শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
গেস্নাবাল টাইমসের মন্তব্য

সতর্কবার্তা দিচ্ছে শ্রীলংকায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

শ্রীলংকায় রোববারের সন্ত্রাসী হামলায় শ্রীলংকা অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেছে। সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন কারফিউ জারি করা হয়েছে, দুই দিনের জন্য স্কুল বন্ধ করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (সোশ্যাল মিডিয়া) ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই মাত্রার সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলা করতে গিয়ে রীতিমতো পরীক্ষা দিতে হচ্ছে শ্রীলংকাকে।

স্পষ্টতই খ্রিস্টানদের টার্গেট করে এই হামলা করা হয়েছে, কারণ এটা ঘটেছে ইস্টার সানডের দিনে। এরই মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে, কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো গ্রম্নপ হয়তো এই ভয়াবহ হামলা ঘটিয়ে থাকতে পারে। যেমন এ ক্ষেত্রে সন্দেহের তালিকায় আছে স্থানীয় তৌহিদ জামায়াত।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শ্রীলংকার অল্প কিছু সংখ্যক চরমপন্থি পশ্চিম এশিয়ায় গিয়ে আইএসের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কেউ কেউ শ্রীলংকায় ফিরে এসেছে। তবে লংকান কর্তৃপক্ষের জন্য তাদের খুঁজে বের করে নিয়ন্ত্রণ করাটা অতটা সহজ হবে না। কিন্তু এই মানুষগুলোর সম্ভবত এই মাত্রার হামলা করার সামর্থ নেই। সারা দেশে একই সঙ্গে এই মাত্রার সমন্বিত হামলা চালানোর পেছনে আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় শক্তিশালী কোন গ্রম্নপ এখানে জড়িত আছে বলে মনে হয়।

সারা বিশ্বের ধর্মীয় প্রতিশোধের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বাড়ছে। গত মার্চে নিউজিল্যান্ডে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে হত্যাযজ্ঞ চলে, তাতে গোটা বিশ্ব নাড়া খেয়েছে। ধর্মীয় প্রতিহিংসা বাড়ছে, এবং বহু ধর্মের দেশগুলোর জন্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখাটা এবং চরমপন্থীদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোটা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্লেষকদের ভাষায়, এটা মনে রাখতে হবে যে, জনগণের ক্ষোভ ও বিভ্রান্তিকে পুঁজি করে ধর্মীয় চরমপন্থা ছড়াতে পারে। সমস্যাটা এখনো বৈশ্বিক মনোযোগ কাড়েনি। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো চরমপন্থা সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করে, সেটাই এখন পর্যন্ত সর্বত্র রাজত্ব করছে। তারা মূলত পশ্চিমাবিরোধী চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে সক্রিয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিরুদ্ধে যে সব ধর্মীয় চরমপন্থি গ্রম্নপ রয়েছে, সেগুলোর অনেককে তারা মুক্তি ও গণতন্ত্রকামী আখ্যা দিয়ে থাকে।

এটা উদ্বেগের বিষয় যে, নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলংকার সন্ত্রাসী হামলার পর, দেশে দেশে ধর্মীয় পরিচয়ের ধারণাটি আরও বেশি বেশি উচ্চারিত হবে। ক্ষোভ হয়তো চরমপন্থাকে আরও উসকে দেবে। বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে ধর্মীয় হামলা হয়তো বাড়বে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি দেশ, বিশেষ করে সেই সব দেশ যেখানে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা রয়েছে, তাদের উচিত ধর্মীয় চরমপন্থা কমিয়ে আনা। সেকু্যলার শাসন ব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে চলতে দিতে হবে কোনো অবস্থাতেই ধর্মীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না, যেখানে গেলে তারা আইন ও জনগণকে ভুল পথে পরিচালিত করার সুযোগ পেয়ে যাবে।

বিগত কয়েক বছরে চীন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় চরমপন্থা দ্বারা তেমন একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের মতো সংগঠনগুলোর প্রভাব মোকাবেলা করতে সফল হয়েছে চীন। এই ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু পশ্চিমা শক্তি নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই কারণ শব্দের চেয়ে শক্তিশালী হলো বাস্তব তথ্য এবং চীনের জন্য শান্তি আর স্থিতিশীলতা হলো সবচেয়ে মূল্যবান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46590 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1