বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
অপরাধী প্রত্যর্পণ-সংক্রান্ত বিল

বিক্ষোভের পর হংকং থমথমে

সরকারি দপ্তরগুলোর সামনে ফের অবস্থান বিক্ষুব্ধদের
যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০১৯, ০০:০০

চীনবিরোধী বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় হংকংয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু সরকারি দপ্তর। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ডিবিএস ও ব্যাংক অব চায়নাও ওই এলাকায় তাদের শাখাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এদিকে, চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে দপ্তরগুলোর সামনে আবারও অবস্থান নিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষও। মূলত চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে অপরাধী প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত একটি বিলের বিপক্ষে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হংকংয়ের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

হংকংয়ের বেইজিংপন্থি শাসকদের প্রস্তাবিত একটি বিলে সন্দেহভাজন অপরাধীকে চীন ও তাইওয়ানে ফেরত পাঠানোর পথ সুগম করা হয়েছে। তবে বেইজিংয়ের দুর্বল আইন এবং মানবাধিকার রেকর্ডের কারণে সেখানে কাউকে ফেরত পাঠানো নিরাপদ মনে করছে না হংকংয়ের সাধারণ মানুষ। তারা মনে করছে, বিলটি পাস হলে তা হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে। সেখান থেকেই বিক্ষোভে নেমেছে তারা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও তারা অবস্থান নিতে শুরু করে। কয়েকশ আন্দোলনকারী মুখোশ ও খাবার নিয়ে দেশটির আইনসভার সামনে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তবে এদিন নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছে হংকং। হেলমেট ও ঢাল নিয়ে সেখানে প্রস্তুত শত শত পুলিশ। পাশেই পুলিশ ভ্যান। এছাড়া ইউনিফর্মবিহীন পুলিশও রয়েছে। সাদা পোশাকের পুলিশ বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীদের কাগজপত্র খতিয়ে দেখছে।

এরআগে বুধবার দিনের শেষভাগে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলনকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। আন্দোলনকারীরাও পস্নাস্টিকের বোতল ছুড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করে।

১৯৯৭ সালে চীনের কাছে যুক্তরাজ্য হংকং পুনরায় ফিরিয়ে দেয়ার পর থেকে দেশটিতে এমন সহিংসতা হয়নি। দেশটির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত অন্তত ৭২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করলেও সরকার পিছু হটেনি। বুধবার বিলটি নিয়ে আইন পরিষদে দ্বিতীয় দফা বিতর্কের কথা থাকলেও প্রতিবাদকারীরা হংকংকে কার্যত অচল করে দেয়ায় ওই বিতর্ক স্থগিত করা হয়। তবে সেই বৈঠক কবে হবে, তা নিয়েও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।

হংকংয়ের বেইজিংপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বুধবারের সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রম্নত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অশ্রম্নসিক্ত চোখে দেয়া এক ভাষণে তিনি বুধবারের প্রতিবাদকে 'সংঘবদ্ধ দাঙ্গা' অ্যাখ্যায়িত করেছেন; হংকংকে চীনের কাছে 'বিক্রি করে দিচ্ছেন' বলে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তাও প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

২০১৮ সালের এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিলটি তৈরি করা হয়। তাইওয়ানে ছুটি কাটানোর সময় অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে হংকংয়ের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কিন্তু তাইওয়ানের সঙ্গে হংকংয়ের বন্দিবিনিময়ের কোনো চুক্তি না থাকায় সেই ব্যক্তিকে এখন তাইপেতে বিচারের জন্য পাঠানো যাচ্ছে না। আর এখন তাইওয়ানও জানিয়েছে, সন্দেহভাজন সেই খুনের মামলার আসামিকে ফেরত নিতে চায় না তারা। কেননা, এটি এমন এক উদাহরণ তৈরি করবে, যা চীন ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারে।

হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল পর্যন্ত অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি। ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছিল। হংকংয়ের জনসংখ্যা প্রায় ৭৪ লাখ হলেও ১২০০ জনের একটি বিশেষ কমিটি নেতা বাছাইয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<53408 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1