একবারেই শেষ নয়। নিজের ভোট ঠিক জায়গায় না পড়লে দ্বিতীয়বারও ইভিএমের সাহায্যে এবার ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন ভারতীয় ভোটাররা। আর এ সুযোগ মিলবে ভোটার 'ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল'র মাধ্যমে। সংক্ষেপে যার নাম 'ভিভিপ্যাট'। এবারের ভোটের হাওয়ায় এটি রং ছড়াচ্ছে। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, দ্য হিন্দু
ভারতের নির্বাচন কমিশন চায়, ভোট হোক সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অবাধ। নাগরিকরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিয়ে সরকার নির্বাচিত করুক। সেক্ষেত্রে ভোটারের ভুলবশত বা প্রযুক্তিগত ত্রম্নটিতে ভোটটি পছন্দের প্রার্থীর ঝুলিতে না পড়লে সেটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এই অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি এড়াতে 'ভিভিপ্যাট' প্রযুক্তির সাহায্য নেয়া হচ্ছে। যে যন্ত্রও ভোটারকে দেখিয়ে দেবে, তার ভোটটি ঠিক কোথায় পড়ল।
ইভিএমের পাশেই লাগানো থাকবে ভিভিপ্যাট যন্ত্রটি। ভোটার ইভিএমে কোনো প্রার্থীকে ভোট দেয়া মাত্র ভিভিপ্যাটে সেই প্রার্থীর নাম ও চিহ্নের পাশে আওয়াজ হবে। আলো জ্বলে উঠবে। বেরিয়ে আসবে একটি কাগজের স্স্নিপ, তাতে উলেস্নখ করা থাকবে ভোটটি কোনো প্রার্থীর ঝুলিতে পড়ল। সাত সেকেন্ড পর স্স্নিপ একটি বাক্সে জমা হয়ে যাবে। ওই সাত সেকেন্ডের মধ্যে ভোটার স্স্নিপ দেখে নিশ্চিত হয়ে যেতে পারবেন, তার ভোট পছন্দের প্রার্থী পেলেন কিনা। অর্থাৎ, ভোটদানের সঙ্গে সঙ্গেই যাচাই প্রক্রিয়া।
এক্ষেত্রে যাচাইয়ে গরমিল বেরোলে শোধরানোর সুযোগও মিলবে। যাকে বলা হচ্ছে 'টেস্ট ভোট'। কমিশন সূত্রে খবর, যদি কোনো ভোটার ভোট দেয়ার পর মনে করেন, তিনি যাকে ভোট দিয়েছেন, তার নামে ভোট পড়েনি। ভোট অন্য প্রার্থীর নামে পড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে তিনি ফের ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন। তবে দ্বিতীয়বার তাকে ভোট দিতে হবে প্রিসাইডিং অফিসার এবং ভোটকর্মীদের উপস্থিতিতে।
এই প্রক্রিয়াকেই নির্বাচন কমিশনের কথায় বলা হচ্ছে 'টেস্ট ভোট'। কিন্তু ভোটকর্মীর উপস্থিতিতেও যদি প্রমাণ হয়, যে প্রার্থীকে তিনি ভোট দিচ্ছেন, সেখানে ভোট পড়ছে না, তখন ওই কেন্দ্রের ভোট তখনকার মতো বন্ধ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ধরে নেয়া হবে ভিভিপ্যাট এবং ইভিএমে প্রযুক্তিগত ত্রম্নটি রয়েছে।
কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিবারই ভোটের পর নানা অভিযোগ উঠতে থাকে ইভিএম নিয়ে। অভিযোগ ওঠে, ভোটাররা যাকে ভোট দিয়েছেন, সেখানে ভোট না পড়ে অন্যখানে পড়েছে। এবার সেই অভিযোগ যাতে না ওঠে, সে কারণেই নতুন এই পদ্ধতি।
কিন্তু ভোট একবার পড়ে গেলে তাতো বাতিল হয় না। তবে বাতিল হবে কী করে? কমিশনের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি ভোট পড়ার সাত সেকেন্ডের মাথায় ভিভিপ্যাট থেকে একটা স্স্নিপ বাক্সে পড়বে। গণনায় ওই স্স্নিপও মিলিয়ে দেখা হবে। দ্বিতীয় ভোটদানের সময় যেহেতু ভোটারের পাশে কর্তব্যরত ভোটকর্মী উপস্থিত থাকবেন, তিনি দেখতে পাবেন কাকে ওই ভোটার ভোট দিচ্ছেন। ফলে গণনার সময় সেই দলের ওই ভোটটি কীভাবে বাতিল হবে, তার নিজস্ব পদ্ধতি কমিশনের রয়েছে। তা নিয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে।