমস্যায় আছেন। অথচ কৃষি খাতেই ভারতের সবচেয়ে বেশি লোক নিয়োজিত। এই খাতেই দেশটির ২৬৩ মিলিয়ন লোক বা ৫৫ ভাগ লোক নিয়োজিত। কিন্তু ভারতজুড়ে গ্রামীণ মজুরি কমে গেছে। নিমার্ণ খাতে তেজিভাবের ফলে মজুরি বাড়লেও ২০১৬ সালের নভেম্বরে উচ্চমূল্যের নোট বাতিল করার ফলে সেখানেও ধস নেমে আসে। কালো টাকা উচ্ছেদের কথা বলে নোট বাতিল করেছিলেন মোদি।

নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে তরুণদের ভোট টেনেছিলেন চাকরির প্রস্তাব দিয়ে। কিন্তু তারাই এখন সবচেয়ে হতাশ। রাজধানী দিল্লির উত্তরের শহর পানিপথে বস্ত্রশ্রমিকরা জানাচ্ছেন, জটিল জিএসটি ব্যবস্থার সঙ্গে কিছুতেই খাপ খাওয়াতে না পেরে শত শত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

তবে বিজেপির মুখপাত্র গোপাল কৃষ্ণ আগারওয়াল বলেন, খুব অল্প সময়ে সরকার সব সমস্যার সমাধান করে দেবেÑ এমনটা ভাবা ঠিক নয়। তিনি বলেন, ভারত স্বাধীন হয়েছে ৭০ বছর আগে। গত ৬৫ বছরের সমস্যাবলী সাড়ে চার বছরে সমাধান হয়ে যাবেÑ এমনটা আশা করা ঠিক নয়।

বিজেপি আরেকটি কারণে আশাবাদী। সেটা হলো বিরোধী শিবিরে দুবর্লতা। বিরোধী দলগুলো আগামী নিবার্চনেও বিভক্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে মোদির লাভই হবে। তবে ২০১৪ সালে যে জোয়ার ছিল, তেমনটা এবার নেই। ভোটের মাঠে নামলে অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। ফলে আগামী ভোটে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন মোদি। সংবাদসূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18378 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1