রাখাইন থেকে সামরিক অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ভ‚মিকা অত্যন্ত ধীরগতির বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেস। যে অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল তা না হওয়ার কারণে হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি। শুক্রবার নিউ ইয়কের্ জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন মহাসচিব। সংবাদসূত্র: রয়টাসর্
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূবর্-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধষর্ণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় জাতিগত নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের একটি সমঝোতা হয়েছে। পরে জাতিসংঘের শরণাথীির্বষয়ক সংস্থার সঙ্গেও রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে মিয়ানমার। কিন্তু এখন পযর্ন্ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে ব্রিটিশ বাতার্ সংস্থা রয়টাসের্র সাংবাদিক মহাসচিবের কাছে জানতে চান, সংকট শুরুর দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো উল্লেখযোগ্য শরণাথীর্ রাখাইনে ফেরত যায়নি। নিরাপত্তা পরিষদ পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে এ বিষয়ে সবের্শষ কবে কথা হয়েছে? সু চিকে কী বলেছেন তিনি? সাংবাদিকের প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিয়েছেন মহাসচিব। তিনি বলেন, সবের্শষ কথা বলার পর বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে গেছে। আমার কথা সব সময়েই এক। আস্থা ও বিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এটা যে শুধু ‘ফিজিক্যাল’ পুনগর্ঠনের বিষয় তা নয়, এটা হলো সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে পুনজার্গরণের বিষয়। সরকারের শক্তিশালী প্রতিশ্রæতির বিষয়, যেটা হলো সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে যতটা সম্ভব পুনরেকত্রীকরণ ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা দেয়া।
মহাসচিব হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য হলো, পরিস্থিতি যেমন হওয়ার কথা ছিল এখনো তেমন হয়নি। সব কিছু চলছে খুবই ধীরগতিতে। যদি এই সমস্যার মূল কারণ সমাধান করতে ব্যথর্তা আসে তাহলে সহিংসতা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এমনটা আমরা মিয়ানমারে সম্প্রতি দেখেছি। তাই আমি মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পকের্র অগ্রগতিতে ঘাটতির বিষয়ে এবং এসব মানুষের দুভোের্গর বিষয়ে ভীষণ রকম হতাশাগ্রস্ত। বিশেষ করে, চরম, অত্যন্ত চরম অবস্থার মধ্যে এখন বাংলাদেশে বসবাস করছেন এ সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ। আমি তাদেরকে ভুলে যেতে পারি না। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যপের্ণর বিষয়ে গুরুত্ব তুলে ধরে অ্যান্থোনিও গুতেরেস বলেন, আমরা চাই এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে যাতে তারা স্বেচ্ছায় ফিরে যান।