একসময় বিশ্লেষকরা মনে করতেন যে সিরিয়া বা লেবাননের পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ইসরাইল আর ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা যতই তীব্র হোক বা বিক্ষিপ্ত আক্রমণের ঘটনা যতই ঘটুক, একেবারে সরাসরি যুদ্ধ বেধে যাওয়া- সেটা হয়তো হবে না। কিন্তু ইসরাইলের উত্তর সীমান্ত এলাকার কৌশলগত প্রেক্ষাপট দ্রæত বদলে যাচ্ছে। সোমবার রাতে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের আশপাশে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১১ জন সরকারপন্থি যোদ্ধা নিহত হওয়ার ঘটনাকে এ আলোকেই দেখতে হবে। ইসরাইল সাধারণত সিরিয়ার ভেতরে তাদের আক্রমণ চালানোর কথা খুব একটা স্বীকার করে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা অভিযান শুরু হতেই তা টুইট করে জানিয়ে দিয়েছে।
বিশ্লেষক জোনাথর্ন মাকার্স বলেন, সেখানে সক্রিয় যেসব প্রধান শক্তি তারা নতুন পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলতে চেষ্টা করছে। ইসরাইলের জন্য এ অঞ্চলে ইরানি প্রভাব মোকাবিলা বহু পুরনো এজেন্ডা। ইরানের নেতারা ইহুদি রাষ্ট্রটির ঘোরতর বিরোধী এবং তারা ইসরাইলকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার কথা বলেছেন। ইসরাইল বিরোধী অনেক উগ্র গোষ্ঠীকে সমথর্নও দিচ্ছেন। তাদের পরমাণু কমর্সূচিই যে শুধু ইসরাইলের মাথাব্যথার কারণ তা নয়Ñ ইরানের হাতে আছে দীঘর্পাল্লার এবং জাহাজ ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্রের মতো উন্নত অস্ত্রও। এসব অস্ত্র লেবাননের হিজবুল্লাহকে দিয়েছে ইরান। সিরিয়ায় ইরানের নিয়মিত বাহিনীর সৈন্য, কমর্কতার্ ও সামরিক উপদেষ্টা ছাড়াও কুদস নামে মিলিশিয়া বাহিনীও আছে - যারা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। সিরিয়ায় যুদ্ধে আসাদের সমথের্ন ইরান সমথির্ত একাধিক বাহিনী এখন সেখানে সক্রিয় আর তাই তারা এখন ইসরাইলের সীমান্তের খুব কাছে চলে এসেছে।
প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ সিরিয়ার ক্ষমতায় টিকে গেছেন, এবং সেটা প্রধানত ইরানের সমথের্নই। মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার মাটি থেকে হাজারদুয়েক মাকির্ন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়ার সাথে ইসরাইলের উচ্চ পযাের্য়র যোগাযোগ আছে। গত সপ্তাহেও রুশ কমর্কতার্রা ইসরাইল সফর করেছে। রাশিয়া যদিও বাশার আসাদের সমথর্ক- কিন্তু তারা সিরিয়ায় ইরানী প্রভাব কমাতে বা উচ্ছেদ করতে কোন চাপ প্রয়োাগ করছে না। ইসরাইলিরা বলছে, সিরিয়ার ভেতরে সম্প্রতি অস্ত্রগুদাম, ব্যারাক, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি তৈরি করেছে ইরান।