শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্রচুক্তি ছিন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র

যাযাদি ডেস্ক
  ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক পরমাণু অস্ত্রচুক্তি ছিন্ন করবে বলে নিশ্চিত করেছেন মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার নেভাডায় এক প্রচারণা শোভাযাত্রা শেষে বক্তৃতাকালে ট্রাম্প এ কথা বলেন। ‘দি ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোসের্স ট্রিটি’ বা আইএনএফ নামের ওই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ও সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা মিখাইল গবাের্চভের মধ্যে ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সংবাদসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা, রয়টাসর্

কয়েক দশকের পুরনো চুক্তিতে পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধের কথা বলা হয় এবং ভ‚-উৎক্ষেপিত মধ্যমসারির (৫০০ কিলোমিটার থেকে সাড়ে পঁাচ হাজার কিলোমিটার আওতার) ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বহু দিন ধরেই দুই দেশ একে অন্যের বিরুদ্ধে এই চুক্তি লঙ্ঘনের কথা বলে আসছিল।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ‘এসএস-২০’ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। মাকির্ন মিত্ররা তখন যুক্তরাষ্ট্রের পারসিং ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। ওই ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়। পরে এই আইএনএফ চুক্তির মাধ্যমেই পরিস্থিতি শান্ত হয়।

নাভাডার এলকোকে বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া এই চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করছে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছি এবং এটি থেকে বের হয়ে যাচ্ছি।’ এর প্রকৃত অথর্ কী, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের এসব অস্ত্র উৎপাদন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কেন প্রেসিডেন্ট ওবামা এটি নিয়ে মধ্যস্থতা করেননি। কিংবা বেরিয়ে আসেননি। তারা অনেক বছর ধরে এটি (চুক্তি) লঙ্ঘন করে আসছে।’ চুক্তিটি থেকে সরে আসতে ইউরোপের নেতারা সে সময় ওবামাকে চাপ দিলেও ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা পুনরায় শুরু হতে পারেÑ এ আশঙ্কা থেকে তিনি এতে সায় দেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রাশিয়া আইএনএফ চুক্তির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ‘নোভাতর ৯এম৭২৯’ নামে নতুন একটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানিয়েছে। ন্যাটোর কাছে রুশ এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘এসএসসি-৮’ নামে পরিচিত। নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র মস্কোকে স্বল্প সময়ের নোটিশেই ন্যাটোর সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে হামলার সুযোগ করে দেবে বলে আশঙ্কা ওয়াশিংটনের।

ট্রাম্প এমন এক সময় এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বললেন, যখন তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেগের্ই ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মস্কো রয়েছেন। এ বছরের শেষ দিকে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক আয়োজনের জন্যই বোল্টন রাশিয়া সফর করছেন।

অপরদিকে, চুক্তি লঙ্ঘনের কথা অস্বীকার ছাড়া নিজেদের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সম্পকের্ প্রায় তেমন কিছুই বলেনি রাশিয়া। তবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বাতার্ সংস্থা ‘রিয়া নভোস্তি’ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলেছে, ‘বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি হওয়ার বাসনায় এককেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থার স্বপ্নে তাড়িত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।’

শুক্রবার ‘নিউইয়কর্ টাইমস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএনএফ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার মূল লক্ষ্য রাশিয়া নয়, চীন। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিংয়ের বিস্তৃত সামরিক উপস্থিতির কারণেই ওয়াশিংটনের চুক্তি থেকে সরে আসার এই ভাবনা। আইএনএফে স্বাক্ষরকারী দেশের তালিকায় না থাকার কারণে চীনের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানাতে বাধা নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18810 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1