বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
বিশেষ প্রতিবেদন

কোনো খেঁাজই নেই তিন যুবরাজের

খাশোগি পরিণতি!
যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
যুবরাজ তুকির্, সুলতান ও সাইফ আল-নাসের

২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পযর্ন্ত ইউরোপে বসবাসরত তিনজন সৌদি রাজপুত্র নিখেঁাজ হয়ে যান। যাদের প্রত্যেকেই সৌদি সরকারের সমালোচক ছিলেন। তাদের তিনজনকেই অপহরণ করে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল এমন প্রমাণও রয়েছে। তারপর থেকে তাদের সম্পকের্ আর কিছু জানা যায়নি।

সুলতান বিন তুকির্ বিন আবদুল আজিজ

২০০৩ সালের ১২ জুন সকালের ঘটনা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের বাইরে একটি প্রাসাদে যান সৌদি যুবরাজ সুলতান বিন তুকির্ বিন আব্দুলআজিজ। প্রাসাদটি যুবরাজের বংশধর প্রয়াত সৌদি বাদশাহ ফাহাদের। বাদশাহ ফাহাদের ছেলে যুবরাজ আবদুল আজিজ বিন ফাহাদের সঙ্গে সকালের নাশতা খেতে প্রাসাদে গিয়েছিলেন সুলতান। এক পযাের্য় সৌদি সরকারের সমালোচক সুলতানকে নিজ দেশ সৌদি আরবে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন আবদুল আজিজ।

সুলতান ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তখন আবদুলআজিজ একটি ফোন করতে যান। তখন কক্ষে থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি, সৌদি আরবের ইসলাম ধমর্ বিষয়ক মন্ত্রী শেখ সালেহ আল-শেখও কক্ষ ছেড়ে চলে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখোশ পরা কয়েকজন ঘরে ঢুকে এবং সুলতানকে চেতনাহীন করে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। অজ্ঞান অবস্থাতেই তাকে জেনেভা বিমানবন্দরে নেয়া হয় এবং সেখানে অপেক্ষারত একটি বিমানে ওঠানো হয় তাকে।

অনেক বছর পর সুইজারল্যান্ডের একটি আদালতে ঠিক এভাবেই সেদিনের ঘটনা বণর্না করেন সুলতান। সৌদি আরবে ফেরত গিয়ে সুলতানের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় তাকে কারাগারে এবং ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দীঘর্সময় কারাগারে এবং বাড়িতে আটক থাকার পর সুলতানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে রাজি হয় রাজপরিবার।

২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সুইস আদালতে আবদুল আজিজ বিন ফাহাদ এবং শেখ সালেহ আল-শেখের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেন সুলতান। প্রথমবার কোনো সৌদি রাজপরিবারের সদস্যের আরেক রাজপরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে পশ্চিমা আদালতে মামলা দায়েরের ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

সেখান থেকে চিকিৎসার উদ্দেশে ইউরোপ যান সুলতান। ইউরোপে পেঁৗছানোর পর থেকেই সৌদি সরকারের সমালোচনা করে বিভিন্ন ইউরোপীয় গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করেন সুলতান। সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের সদস্য ও সরকারি কমর্কতাের্দর দুনীির্ত নিয়ে কথা বলেন তিনি। এরপর ২০১৬ সালে সুলতান এবং তার ১৮ জন সফরসঙ্গীকে প্যারিস থেকে কায়রো নিয়ে যাওয়া হবে বলে একটি বিমানে উঠিয়ে রিয়াদে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে আর কোনো খেঁাজ পাওয়া যায়নি সুলতানের।

যুবরাজ তুকির্ বিন বান্দার

যুবরাজ তুকির্ বিন বান্দার একসময় সৌদি পুলিশের মেজর ছিলেন, যিনি রাজপরিবারের সদস্যদের পুলিশি সেবা দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু উত্তরাধিকারের দ্ব›েদ্ব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়লে একসময় কারাদÐ দেয়া হয় তাকে।

জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ২০১২ সালে প্যারিসে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়েই সৌদি আরবের সংস্কার চেয়ে ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেন তিনি। যুবরাজ সুলতানের মতো তুকিের্কও আলোচনার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সৌদি কতৃর্পক্ষ। তবে তুকির্র মন গলাতে পারেননি সৌদি সরকারি কমর্কতার্রা। ২০১৫ সালের জুলাই মাস পযর্ন্ত ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে যান তুকির্। কিন্তু সেই বছরের শেষদিকে হঠাৎই উধাও হয়ে যান তিনি। তারপর এখন পযর্ন্ত রাজপুত্র তুকির্ বিন বান্দারের আর কোনো খেঁাজ মেলেনি।

যুবরাজ সউদ বিন সাইফ আল-নাসের

তুকির্ নিখেঁাজ হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি সময় একই ধরনের পরিণতি হয় আরেক যুবরাজ সউদ বিন সাইফ আল-নাসেরের। ইউরোপে বিলাসবহুল জীবনযাপনে উৎসাহী ছিলেন এই যুবরাজ। ২০১৪ সাল থেকে টুইটারে সৌদি রাজতন্ত্রকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেয়া শুরু করেন। পরের বছর বাদশাহ সালমানকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশে অজ্ঞাতনামা একজন সৌদি যুবরাজের লেখা দুটি চিঠি ফঁাস হলে ওই যুবরাজের প্রতি সমথর্ন প্রকাশ করেন।

এক টুইটে ওই চিঠির বিষয়বস্তুকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে সৌদি জনগণকে আহŸান জানান সউদ। এর কিছুদিন পর থেকেই তার টুইটার অ্যাকাউন্টটি নীরব হয়ে যায়। সংবাদসূত্র : বিবিসি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<19509 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1