শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরে ইন্দোনেশিয়ার বিমান বিধ্বস্ত

১৮৮ আরোহীর সবারই মৃত্যুর আশকা, ভেসে উঠছে একের পর এক মরদেহ বিমানটি নতুন ছিল, তাই কারণ খেঁাজা হচ্ছে দুঘর্টনার বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ছিলেন ভারতীয়
যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
জাকাতার্ বিমানবন্দরে স্বজনদের আহাজারি

ইন্দোনেশিয়ার জাকাতার্ থেকে সুমাত্রা দ্বীপে যাওয়ার সময় সোমবার একটি যাত্রীবাহী বিমান সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। এদিন সকালে ১৮৮ আরোহী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকাতার্ থেকে উড্ডয়নের একটু পর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। কমর্কতার্রা বলছেন, উড্ডয়নের ১৩ মিনিটের মাথায় লায়ন এয়ারের ফ্লাইট জেটি-৬১০ এর সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি জাকাতার্ থেকে সুমাত্রার পাংকাল পিনাং যাচ্ছিল। সংবাদসূত্র : বিবিসি

কমর্কতার্রা জানিয়েছেন, বিমানে যাত্রী ছিলেন ১৮১ জন। এর মধ্যে তিনটি শিশুও রয়েছে। এছাড়া ফ্লাইটে দুজন পাইলট এবং পঁাচজন কেবিন ক্রু ছিলেন। ১৮৯ জন আরোহীর মধ্যে এখনো কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। তবে উপক‚ল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দেহাবশেষ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকমীর্রা। আর সময় যত যাচ্ছে সাগরে ভেসে উঠছে দেহাবশেষ। তাই ধারণা করা হচ্ছে, বিমানের সবাই দুঘর্টনায় নিহত হয়েছেন। টুইটে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে পানিতে বিমানের ধ্বংসবাশেষ এবং তেলও ভাসতে দেখা গেছে।

এক টুইটার বাতার্য় ইন্দোনেশিয়ার ‘ন্যাশনাল সাচর্ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সি’ (অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা) জানিয়েছে, যাত্রীদের বিভিন্ন ব্যবহাযর্ সামগ্রী সাগরে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্সও রয়েছে। সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ সাইয়াগু বলেছেন, ‘এই ঘটনায় কেউ জীবিত আছে কিনা আমরা নিশ্চিত নই। আশা করছি, প্রাথর্না করছি, কিন্তু নিশ্চিত নই।’

এই রিপোটর্ লেখা পযর্ন্ত ঘটনাস্থল থেকে বিমান যাত্রীদের বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হচ্ছিল। এছাড়া আশপাশের এলাকায় এসব সামগ্রী ছড়িয়ে পড়ার খবরও পাওয়া গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সমুদ্রের ২০ থেকে ৪০ মিটার গভীরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। কমর্কতার্রা জানান, লায়ন এয়ার ফ্লাইটের ওই বিমানটি প্রায় নতুন ছিল। এ রকম নতুন একটি বিমান বিধ্বস্তের এমন বড় ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম।

ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার অভিযান পরিচালনাকারী কমর্কতার্ বামবাং সুরিয়ো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের মূল ধ্বংসাবশেষটি খুঁজে পাওয়া দরকার। এখন পযর্ন্ত যতগুলো দেহাংশ খুঁজে পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে আমার ধারণা, দুঘর্টনায় কেউই বেঁচে নেই।’

লায়ন এয়ারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটির পাইলট ও কো-পাইলটের ১১ হাজার ঘণ্টারও বেশি উড্ডয়ন অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়া বিমানটিতে শিক্ষানবীশ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ছিলেন। তাই বিমানটি কী কারণে বিধ্বস্ত হলো, তা বোঝার জন্য এখন সেটির ককপিট ভয়েস রেকডার্র এবং ফ্লাইট ডাটা রেকডার্র খেঁাজাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। ২০১৩ সালেও লায়ন এয়ারলাইন্সের একটি বিমান যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে সাগরে জরুরি অবতরণ করেছিল। লায়ন এয়ারলাইন্স ইন্দোনেশিয়ার কম খরচের জনপ্রিয় বিমান সংস্থা। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ১৬২ জন আরোহী নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুরগামী ‘এয়ার এশিয়া’র একটি বিমান জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছিল।

বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ছিলেন ভারতীয়

ইন্দোনেশিয়ার জাকাতার্ বিমানবন্দর থেকে ওড়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে যে বিমানটি সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে, তার চালকের আসনে ছিলেন একজন ভারতীয় নাগরিক। ভাব্যে সুনেজা (৩১) নামে বিমানের ওই পাইলট দিল্লির ছেলে। সাত বছর আগে তিনি ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারে যোগ দেন, তখন থেকে জাকাতাের্তই থাকতেন।

লায়ন এয়ার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুঘর্টনাগ্রস্ত বিমানটির ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করছিলেন ভাব্যে সুনেজা। তার কো-পাইলট ছিলেন হারভিনো, সঙ্গে ছিলেন ছয়জন ক্রু বা বিমানকমীর্। সুনেজার ছয় হাজার ঘণ্টারও বেশি বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। কো-পাইলট হারভিনোও পঁাচ হাজার ঘণ্টারও বেশি বিমান চালিয়েছেন বলে ওই এয়ারলাইনের বিবৃতিতে জানানো হয়।

ভাব্যে সুনেজার ‘লিঙ্কড ইন’ প্রোফাইল থেকে জানা গেছে, তার স্কুলজীবনের পড়াশোনা দিল্লিতেই। পূবর্ দিল্লির ময়ূর বিহার এলাকায় একটি নামী বেসরকারি স্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। বেল এয়ার ইন্টারন্যাশনাল থেকে তিনি পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<20021 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1